ইনসাইড বাংলাদেশ

পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সরকারের ফর্মুলা?


প্রকাশ: 28/08/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই এ ধরনের চক্রান্তমূলক দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রথমে বিএনপিকে মাঠে নামানো হয়েছিল নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ের জন্য। পরিকল্পনা ছিল যে, বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বড় সহিংস আন্দোলন রাজপথে গড়ে তুলবে, দেশে একটি অস্থির অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব ঘটবে এবং তারা ক্ষমতা গ্রহণ করবে এক-এগারোর মতো একটি পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি হবে। কিন্তু বিএনপি সেরকম আন্দোলন করতে পারেনি। আওয়ামী লীগও বিএনপিকে সেই সুযোগ দেয়নি। বরং বিএনপির কর্মসূচির সমান্তরালভাবে আওয়ামী লীগ রাজপথে থেকে উপরন্ত বিএনপিকেই কোণঠাসা করে ফেলেছে। এরপর পশ্চিমা দেশগুলোর একটি ফর্মুলা ছিল যে, নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া। আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে একমত হয়নি। বরং আওয়ামী লীগ পরিষ্কার অবস্থান গ্রহণ করেছে যে, নির্বাচন হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে সংবিধান অনুযায়ী। কাজেই সেই পরিকল্পনাও অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যায়। 

বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মহল আওয়ামী লীগ সরকারের অবসান চায়। আর আওয়ামী লীগের অবসান চেয়ে তারা একটি বিকল্প সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে বিকল্প সরকারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের অনুগত হবে, সুশীলদের কথা শুনবে। আর এ কারণেই বাংলাদেশের ওপর নানারকম চাপ দেওয়া এবং সুশীলদেরকে নানা ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সেই চেষ্টাই যখন সফল হচ্ছে না তখন বাজারে জাতীয় সরকারের একটা আওয়াজ তোলা হয়েছে। এটিও পশ্চিমা দেশগুলো থেকে আমদানিকৃত একটি ফর্মুলা। 

বিএনপি সম্প্রতি এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, এক দফা কর্মসূচির মূল বিষয়টি হলো শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না। আর এটি সুশীল সমাজের দেয়া ফর্মুলা বলেই অনেকে মনে করেন। এখন তারা বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করতে চায় যারা পাঁচ বছর মেয়াদে থাকবে। একটি সাংবিধানিক কুয়ের মাধ্যমে এমন একটি সরকার গঠন করা করতে চায় যে সরকার থেকে শেখ হাসিনাকে মাইনাস করা হবে এবং সুশীলদের আস্থাভাজন কিছু শুদ্ধ রাজনীতিবিদদেরকে নিয়ে এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠিত হবে। মূল লক্ষ্য হলো শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। এই ফর্মুলাটি বাস্তবায়নের জন্য এখন সিঙ্গাপুরে বৈঠকের পর বৈঠক চলছে বলে জানা গেছে। সেখানে শুধু জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির নেতারাই উপস্থিত নয়, যারা এই ফর্মুলাকে পৃষ্ঠপোষকতা করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং কূটনীতিকরাও বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এদের মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা যে পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখা হবে না। 

আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টি থেকে বা সুশীল সমাজের কোন প্রতিনিধি থেকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বশীল এই জাতীয় সরকার পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব এসেছে পশ্চিমা একটি দেশ থেকে। তবে আওয়ামী লীগ দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতাই এই জাতীয় সরকারের ফর্মুলাতে এখন পর্যন্ত সায় দেননি। তারা এ ধরনের প্রস্তাবকে অবাস্তব এবং হাস্যকর বলেও মন্তব্য করছেন। আর এই কারণে পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সরকারের ফর্মুলাও বাজার পাবে কিনা তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭