ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনকালীন সরকার: ক্লিন ইমেজের মন্ত্রিসভার উদ্যোগ


প্রকাশ: 22/08/2023


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন বলছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে নির্বাচনকালীন সরকার ঘোষণা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবার কোনো কোনো মহল মনে করছে, তফসিল ঘোষণার আগেই অক্টোবরেই নির্বাচনকালীন একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করবে। ধারণা করা হচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষ করে দেশে ফেরার পরপরই নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। 

এই নির্বাচনকালীন সরকারের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্য থেকে দুইটি বক্তব্য পাওয়া গেছে। প্রথমত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আগেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার একটি বড় পরিবর্তন আনবেন এবং এই পরিবর্তনটি মূলত নির্বাচনকে মাথায় রেখে করা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য মন্ত্রিসভায় বিতর্কিত, অযোগ্য এবং দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদেরকে হটিয়ে দেয়া হবে। ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং এই মন্ত্রিসভার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

সংবিধানে কোথাও নির্বাচনকালীন সরকারের কথা নেই। বরং যে মন্ত্রিসভা থাকবে সেই মন্ত্রিসভাই নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে। সে সময় সরকারের কাজ সীমিত হয়ে যাবে। সরকার কোন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেনা। রুটিন কাজের মধ্যেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রাখবে। আবার এই নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। তারা মনে করছে যে, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই রাজনীতিতে একটি সংলাপ এবং সমঝোতার আবহ তৈরি হবে। এই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। এমনকি বিএনপির সঙ্গেও আলাপ আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেই বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তখন সকল দলের আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে। এটি অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে যেকোনো সময় হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের অনেকেই মনে করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা বা নির্বাচনকালীন সরকার কিভাবে গঠিত হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই আওয়ামী লীগের কোন নেতারই। 

তারা মনে করছেন, এই বিষয়টি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয় এবং তিনি স্বীয় বিবেচনায় এ ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের ধারণা। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে, সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরে হোক কিংবা নভেম্বরের হোক নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভার একটি রদবদল হবে এবং মন্ত্রিসভাকে একটি ক্লিন ইমেজের মন্ত্রিসভা হিসেবে উপস্থাপিত করা হবে। এর দুটি কারণ রয়েছে; একটি হলো নির্বাচনের আগে সরকার অযোগ্যদের দায়ভার থেকে মুক্ত হতে চায়। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেই অভিযোগ থেকে দলকে দায়মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে শেষ মেয়াদে এসে সরকার মন্ত্রিসভার একটি ক্লিন ইমেজের রূপ দিতে পারে। আর দ্বিতীয়ত, নির্বাচনকালীন সরকারেও এমন সব ব্যক্তির সন্মেলন ঘটবে যারা সরকাররের ইমেজ বাড়াবে। তাদের মন্ত্রিসভায় উপস্থিতির কারণে জনগণের মধ্যে আশাবাদ এবং ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যেটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে। আর তাই নির্বাচনকালীন সরকার যখনই গঠিত হোক না কেন, যে ভাবেই গঠিত হোক না কেন তাতে যে বিতর্কিতরা বাদ পড়বেন এবং ক্লিন ইমেজের নেতারা অন্তর্ভুক্ত হবেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭