ইনসাইড বাংলাদেশ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ড. ইউনূস এবং মার্কিন ব্লুপ্রিন্ট


প্রকাশ: 03/09/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে, ড. ইউনূসের ভূমিকা কি হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে চায় এই ত্রিমুখী প্রশ্নের একটাই উত্তর তা হলো বাংলাদেশে একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। আর এই লক্ষ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নীলনকশার নীরব বাস্তবায়ন করছে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর এই নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্যই ড. ইউনূস ইস্যুটি হঠাৎ করেই সামনে এসেছে। 

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। বিএনপি বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। এ ধরনের নির্বাচন হতেও দেবে না বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বারবার ঘোষণা করছেন। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক। তারা এখন পর্যন্ত সরাসরিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সমর্থন জানায় নি। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন যে ধরনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে এই সরকারকে চাপে ফেলার জন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো দাবিগুলোকেও মেনে নিতে পারে। আর বাংলাদেশে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে বিএনপিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেয় সেক্ষেত্রে তাদের মাথায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস রয়েছে বলেও মনে করেন কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। 

২০০৭ সালে এক-এগারো আনার পিছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় ভূমিকা ছিল। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ পশ্চিমা দেশগুলো একত্রিত হয়েছিল দীর্ঘমেয়াদে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে। আর এই সময় তাদের প্রথম পছন্দ ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাবও গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ড. ইউনূস রাজি হননি এই কারণে যে মাত্র দুই মাসের পরিকল্পনা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান তিনি হতে চান না। তার পরিকল্পনা আরও বিস্তৃত। তবে এখন ড. ইউনূসের বয়স ৮৩ বছর বয়সে সরকারপ্রধান হবার মতো শক্ত আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বয়সে যদি প্রেসিডেন্ট হতে পারে ড. ইউনূস কেন ৮৩ বছর বয়সে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হবেন না। তবে যারা ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ তারা জানেন যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনভাবেই নিজেকে সরাসরি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে যুক্ত করবেন না। তবে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে তার পছন্দের একটি অনির্বাচিত সরকার আনার পিছনে তিনি মূলত কলকাঠি নাড়ছেন। তিনি মূলত সরকারের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলকে প্ররোচিত করছেন বলেও জানা গেছে। 

উল্লেখ্য, গতকাল নিউ ইয়র্ক টাইমসে বিএনপির পক্ষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত রয়েছে বলে জানা গেছে। একদিকে বিএনপিকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন অন্যদিকে মানবাধিকার সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসলে তার নিজের ফৌজদারি মামলা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাচ্ছেন। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত যদি সরকারের সাথে তার সমঝোতা না হয় তাহলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনার জন্য চেষ্টা করবেন। আর এখানেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুপ্রিন্ট। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অনির্বাচিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একান্ত অনুগত সরকার আনতে চায়। আর সেই লক্ষ্যেই তারা গত দুই বছর ধরে কাজ করছে। এখন দেখার বিষয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী ড. ইউনূসের পরিকল্পনায় বাংলাদেশে কি একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে নাকি বর্তমান সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭