প্রকাশ: 08/09/2023
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ বিকেলে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। নরেন্দ্র মোদির সরকারি বাসভবনেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লির এ সফরকালে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টাকা ও রুপির লেনদেন সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতের এনপিসিআই-এর মধ্যে সমঝোতা।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার দিল্লি সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। প্রধানমন্ত্রী ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য দিল্লি যাবেন। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
এছাড়া সম্মেলনের সাইডলাইনে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ কোরিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সম্ভাবনা আছে। তিনি দিল্লিতে বাংলাদেশের হাঁড়িভাঙা জাতের আমের চারা রোপণ করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হবে তা হলো : কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনপিসিআই-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক।
তিনি বলেন, ভারতের এনপিসিআই ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হলে দুই পক্ষের মধ্যে নেটওয়ার্ক-টু-নেটওয়ার্ক সংযোগের মাধ্যমে রুপি-টাকায় পারস্পরিক লেনদেনের কাজ সহজ হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না। আমরা যেটি চাই-আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য। আমরা কোনো কারচুপি চাই না।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চাই। সেখানে কেউ যদি আমাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে কেউ যদি মাতব্বরির ভূমিকা নিয়ে আসে, আমরা সেটি সহ্য করব না। আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পান না।
তিনি বলেন, আমরা কোনো চাপের মুখে নেই। কারণ, আমরা অত্যন্ত পরিষ্কার যে সুন্দর একটি নির্বাচন করব। অন্যরা পছন্দ করুক বা না করুক, এটি তাদের সমস্যা। এ সময় তারা চাপের মুখে পড়ে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা টিকে থাকব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় বাংলাদেশ কোনো ধরনের ‘প্রক্সি ওয়ারে’ যুক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, আমরা সব সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। তাই কোনো ধরনের ‘প্রক্সি ওয়ারে’ যুক্ত হবে না বাংলাদেশ।
‘প্রক্সি ওয়ার’ বা ‘ছায়াযুদ্ধ’ হলো দুটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের মধ্যে এমন একটি পরিস্থিতি, যেখানে কোনো পক্ষ সরাসরি আক্রমণ বা অন্যের প্রতি সামরিক শত্রু স্বীকার করে না। কিন্তু ছোট ও শক্তিশালী রাষ্ট্র বা সশস্ত্র মিলিশিয়া তাদের জন্য লড়াইয়ে প্রক্সি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে কোনো পরামর্শ দিলে আমরা তাদের স্বাগত জানাই। ড. মোমেন জানান, ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন।
সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’-এর আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারি-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি-খাদ্যপণ্য-সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার মতো যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, তা মোকাবিলার বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য তুলে ধরবেন।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আর্থসামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্জিত অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করবেন। ড. মোমেন আরও জানান, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এ দুটি অধিবেশনের মাঝে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের একাধিক নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে মিলিত হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন।
এরপর তিনি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন। সম্মেলন শেষে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরবেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭