ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুলের সিঙ্গাপুর সফর নিয়ে ধূম্রজাল


প্রকাশ: 25/08/2023


Thumbnail

বিএনপি যখন এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আকস্মিকভাবে, কাউকে না জানিয়ে সপরিবারে সিঙ্গাপুর গেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলকে না জানিয়ে আন্দোলনের মাঝপথে হঠাৎ করে তার সিঙ্গাপুর সফর নিয়ে দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। দলের অনেকেই বলছেন, এটি মির্জা ফখরুল ইসলামের জন্য নতুন কোনো বিষয় নয়। এর আগেও তিনি আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন, এটা একটা চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপার। এরকম হতেই পারে। তিনি শিগগিরই ফিরে আসবেন এবং দলের আন্দোলনের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিবেন। 

কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখনই রাজনৈতিক সঙ্কট থাকে, তখনই সিঙ্গাপুরে যান কেন?- এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। সিঙ্গাপুরে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার একাধিক এজেন্ট রয়েছে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করা এবং তাদের মাধ্যমে কোনো বার্তা দেওয়ার জন্যই কি তিনি সিঙ্গাপুরে গেছেন? কেউ কেউ মনে করছেন, এই যুগ হোয়াটসঅ্যাপ- স্কাইপের যুগ। সেখানে তারেকের উপদেষ্টাদের সাথে কথা বলার জন্য তার সিঙ্গাপুর যাওয়ার কোনো কারণ নেই। এটা এখন স্কাইপে বা হোয়াটসঅ্যাপেই করা যায়। 

কিন্তু বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সব ধরনের যোগাযোগ এখন সরকার নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ইন্টাসেপ্ট হয়। এ কারণেই সিঙ্গাপুরে গিয়ে তিনি নিরাপদে বিস্তারিত কথা বলতে চেয়েছেন, এজন্যই তার সিঙ্গাপুর সফর। তবে কেউ কেউ মনে করছেন, সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পেছনে তার অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। বিশেষ করে যখন তারেক জিয়ার সাথে তার একটি রাজনৈতিক দ্বৈরথার খবর পাওয়া যাচ্ছে এবং আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নিয়ে তার সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, সে সময় তার সিঙ্গাপুর সফর রহস্যময়। কেউ কেউ মনে করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নাটকীয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। সেই অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আর এ কারণেই তিনি সিঙ্গাপুরে গেছেন।

তবে সিঙ্গাপুরে যাওয়াটা যে তার স্রেফ চিকিৎসার জন্য নয়, এর পেছনে যে অন্য কোনো কারণও রয়েছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক বিষয়ও রয়েছে- সে ব্যাপারে অধিকাংশ বিশ্লেষকই একমত। বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করেন, সিঙ্গাপুরে গিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ এবং সব ধরনের পর্যবেক্ষণের বাইরে থেকে তিনি বিভিন্ন মহলের সাথে কথা বলতে পারেন। 

লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এখন রিফিউজি জীবন-যাপন করছেন, তার কোনো পাসপোর্ট নেই। কাজেই তিনি সিঙ্গাপুরে আসতে পারবেন না, আসা তার পক্ষে সম্ভব না। আর তিনি যদি সিঙ্গাপুরে না আসেন, সেক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেকের দুইজন প্রতিনিধি, যারা সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে থাকেন, তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এখানে আন্দোলন পরিচালনার জন্য যে আর্থিক বিষয়, তার সংস্থানও সিঙ্গাপুর সফরের একটি বড় কারণ হতে পারে। 

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো মনে করছে, সিঙ্গাপুরে তিনি আসলে বিএনপির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন। এই সিদ্ধান্তটি কি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, না নির্বাচন না করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত, সেটিই দেখার বিষয়। তবে কেউ কেউ মনে করেন, তার সিঙ্গাপুর সফরের পেছনে সরকারেরও হাত রয়েছে। এর আগে একাধিকবার মির্জা ফখরুল চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন সরকারি আর্থিক সহায়তায়। তবে এবার তিনি কার সহায়তায় সিঙ্গাপুরে গেছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭