ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের গণ্ডি থেকে বের হতে পারবে কি বিএনপি?


প্রকাশ: 19/08/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিএনপি এখন পর্যন্ত বলছে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছে যে, এই দাবি আদায় না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তারা করতেও দেবে না। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন বড় রকমের হোচট খেয়েছে ভারতের সর্বশেষ মনোভাবে। 

ভারত ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ভারত চায়। পাশাপাশি বাংলাদেশে যেন কোন সম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তির উত্থান না ঘটে সে ব্যাপারে ভারত লক্ষ্য রাখবে। ভারত মনে করছে, শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করা এখন ঠিক হবে না। ভারতের এই মনোভাবের ফলে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ভারতের আগ্রহ রয়েছে। এর ফলে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের হতাশা-ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে। বিএনপি এখন কী করবে—সেটা বড় বিষয়। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপিতে মূল সমস্যা হলেন লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তারেক জিয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় এবং এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করা হয়েছে। এক দফা আন্দোলনের একটা পর্যায়ে বিএনপি বাংলাদেশে চরম নাশকতা এবং ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে নিজেদেরকে জড়াতে পারে—এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির কর্মসূচি রহস্যের মোড়কে ঢাকা। এই কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে তারা নানারকম কালক্ষেপণ এবং লুকোচুরি করছে। 

বিনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, কর্মসূচির ব্যাপারে একদিকে যেমন তাদেরকে লন্ডন থেকে সবুজ সংকেত নিতে হচ্ছে অন্যদিকে বিভিন্ন দূতাবাস গুলোর কাছ থেকেও তাদেরকে অনাপত্তি নিতে হচ্ছে। ফলে কর্মসূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ এবং বিলম্ব হচ্ছে। একদিকে যেমন তারা চিন্তা করছে যে এমন কোনো কর্মসূচি যেন না দেওয়া হয় যাতে সহিংসতা সন্ত্রাস বিস্তৃত হয়, আবার এমন কর্মসূচিও বিএনপি দিতে চায় যে কর্মসূচি সরকারকে চাপে ফেলবে, সরকারের টনক নড়বে। এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি কি করবে তা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মহলে বিএনপি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করলেও এখন পর্যন্ত ভারতের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভারতের আস্থা বিএনপি অর্জন করতে না পারে ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির কোন আন্দোলনে সফল হবে না। এই সমস্ত আন্দোলনের ব্যাপারে ভারত দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করবে। ভারতের পক্ষ থেকে বারবার তারেক জিয়ার ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা বলা হয়েছে। বিএনপি নেতাদেরকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বিএনপিকে তারেক জিয়া মুক্ত হতে হবে। যেহেতু তারেক জিয়া এখন বিদেশে থাকেন এবং দণ্ডিত একজন ব্যক্তি কাজেই তাকে এখন রাজনীতিতে না রাখাটাই সবচেয়ে ভালো। কিন্তু তারেক জিয়া এই প্রস্তাবে রাজি না। তিনি বিএনপির নেতৃত্ব যেমন ছাড়তে চান না তেমনি বিএনপি তার নির্দেশের বাইরে পরিচালিত হোক—এটাও তিনি চান না। কারণ বিএনপি কেবল তার কাছে একটি রাজনৈতিক দল নয় বরং তার টাকা উপার্জনের প্রধান হাতিয়ার। এরকম বাস্তবতায় তারেকের গণ্ডি থেকে বের হতে না পারলে বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত নাই। বিএনপির মধ্যেও এখন এই বক্তব্য এবং ধারণাটি চাউর হয়েছে। 

বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন, বিএনপিকে সাময়িকভাবে হলেও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য তারেক জিয়াকে বাইরে রেখে রাজনীতি করতে হবে। কিন্তু তারেকের গণ্ডি থেকে বিএনপি কি বের হতে পারবে? বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন, দলটির বিশ্বাসযোগ্যতা, আন্তর্জাতিক আস্থা অর্জনের জন্য এখন তারেক জিয়া তাদের সবচেয়ে বড় বাধা। তবে তারেক জিয়া মুক্ত বিএনপি শেষ পর্যন্ত হবে কিনা সেটি হল সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭