ইনসাইড বাংলাদেশ

সম্পদ জব্দের আতঙ্কে সিঙ্গাপুরে ৫ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী


প্রকাশ: 18/08/2023


Thumbnail

সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচার ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনের অভিযানে এক নারীসহ ১০ বিদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১০০ কোটি সিঙ্গাপুরের ডলারের নগদ অর্থ সম্পদ, বিলাশবহুল গাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ জব্দ করেছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। সিঙ্গাপুরের পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একটি সুনির্দিষ্ট তালিকার ভিত্তিতে এ অভিযান চলছে। তবে এ তালিকায় কাদের কাদের নাম আছে, এ নিয়ে সিঙ্গাপুর সরকার বা পুলিশ কোন কিছুই বলেনি। বরং সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবৈধ অর্থ-সম্পদ যাদের আছে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অভিযানের মাধ্যমে তাদেরকে গ্রেপ্তার এবং তাদের অর্থ-সম্পদ জব্দ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি অবৈধ অর্থ রাখার দায়ে বা সম্পদ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়নি। 

কিন্তু বিভিন্ন সূত্র গুলো বলছেন, সিঙ্গাপুরের হঠাৎ শুরু হওয়া ডার্টি মানি অপারেশনের কারণে ৫ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আতঙ্কে রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সিঙ্গাপুরের স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের কোম্পানি তালিকাভুক্ত। এদের একজন সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ীদের তালিকাতেও তার নাম আছে। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, যারা সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমে ব্যবসা করছেন, তাদের ব্যবসার হিসাবপত্র খতিয়ে দেখা হবে এবং তারা যদি অবৈধভাবে কোনো অর্থ বা সম্পদ করেন, সেটুকুই শুধু বাজেয়াপ্ত করা হবে। এতে তাদের পুরো কোম্পানি বাতিল বা বাজেয়াপ্ত করা হবে না।  

সিঙ্গাপুরের ফরেন ট্রেড অফিস সূত্র বলছে, যে সমস্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সিঙ্গাপুর স্টক এক্সচেঞ্জের নিবন্ধিত এবং নিবন্ধনের মাধ্যমে সেখানে ব্যবসা করে সম্পদ তৈরী করেছেন, তাদের আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। তবে যারা অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বা অন্য কোনো প্রকারে অর্থ এনে সিঙ্গাপুরে সম্পদ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিক থেকে বড় প্রভাবশালী দুই ব্যবসায়ীর আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। তবে তবে সিঙ্গাপুরের একজন অ্যাটর্নির সাথে আলাপ করে জানা গেছে, যদি সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ দেখে, তাদের যে বিপুল সম্পত্তি, সেই সম্পত্তির কিছু অংশ ঘোষিত নয় বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত; তাহলে তাদের সেইটুকু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হতে পারে। এ নিয়ে ওই দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এখন আতঙ্কে আছেন। তাদেরকে নিয়ে বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে চর্চা হয়। তবে সিঙ্গাপুরের অভিযানের ফলে তাদের কতটুকু সম্পত্তি জব্দ হয়- সেটি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

অন্য তিন জন বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের সিঙ্গাপুরে কোনো বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য কিছু নেই। কিন্তু সিঙ্গাপুরে তারা বিশাল বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন এবং স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করছেন। একজন ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানির মালিক রয়েছেন, যিনি সিঙ্গাপুরের একাধিক বাড়ি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। এই অর্থ তিনি বৈধভাবে এনেছেন কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলে তার নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও আরো দুইজন আছেন, যারা সিঙ্গাপুরে নিয়মিত থাকেন, কিন্তু তাদের কোনো বৈধ আয়ের উৎস এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এই বিষয়গুলো সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে এবং তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, তারা বৈধভাবে সিঙ্গাপুরে অর্থ আনেননি, তাহলে তাদের সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত হবে। আর সেই প্রেক্ষাপটেই বর্তমানে এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ৫ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭