ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি না ড. ইউনূস: কে সরকারের জন্য বিপজ্জনক


প্রকাশ: 04/09/2023


Thumbnail

সরকারের সামনে দুটো মাথা ব্যথার বিষয় রয়েছে। এক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা এবং দ্বিতীয়টি হলো বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা। এ দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনটি সরকারের জন্য বিপদজনক তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে। দুটি ইস্যুই স্পর্শকাতর এবং যে কোনো একটি ইস্যু সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলেও কোন কোন মহল মনে করছেন। 

বেগম খালেদা জিয়া এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তাকে এখন সিসিইউতে রাখা হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয় তাহলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একটি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যান। এরপর আরেকটি মামলায় দণ্ডিত হন বেগম খালেদা জিয়া। ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত দু বছরের বেশি সময় তিনি কারান্তরীণ ছিলেন। এসময় চিকিৎসার জন্য কিছুদিন তাকে বিএসএমএমইউ-তে রাখা হয়েছিল। তবে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আইনি লড়াই বা রাজনৈতিক লড়াই কোনটাই করতে পারেনি। শেষে সরকারের কৃপায় খালেদা জিয়া বিশেষ বিবেচনায় মুক্ত হন এবং নির্বাহী আদেশে তাকে ফিরোজায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়। এখন বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে নিজ দায়িত্বে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে কিন্তু সরকার বলেছে সেই সুযোগ নেই। 

বিএনপির কোন কোন নেতা খালেদা জিয়াকে নিয়ে এখন বেশি উৎসাহী এবং উদগ্রীব। তাদের মনে করেন, খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সরকারের ওপর নির্বাচনের আগে বড় ধরনের চাপ পড়বে এবং জনগণের আবেগ সরকারের বিপক্ষে যাবে। বিএনপি যে ধরনের রাজনৈতিক দল তাতে অনেকেই সন্দেহ করেন তাহলে কি রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে  বিএনপি কিছু করতে পারে? 

এখন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই চিকিৎসার সমস্ত দায়-দায়িত্ব বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের। কাজেই তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য কোন অপকর্ম করবে কিনা তা নিশ্চিত করে কে বলতে পারে। এর আগেও বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা রয়েছে। তাছাড়া লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিএনপির নিরঙ্কুশ ক্ষমতা গ্রহণ করতে চাইছেন। আর সে কারণে তিনি খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা না করে এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের মত খালেদা জিয়ার খারাপ কোন সংবাদের অপেক্ষা করছেন কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ খালেদা জিয়ার যদি এখন কিছু হয় তাহলে সবচেয়ে লাভবান হবেন তারেক জিয়া এবং বিএনপি। এই সুযোগে তারা আন্দোলনকে বেগবান করতে পারবেন। এই নিষ্ঠুরতা বিএনপি যে করবে না হলফ করে কেউ বলতে পারেনা। 

ড. ইউনূসও সরকারের জন্য এখন একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ড. ইউনূসের মামলা বন্ধ চেয়ে ইতিমধ্যে একাধিক নেতা বিবৃতি দিয়েছেন এবং ড. ইউনূসের এই মামলার বিষয়টি নিয়ে প্রভাবশালী মার্কিন রাজনীতিবিদরা মাঠে নেমেছেন। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনের মত রাজনীতিবিদরা যখন একটা বিষয় নিয়ে বিবৃতি দেন তখন তা উদ্বেগের কারণ বটে। যদিও সরকার এখন পর্যন্ত মার্কিন চাপকে আমলে নিতে চাইছেন না। কিন্তু নির্বাচনের আগের ড. ইউনূস ইস্যুটা রূপ পরিগ্রহ করতে পারে বলে অনেকের ধারণা। এখন দেখার বিষয় বেগম খালেদা জিয়া না ড. ইউনূস কোনটা সরকারের জন্য বেশি অস্বস্তিকর এবং বিপজ্জনক ইস্যুতে পরিণত হয়। তবে সরকার বলছে, দুটোর কোনটাই সরকারের জন্য বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭