ইনসাইড পলিটিক্স

বিটিআরসি কি পারবে পলাতক তারেকের বক্তব্য সরাতে?


প্রকাশ: 28/08/2023


Thumbnail

বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ আজ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে যে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খায়রুল আলম এবং বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান এর ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। 

গত ২২ আগস্ট গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত রুলে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে রুলের নোটিশ রিটে উল্লেখিত তারেক জিয়ার গুলশানের ঠিকানায় পাঠানো হয়। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ বোর্ডে এবং একটি জাতীয় দৈনিকে এই কারণ দর্শানোর নোটিশটি প্রচারিত হয়। তবে এক্ষেত্রে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা আদালতকে বলেন যে, তারা এই মামলার পক্ষ হতে চান। তবে হাইকোর্ট তাদেরকে পক্ষভুক্ত করার অনুমতি দেয়নি। 

উল্লেখ্য যে, এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে রুল জারি করা হয়েছিল সেই সময়। রুলে তারেক জিয়ার বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। ওই রুল শুনানির জন্য ৮ বছর পর হাইকোর্টে আবেদন জানায় রিটকারী পক্ষ। প্রশ্ন হচ্ছে যে, হাইকোর্ট যে এখন নির্দেশনা দিল সেই নির্দেশনা কি বিটিআরসি পালন করতে সক্ষম? বিটিআরসি কি তারেক রহমানের বক্তব্য বা ভিডিও কনটেন্ট গুলো সরিয়ে ফেলতে পারবে? 

তারেক রহমান বিভিন্ন আপত্তিকর, উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দুটি মাধ্যমে এই বিতর্কিত আপত্তিকর বক্তব্য গুলো প্রচারিত হচ্ছে। একটি ফেসবুক অন্যটি ইউটিউব। এই দুটির অফিস বাংলাদেশে নাই। বিদেশ থেকে প্রচারিত কোন কনটেন্ট বিটিআরসি বন্ধ করতে পারে না বলে বিটিআরসি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তারা মনে করেন যে, বিটিআরসি কনটেন্ট গুলো সরানো ব্যাপারে শুধুমাত্র ফেসবুক বা ইউটিউবকে অনুরোধ করতে পারে এ পর্যন্ত। 

দীর্ঘদিন ধরে বাংলা ইনসাইডার সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এ ব্যাপারে বিটিআরসির উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলে আসছিল। বিটিআরসি এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে তখনই সক্ষম হবে যখন ফেসবুক, ইউটিউবসহ এই ধরনের  প্রতিষ্ঠানগুলো বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণে আসবে। আর সেটি আনার ক্ষেত্রে একমাত্র পথ হলো যদি তারা বাংলাদেশ অফিস করে বা তাদের সাথে এ ধরনের চুক্তি হয়। বিটিআরসি এখন যেটি করবে হাইকোর্টের এই নির্দেশনা দিয়ে ফেসবুক এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে এই কনটেন্টগুলো সরানোর জন্য অনুরোধ করবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেসবুক বা ইউটিউব এ ধরনের কথা শোনে না। গত এক বছরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের যতগুলো আবেদন করা হয়েছিল তার থেকে ২০ থেকে ২৫ ভাগ আবেদনে সাড়া দিয়েছিল ফেসবুক এবং ইউটিউব। কাজেই হাইকোর্টের এই নির্দেশনা বিটিআরসি পালনে কতটা সক্ষম তা নিয়ে আইসিটি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। 

দীর্ঘদিন ধরেই বলা হচ্ছিল যে, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেড় কোটির বেশি। এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী থাকা সত্বেও বাংলাদেশে ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ফেসবুকে বাংলাদেশে অফিস করতে বাধ্য করতে পারছে না। একই রকম অবস্থা গুগলের ক্ষেত্রে। আর এগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে তাদের অফিস না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বেচ্ছাচারী অপপ্রচার এবং কুৎসিত আক্রমনাত্মক নোংরা আপত্তিকর বক্তব্য প্রচার অব্যাহত থাকবে। শুধু তারেক জিয়া নয়, বিদেশ থেকে বেশকিছু সাইবার সন্ত্রাসী প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আপত্তিকর এবং কুৎসিত অরুচিকর বক্তব্য প্রচার করছে। এগুলোর ব্যাপারে বিটিআরসি এবং ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে বাড়াবাড়ি ব্যর্থ হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭