ইনসাইড বাংলাদেশ

সমঝোতার চেষ্টায় ড. ইউনূস, সরকারের 'না'


প্রকাশ: 03/09/2023


Thumbnail

একাধিক মামলায় জর্জরিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ওপর যেমন আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করছেন তেমনি সরকারের ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গেও দেনদরবার করছেন। তাদের মাধ্যমে তিনি সরকারের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এই সমঝোতার প্রধান লক্ষ্য হলো ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে করা ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা। ড. ইউনূস এখন রাজি হয়েছেন যে তিনি শ্রমিকদের পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং আদালতের বাইরে এই বিষয়টিকে ফয়সালা করতে চাইছেন। 

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ড. ইউনূসের বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এ ধরনের প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছেন। তবে সরকার এ ধরনের প্রস্তাবে ইতিবাচক ভাবে সাড়া দেয়নি। বরং সরকার এই সমস্ত প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়ে বলেছে, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেই মামলায় সরকারের করণীয় কিছুই নেই। এটি শ্রমিকদের মামলা। এ ব্যাপারে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। 

উল্লেখ্য, সরকারের মধ্যে যারা আছেন তাদের মধ্যে ইউনূসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিটি এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাও বটে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এই ব্যক্তির সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একবার সরকারের সাথে সমঝোতা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু তিনি এখন দেশে না থাকায় ড. ইউনূস সমঝোতার বিকল্প পথ খুঁজছেন। যাদের সাথে সরকারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে এরকম বেশ কিছু বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে ড. ইউনূস যোগাযোগ করেছেন এবং তাদের মাধ্যমে তার মামলার দায় দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বর্তমানে ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান। হোসেন জিল্লুর রহমান ২০০৭ সালের এক-এগারোর দ্বিতীয়ভাগে উপদেষ্টা হয়েছিলেন। এবং দেশকে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। হোসেন জিল্লুর রহমান আবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তিনি গুরু হিসেবে মনে করেন। হোসেন জিল্লুর রহমানের মাধ্যমে সরকারের অন্তত দুইজন মন্ত্রীর কাছে সমঝোতার বার্তা দেয়া হয়েছে। সমঝোতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো যে, ড. ইউনূস শ্রমিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। কিন্তু শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নিবে। কিন্তু এ ব্যাপারে দুই মন্ত্রী কোন ইতিবাচক সাড়া দেননি। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর যোগাযোগ এবং ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেই প্রভাবশালী মন্ত্রীও ড. ইউনূসের প্রস্তাবে কোনো উত্তর দেননি। তিনি ড. ইউনূসকে জানিয়েছেন, এটি সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে তিনি হস্তক্ষেপ করতে চান না।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. ইউনূস বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এক সাবেক আমলার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তিনিও এখন পর্যন্ত ইউনূসকে কোন সহায়তা করতে পারেননি। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সরকার ড. ইউনূসের ইস্যুতে কোনো ধরনের সমঝোতায় যাবে না। বরং সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করতে চাইছেন। এটা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলেও সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানিয়ে দিয়েছেন। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭