ইনসাইড বাংলাদেশ

একাত্তরের বন্ধুরাই আসল বন্ধু


প্রকাশ: 08/09/2023


Thumbnail

বাংলাদেশ এখন কূটনীতির অঙ্গনে এক ব্যস্ত সময় পার করছে। একদিকে যেমন বিদেশ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবশালী দেশের সরকার প্রধান এবং কূটনীতিকরা বাংলাদেশ সফর করছেন অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগ দিয়ে সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প বলছেন, আলো ছড়াচ্ছেন।
 
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কদিন আগেই ব্রিকস সফর করে এলেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ প্রধানমন্ত্রী গেছেন জি-২০ সম্মেলনে। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের যাওয়ার আগেই রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন গণভবনে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। দুই দিনের সফরে তিনি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত এবং রাশিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকট এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। একাত্তরের এই বন্ধুত্ব অবিস্মরণীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো প্রভাবশালী দেশগুলো সেই সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। তাদেরকে সমর্থন দিয়েছিল। তাই ইতিহাস বলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এত সহজ সাধ্য হতো না, যদি না ভারত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা বাংলাদেশ না পেত। সেরকম একটি প্রেক্ষাপট আবার নতুন করে তৈরি হয়েছে। 

সারা বিশ্ব এখন বিভক্ত। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর আবার নতুন করে বিশ্বে স্নানে যুদ্ধের আমেজ ফিরে এসেছে। চীন পক্ষ বদল হয়েছে মাত্র। চীন এবং রাশিয়া এখন এক পক্ষ হয়ে গেছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পশ্চিমা মিত্রদের নিয়ে বিশ্ব কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টা হোঁচট খাচ্ছে বারবার। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে এবং আফ্রিকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এবং নজরদারি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এরকম প্রেক্ষাপটে বিশ্ব কূটনীতিতে বাংলাদেশ সক্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশের কূটনীতির মূল লক্ষ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয় থেকে বেরিয়ে এসে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা এবং বাংলাদেশ যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে এক ঘরে হয়ে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করা। আর সেই চেষ্টায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সফল হয়েছে।

আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশ নির্বাচন এবং ড. ইউনূস নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক চাপ অনুভব করছে এমনটি মনে করা হলেও অনেকে মনে করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল আগ্রহের জায়গা হলো বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের বাজার। আর এরকম প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশ যেন চীনের সাথে সম্পর্ক আস্তে আস্তে গুটিয়ে ফেলে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুগত হয় সেই চেষ্টা করছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্ষমতাবান এই দেশটি। আর এই রকম সংকটে বাংলাদেশ পাশে পাচ্ছে একাত্তরের বন্ধুদেরকে। সংকটের সময় আবার এটা প্রমানিত হচ্ছে যে, একাত্তরের বন্ধুরাই আসল বন্ধু। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশ নিয়ে যে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ তা বাংলাদেশ একাত্তরের বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে মোকাবিলা করতে পারে কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭