এডিটর’স মাইন্ড

আওয়ামী লীগের মধ্যে ‘জামায়াত লীগ’


প্রকাশ: 28/08/2023


Thumbnail

যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছে ১৪ আগস্ট। দেলু রাজাকারের মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ছোটখাটো একটা ভূমিকম্প হয়েছিল। এ যুদ্ধাপরাধীর সাঙ্গোপাঙ্গরা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ওই রাজাকারের মৃত্যুজনিত বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। যেমনটি করেছিল ২০১৩ সালে। তখন চাঁদে সাঈদীকে দেখা গেছে—এরকম গুজব ছড়িয়ে সারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছিল ধর্মব্যবসায়ীরা। ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। এভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কাজ তারা সবসময় করে থাকে। এবার ভূমিকম্পের গুজব তেমন কাজে দেয়নি বটে, কিন্তু এ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পরও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে নীরব ভূমিকম্প লক্ষ করা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে সাঈদী-প্রেমে আসক্তদের সংখ্যা দেখে আওয়ামী লীগের নেতারাই বিস্মিত, হতবাক। সাঈদীর মৃত্যুর পর তারা শোকাহত হয়ে নানারকম শোকবার্তা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শনিবার (২৬ আগস্ট) পর্যন্ত এ সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, ‘এত জামায়াত আওয়ামী লীগে ঢুকল কীভাবে?’ শুধু এই নেতা নন, আওয়ামী লীগে ‘সাঈদীর মুরিদ’ সংখ্যা দেখে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন এমন মানুষ হতাশ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বাঙালির প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তখনো এ অঞ্চলের রাজনীতিবিদদের হৃদয়ে পাকিস্তান। ধর্মের ভিত্তিতেই দুটি দেশ আলাদা হয়েছে। মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে পাকিস্তান মোহ জাঁকিয়ে আছে তখনো। তাই সংগঠনের নাম রাখা হয়েছিল ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’। যদিও এ সংগঠনটি শুরু থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয় আওয়ামী লীগ। মুসলিম লীগের দুঃশাসনের কারণে এ অঞ্চলের জনগণের মোহভঙ্গে সময় লাগেনি। খুব দ্রুতই আওয়ামী লীগ জনগণের প্রাণের সংগঠনে পরিণত হয়। এ দেশের জনগণও বুঝতে পারে, পাকিস্তান রাষ্ট্র তাদের নয়। তারা আসলে স্বাধীন হয়নি। পশ্চিম পাকিস্তানের পরাধীনতার নতুন শেকলে বন্দি হয়েছে মাত্র। বঙ্গবন্ধু তো ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশের স্বপ্ন এঁকেছিলেন। ১৯৫৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বরের কাউন্সিলে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ থেকে ‘মুসলিম’ বাদ দেওয়া হয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিকশিত হয় আওয়ামী লীগ। এটি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের নতুন একটি বার্তা। এ ভূখণ্ড প্রতিক্রিয়াশীল উগ্র মৌলবাদীদের নয়। মুসলিম বাদ দিয়ে এটি জানিয়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান। আমরা সবাই বাঙালি’—এ স্লোগানেই আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, উজ্জীবিত করেছিল। ধর্মনিরপেক্ষতাই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি ও সম্পদ। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’ (সূত্র : শেখ মুজিব, বাংলাদেশের আরেক নাম, ড. আতিউর রহমান, পৃষ্ঠা : ২৪৯)

কিন্তু ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়। জাতির পিতাকে হত্যার পর শুরু হয় বাংলাদেশের উল্টো যাত্রা। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে সমাজে, রাজনীতিতে এবং রাষ্ট্রে। ধর্মব্যবসায়ীরা মাঠে নামে। স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনীতির মাঠে আবার নামানো হয়। রাজনীতি এবং ধর্মের বিষাক্ত ককটেল দূষিত করে সরকার এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাকে। ‘আওয়ামী লীগ ইসলামের শত্রু’, ‘নাস্তিকতাকে লালন করে’, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা’—এসব কুৎসিত প্রচারণা হতে থাকে অবিরত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এ সময় অস্তিত্বের সংকটে থাকা আওয়ামী লীগকে সমঝোতা করতে হয়। পিছু হটতে হয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আড়াল করে আওয়ামী লীগও নিজেদের ‘সাচ্চা মুসলমান’ প্রমাণে আদাজল খেয়ে নামে। তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনার বদলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ’—এমন ধর্মভিত্তিক স্লোগান জনপ্রিয় হয় আওয়ামী লীগে। আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে ঘটা করে ধর্মচর্চার রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ভোটের জন্য আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের ধার্মিক প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগে সাম্প্রদায়িক শক্তির অনুপ্রবেশ ঘটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগে নানা মতলবে নানা ধরনের মানুষের প্রবেশ ঘটতে থাকে। ২০০৯ সালে দল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার করেছিল। দেশের সাধারণ ভোটাররা তাদের এ অঙ্গীকারকে সমর্থন জানায় বিপুলভাবে। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অসীম সাহসের সঙ্গে তিনি ’৭১-এর বর্বর খুনি, ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনেন। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী আর রাজাকারদের বিচার শুরু হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। একে একে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের বিচারের রায়ও কার্যকর করা হতে থাকে। এ সময়ই খুবই নীরবে ঘটে আওয়ামী লীগের বড় সর্বনাশ। হুহু করে আবর্জনার মতো আওয়ামী লীগে প্রবেশ করে নানা সুবিধাবাদী, দুর্বৃত্ত, লুটেরা এবং জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আওয়ামী লীগে ঢুকেছে দুই কারণে। প্রথমত পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগকে দূষিত করতে। দ্বিতীয়ত এ সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বহু জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার সহিংসতা করে। গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস করে। এদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনির্দিষ্ট মামলা হয়। মামলা থেকে বাঁচার জন্য এসব ধর্মান্ধ রাতারাতি আওয়ামী লীগ বনে যায়। আওয়ামী লীগে জামায়াত-শিবিরের অনুপ্রবেশ প্রথম অনুভূত হয় ছাত্রলীগে। প্রয়াত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ছাত্রলীগের স্থানীয় পর্যায়ে তো বটেই, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শিবিরের ক্যাডাররা ঢুকে পড়ে। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি দলে অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদের দল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশও দেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের উদ্যোগে সারা দেশে প্রায় ৭৬ হাজার বিতর্কিত অনুপ্রবেশকারীর তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগে নানাভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তির ঘাঁটি শক্ত হতে থাকে। এদের একটি অংশ ‘আওয়ামী ওলামা লীগ’ গঠন করে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াতে থাকে। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মূলনীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নেয় ওলামা লীগ। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বিতর্কিত সংগঠনটি। এ মানববন্ধনে পাঠ্যপুস্তক বাতিলের দাবি তোলা হয়। ওই বছরের ১০ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আরেক মানববন্ধনে ওলামা লীগের একাংশ বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখকে ‘ইসলামবিরোধী ও হারাম’ বলে ঘোষণা করে। ২০১৭ সালের ৪ মার্চ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন বাতিলসহ চার দফা দাবি তোলে। এ সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ওলামা লীগের কার্যক্রমে বিরক্ত হন। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যেই ২০১৯ সালে ‘আওয়ামী ওলামা লীগ’ বিপিএলকে (ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজি) ইসলামবিরোধী বলে ফতোয়া দিয়ে তা বাতিলের দাবি করে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—‘ওলামা লীগের কার্যক্রম আওয়ামী লীগের নীতিবিরোধী।’ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভেতরে থাকা জামায়াত আবার ওলামা লীগকে সক্রিয় করেছে। গত ২০ মে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আওয়ামী ওলামা লীগের প্রথম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। যে সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগে দপ্তর সম্পাদক, সেই ‘বিতর্কিত’ ‘সাম্প্রদায়িক’ সংগঠনের সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। যিনি ২০১৯ সালে ওলামা লীগকে আওয়ামী লীগের নীতিবিরোধী বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনিও সেই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এভাবেই ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগে ‘জামায়াত লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মৃদু কম্পন অনুভূত হচ্ছে এখন। দেলু রাজাকারের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা নব্য রাজাকাররা আর মুখোশ পরে থাকতে পারছেন না। তারা সাঈদীর জন্য শোকার্ত। তাদের সমবেদনার ভাষা এমন যে, জামায়াতের নেতারাও সম্ভবত লজ্জা পাবেন। আমি ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই তার মেধা, দৃঢ়তা এবং চেতনার ভক্ত। আওয়ামী লীগে সাঈদীকে নিয়ে শোকের মাতমের মধ্যে সাদ্দাম পথ দেখালেন। অতীতে যেভাবে ছাত্রলীগ পথ দেখিয়েছে, এবারও ছাত্রলীগ সেই ঐতিহ্যে উদ্ভাসিত হলো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের যারাই সাঈদীর জন্য শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এটা সঠিক এবং সাহসী সিদ্ধান্ত। ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করে আরও কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এরকম ‘সাঈদী প্রেমিক’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অন্য সহযোগী অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ছাত্রলীগের মতো সদাজাগ্রত এবং কঠোর হতে হবে। তা না হলে জামায়াত একদিন আওয়ামী লীগকেই গ্রাস করে ফেলবে। তবে ধর্মব্যবসায়ী অনেক চতুর ও ধুরন্ধর। এদের মধ্যে অনেকেই এখনো নীরব। ছাত্রলীগের সাহসী পদক্ষেপের পর, এরা অনেকে নিজেদের সংযত রেখেছে। মনের গোপন বেদনা প্রকাশ করেনি। এদেরও চিহ্নিত করতে হবে। তা না হলে সামনে এরা আরও বড় সর্বনাশ করবে। টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এ সময়ে শুধু সংগঠনেই ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেনি। প্রশাসনেও এরা শক্ত অবস্থান করে ফেলেছে। এরাও মুখোশধারী। এরা কেউ শিবির করেছে ছাত্রজীবনে। কেউ রাজাকারের উত্তরাধিকার। এরা এখন নব্য আওয়ামী লীগ সেজে প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে আছে। দেলু রাজাকারের মৃত্যুর পর আমরা এদেরও কারও কারও শোকের মাতম দেখেছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এখানেও বেশি চালাকরা তাদের কষ্ট গোপন রেখেছে। এদের কারণেই বাংলাদেশের আবার একটি সাম্প্রদায়িক চেহারা দেখা যাচ্ছে। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজত যে তাণ্ডব করেছে, তার বিচার হয় না কেন? নিবন্ধনহীন ফ্যাসিস্ট জামায়াত কেন আবার সমাবেশ করার অনুমতি পায়? সরকারকে এসব সিদ্ধান্ত নিতে কারা প্ররোচিত করে? তাদের খুঁজে বের করাটা জরুরি। সেটা যদি না করতে পারি তাহলে প্রশাসনে এবং আওয়ামী লীগের ভেতরে থাকা নব্য জামায়াত দেশটাকে আবার একটা মৌলবাদী রাষ্ট্র বানাবে। ভেতর থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি সব তছনছ করবে। আওয়ামী লীগ যদি তার ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে সরে যায়, তাহলে আর এটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন থাকবে না। প্রশাসন যদি জামায়াত আর নব্য রাজাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তাহলে বাংলাদেশ আর জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হবে না। সাঈদীর মৃত্যু আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। মুখে মুখে বঙ্গবন্ধু আর জয় বাংলা বললেই আওয়ামী লীগ হওয়া যায় না। এ জন্য আদর্শ লাগে। গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ হালুয়া-রুটি ভাগবাটোয়ারায় ব্যস্ত। আদর্শের চর্চা নেই। অধ্যয়ন, পাঠচক্র তো এখন নির্বাসিত। আওয়ামী লীগে এখন নব্য রাজাকাররা ‘জামায়াত লীগ’ করেছে। এই ‘জামায়াত লীগে’র শিকড় উৎপাটন করতে হবে এখনই।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭