ইনসাইড পলিটিক্স

উন্নয়নের প্রচারণায় আওয়ামী লীগ পিছিয়ে কেন


প্রকাশ: 02/09/2023


Thumbnail

আজ উন্নয়নের অভিযাত্রায় বাংলাদেশ আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করল। যোগাযোগের আরেকটি স্বপ্নযাত্রা বাস্তবতায় রূপ পেল। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে উড়ালসড়কের যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে উন্নয়নের এক বিপ্লব ঘটেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এরকম উন্নয়নের একের পর এক মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সর্বশেষ আজ এলিভেটেড এক্সপ্রেস উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গত ১৫ বছরে বিপুল উন্নয়নের এই অভিযাত্রা জনগণের কাছে ঠিকঠাকমতো প্রচার করতে পারছে আওয়ামী লীগ?—এই প্রশ্নটি এখন সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছে সেই উন্নয়ন বিশ্বের বিস্ময়। এই উন্নয়নের পরে আওয়ামী লীগকে আর ভোট চাওয়ারই কথা না। কিন্তু উন্নয়নের বার্তা গুলো মানুষের কাছে ঠিকঠাকমতো প্রচার করা হচ্ছে না। উন্নয়নের বদলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, অপপ্রচার বেশি করে সঞ্চারিত হচ্ছে। এই সমস্ত বিদেশ থেকে কিছু সাইবার সন্ত্রাসী এই সমস্ত উন্নয়নের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচার করছে। ফলে উন্নয়নের গল্পগুলো মানুষের কাছে পৌঁছছে না। মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। এই উড়াল সেতুর কথাই ধরা হোক না কেন। উড়াল সেতু নিয়ে যে বিপুল কর্মযজ্ঞ হয়েছে এটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের  বাস্তবতাগুলো জনগণকে সঠিক ভাবে প্রচারের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল ছাত্র লীগের সমাবেশে তিনি একই রকম প্রস্তাব করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দিচ্ছেন, জনসভা করছেন, জনসংযোগ করছেন তারা উন্নয়নের কথাগুলো ঠিকঠাক মত প্রচার করতে পারছেন না। আবার উন্নয়ন গুলো নিয়ে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিত প্রচারণা দরকার সেই পরিকল্পিত প্রচারণাও হচ্ছে না। উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যমে প্রচারণার কাজটাও সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে কেউ কেউ মনে করেন। 

অনেকেই মনে করেন, এখন নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রধান দায়িত্ব হল যে গত ১৫ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা মানুষের কাছে সুন্দর করে উপস্থাপন করা এবং এই উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মানুষ বুঝতে পারবে যে ২০০৮ এর আগে বাংলাদেশ কোথায় ছিল, একজন মানুষ ছিল, এখন তারা কোথায় গেছে। উন্নয়নের গল্পগুলো যদি ঠিকঠাক মত প্রচারিত না করা যায় তাহলে পরে বিরোধীপক্ষ অপপ্রচারের সুযোগ পাবে এবং নানারকম মিথ্যাচার করতে পারবে। আওয়ামী লীগ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক দুর্বল। মূল ধারার খবর এবং প্রচারণার চেয়ে মানুষ এখন ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণাগুলো বেশি রাখে এবং বিশ্বাস করে। আর এ কারণেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রচারণা বাড়ানো দরকার বলেও কোন কোন বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। 

আওয়ামী লীগের নেতারাও স্বীকার করেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটা পুরোপুরি ভাবে সাইবার সন্ত্রাসীদের দখলে। এরা কৎসিত, অরুচিকর মিথ্যাচারের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা করছে। এই আওয়ামী লীগকে এগিয়ে আসতে হবে। উন্নয়নের গল্প গুলো প্রচার করতে হবে। আর এজন্য দরকার একটি কৌশলগত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ। নির্বাচনের আর মাত্র তিন মাসের সোমবার দিন মাসের মত সময় রয়েছে এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে তার প্রচারণা কৌশল চূড়ান্ত করতে হবে এবং উন্নয়নের কথাগুলো সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এক্ষেত্রে অনেক কিছুই আছে। তিন মাসের মধ্যে কি সেটা পারবে আওয়ামী লীগ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭