ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেছে : কিভাবে হবে?


প্রকাশ: 10/09/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা এবং শঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে- রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তেমনটি মনে করছেন। কিন্তু এই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে, সেটি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। শঙ্কা কেটে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, আগামী নির্বাচন যে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হচ্ছে না- এটা মোটামুটি নিশ্চিত। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

এই নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী কিভাবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবেন বা নির্বাচনকালীন সরকারে কারা কারা থাকবে?- সেটি আওয়ামী লীগ এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা চূড়ান্ত করবেন। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে- এ বিষয়টি তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেছেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নির্বাচন পর্যন্ত পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চায়, তাঁরা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে- এটি প্রত্যাশা করে।  

আর এরকম বাস্তবতায় যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেই নির্বাচনে কারা কারা অংশগ্রহণ করবে এবং কারা কারা অংশগ্রহণ করবে না?- সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। আগে যেমন পরিস্থিতিটা ছিল, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না এবং পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না। কিন্তু এখন পরিস্থিতিটা তেমনটি নয়। বরং এখন মনে করা হচ্ছে, নির্বাচনে যে দলগুলো অংশগ্রহণ করুক না কেন, পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেখবে যে, নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অবাধ হচ্ছে কিনা, ভোটাররা তার ইচ্ছা মতো ভোট দিতে পারছে কিনা, প্রার্থীরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছে কিনা- এ ব্যাপারে সরকার আশ্বস্ত করেছেন এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার।  

আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো চাপে নেই। বরং বারবার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন এবং এই অঙ্গীকারের তিনি ব্যত্যয় হতে দেবেন না। এখন প্রশ্ন হলো, বিএনপি কি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে কি আসবে না? 

বিএনপির মধ্যে এখন পর্যন্ত নেতিবাচক মনোভাবই দেখা গেছে। তবে বিএনপির কাছে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা একটি নতুন বার্তা দিয়েছেন, তারা বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপির কাছে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে, এই আশ্বাস সরকার দিয়েছে এবং এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বিএনপির উচিত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। 

বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। এরকম আশ্বাস সরকার আগেও দিয়েছিল। তবে বিভিন্ন বিদেশী কূটনীতিকরা বিএনপিকে বলেছেন যে, অন্যবারের আশ্বাস আর এবারের আশ্বাস ভিন্ন রকম। বিএনপি দুটি কৌশল গ্রহণ করতে পারে, একটি নির্বাচন বর্জন করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। বিএনপির কোনো কোনো নেতার ধারণা, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে ভোটারদের উপস্থিতি কম হবে। ভোটাররা নির্বাচনে ভোট দেবেন না। কাজেই এই রকম নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

আবার বিএনপির মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে, ভিন্ন রকম ব্যাখ্যাও রয়েছে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, যদি বিএনপি ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে, তাহলে বিএনপি নেতাদের ওপর মামলা ও নানা রকম নিপীড়ন করে তাদের জেলে নেবে এবং বিএনপিকে ঘরবন্দী করে শেষ পর্যন্ত দৃশ্যমান একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়ানোর জন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে এবং সেক্ষেত্রে সফলও হবে। কাজেই এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে বলেও বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন। 

তবে বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, তারা অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান। এই সময়ের মধ্যে যদি তারা আন্দোলনকে একটি যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিতে পারেন, তাহলে হয়তো তারা আর নির্বাচনে যাবেন না। আর যদি তারা দেখেন যে, আন্দোলন জমে উঠছে না, সেক্ষেত্রে বিএনপিও নির্বাচনের পথে হাঁটবে। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে, এটা এখন মোটামুটি নিশ্চিত। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭