ক্লাব ইনসাইড

নানা আয়োজনে জাবিতে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪ জয়ন্তী পালিত


প্রকাশ: 19/08/2023


Thumbnail

রবীন্দ্রত্তোর কালের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের  প্রতিষ্ঠাতা নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মজয়ন্তী নানা আয়োজনে পালন করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় জন্মজয়ন্তী উদযাপন নিমিত্তে একটি শোভাযাত্রা বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। 

শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎ মঞ্চ  থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সেলিম আল দীনের সমাধিস্থলে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় শোভাযাত্রায় অংশ নেন চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল আহমেদসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, স্বপ্নদল, আরশিনগর, ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, অন্বিতা সেলিম আল দীন বিদ্যাপীঠ, শহীদ টিটু থিয়েটার, বাংলাদেশ পুতুলনাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র, তালুকনগর থিয়েটারসহ বিভিন্ন নাট্য সংগঠন সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত সভায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল আহমেদ বলেন, ‘সেলিম আল দীনের ৭৪ তম জন্মজয়ন্তীতে আমরা তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের এ আয়োজনে আপনারা সবাই আমন্ত্রিত। এ আয়োজনের মাধ্যমে সেলিম আল দীনের নাট্যদর্শন আরো বেশি মানুষের মাঝে পৌছে দিতে পারবো বলে আমাদের বিশ্বাস।’

চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, সেলিম আল দীন বাংলা সাহিত্যের একজন চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। বাংলা সাহিত্য যতদিন থাকবে, সাহিত্যের প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে তিনি বেঁচে থাকবেন। তিনি ছিলেন বহুমুখী ক্যারিশমার অধিকারী। তিনি অসময়ে চলে যাওয়ায় বাংলা নাটকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে সকাল নয়টায় পুরাতন কলা ভবনে ‘ওরে ভোলা মন' নাটকের গান ও নৃত্য পরিবেশন করে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সকাল সাড়ে ১১টায় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দল জাবি'কে সংবর্ধনা দেয়া হয়৷ দুপুর ১২ টায় 'বারীণ ঘোষের ক্যামেরায় সেলিম আল দীন' শীর্ষক প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়। অধ্যাপক ড. ইউসুফ হাসান অর্কের সভাপতিত্বে 'সেলিম আল দীনের কথানাট্য চাকা: মঞ্চে ও চলচ্চিত্রে' প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. ফাহমিদা আক্তার। আলোচনা উপস্থাপন করেন জাবি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন কবির। পুরাতন কলা ভবনের সেট ল্যাবে বিকাল তিনটায় চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

 

পাশ্চাত্য শিল্পের সব বিভাজনকে বাঙালির সহস্র বছরের নন্দনতত্ত্বের আলোকে অস্বীকার করে এক নবতর শিল্পরীতি প্রবর্তন করেন সেলিম আল দীন, যার নাম দেন 'দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব'। দ্বৈতাদ্বৈতবাদী রীতিতে লেখা তার নাটকগুলোতে নিচুতলার মানুষের সামাজিক নৃতাত্ত্বিক পটে তাদের বহুস্তরিক বাস্তবতাই উঠে আসে।

নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের জন্ম ১৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে, ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায়। ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।নাট্যচর্চার জন্য ঢাকা থিয়েটার প্রতিষ্ঠায়ও তার ভূমিকা ছিল। সারাদেশে নাট্য আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৮১-৮২ সালে আরেক নাট্যযোদ্ধা নাসিরউদ্দীন ইউসুফের সঙ্গে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার। বাংলার মাটিতে, বাংলার জলহাওয়ায় বাংলার প্রাণের ভাষাতেই জন্ম নেওয়া তার নাটকগুলো বাংলা নাটকের সব উপাদানকে ছুঁয়ে যায় আধুনিকের মন নিয়ে।নাট্য-সাহিত্য অঙ্গনে অবিস্মরণীয়  ভূমিকা  রাখায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার(১৯৮৪), একুশে পদক (২০০৭), জাতীয় চলচ্চিত্র  পুরস্কার (১৯৯৩,১৯৯৪) সহ বিভিন্ন পুরস্কারে তাকে ভূষিত করা হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭