প্রকাশ: 27/08/2023
আজ রোববার (২৭ আগস্ট) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের শোকের মাসের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। সেখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত।
কাজী
নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে সমধিক
পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন
একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক,
গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা।
তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি
করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
কবির
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন
বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়
কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে পুস্পস্তবক
অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া মাহফিল
এবং আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারী
টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে
বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
নজরুলের
সৃষ্টিকর্ম প্রসঙ্গে নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন
মানুষ ছিলেন, যার প্রভাব তাঁর
লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ
বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে
ধারণ করেছেন। সেই সময়ে ধর্মান্ধ
মুসলমানদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক
দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁর
ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ
নেতার মতো।’
প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ
ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও
কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য
কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক
চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয়
জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর
কবিতা ও গান মানুষকে
যুগে যুগে শোষণ ও
বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ
দেখিয়ে চলছে।
নজরুল
ছিলেন চির প্রেমের কবি।
তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম
নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী,
কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও
প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই
বলতে পারেন, ‘আমার আপনার চেয়ে
আপন যে জন খুঁজি
তারে আমি আপনায়।’
কাজী
নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১
জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম
ছিল ‘দুখু মিয়া’।
বাবার নাম কাজী ফকির
আহমেদ ও মা জাহেদা
খাতুন।
স্বাধীনতার
পরপরই কবিকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা
করেন এবং ধানমণ্ডিতে কবির
জন্য একটি বাড়ি প্রদান
করেন।
জাতীয়
কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয়
মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়
দাফন করা হয়। সেখানেই
তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭