কোর্ট ইনসাইড

শ্রম আইন লঙ্ঘনে ড. ইউনূসের বিচার চলবে


প্রকাশ: 20/08/2023


Thumbnail

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার কার্যক্রম চলতে কোনো বাধা নেই। এ সংক্রান্ত মামলা বাতিলের রুল খারিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

রোববার (২০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের আপিল বিভাগ রোববার এ রায় দেন।

এ সময় ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ রোববার (২০ আগস্ট) দিন ধার্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে আবেদনে জারি করা রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে রায় দেন।

এর আগে ৬ আগস্ট ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না- এ মর্মে জারি করা রুল শুনানির দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন। পরে ৭ আগস্ট ড. ইউনূসের পক্ষে তার আইনজীবী রুলের শুনানি শেষ করেন।

৩ আগস্ট ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল হবে না- মর্মে হাইকোর্টের জারি করা রুল শুনানির জন্য আদালত পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল হবে না তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ২৫ জুলাই আপিলটি করা হয়। আবেদনে রুল স্থগিত চাওয়া হয়েছিল। ওইদিনউ রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে করা আবেদন শুনানি নিয়ে শ্রম আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি করতে ৩ আগস্ট দিন ঠিক করে পাঠান।

গত ২৩ জুলাই শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। তারও আগে ৬ জুন ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা ইসলাম। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়। এরপর ২১ জুন অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূস। আবেদনে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়।

লেবার আইনের ৪-এর (৭) এবং (৮) ধারায় শ্রমিকদের স্থায়ী করা হয়নি এবং ১১৭ জনকে আর্নলিভ দেওয়া হয়নি। আর ২৩৪ ধারা অনুযায়ী তাদের মুনাফার ৫ শতাংশ দেওয়া হয়নি- এসব কারণে গঠন করা হয় অভিযোগ। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।

 মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এরমধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭