ইনসাইড পলিটিক্স

এবার ঘর গোছাবে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 11/09/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সামনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনটি বাধা ছিল। প্রথম বাধা ছিল বিরোধী দলের আন্দোলন, দ্বিতীয় বাধা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের আপত্তি এবং নজরদারি, আর তৃতীয় বাধা হলো আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এই তিন বাধা অতিক্রম করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং জয়ী হতে হবে। তিন বাধার মধ্যে আওয়ামী লীগ দুটি বাধাই অতিক্রম করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

প্রথম বাধা ছিল বিএনপির আন্দোলন। গত বছর ডিসেম্বরও বিএনপির আন্দোলনে যেরকম তেজীভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল, সেই তেজীভাব এখন আর নেই। বরং বিএনপির আন্দোলনে এখন ভাটার টান। বিএনপি তাদের আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। ফলে এই আন্দোলন দিয়ে আগামী দুই মাস সময়ের মধ্যে সরকার পতন ঘটানো যাবে - এমনটি বিএনপির নেতারাও বিশ্বাস করেন না। ফলে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বা চিন্তার কোন কারণ নেই। শুরুতে যেটি একটি বড় মাথাব্যথার কারণ ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য। 

দ্বিতীয় বাধা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নজরদারি এবং নির্বাচন নিয়ে সরকার বিরোধী একটি সুস্পষ্ট অবস্থান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয়- সেই নির্বাচনে যেন সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে, এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সুস্পষ্ট বার্তা ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য। আর এরকম নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ নানা রকম নিষেধাজ্ঞার হুমকিও ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত কূটনীতি দিয়ে এই বাধা অতিক্রম করেছেন বলেই এখন সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর ব্রিকস সফর এবং জি-২০ সফরের পর এটি সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনটি আগে দেখতে চায়, নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হচ্ছে সেটি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করলো না করলো, সেটি তাদের কাছে বড় বিষয় নয়। এর ফলে আওয়ামী লীগ যে সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবে, আন্তর্জাতিক কোনো বাধা তাতে আসবে না- এটি মোটামুটি এখন নিশ্চিত। 


এই দুই বাধা অতিক্রম করে আওয়ামী লীগকে এখন মনোযোগ দিতে হবে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ব্যাপারে এবং এটি এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথায় রূপ নিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতারাই মনে করছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্য বলেছেন, প্রতিটি আসনে তিন থেকে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন এবং তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করছেন, প্রচারণা করছেন। এই অবস্থা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। 

আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা জেলা-উপজেলাতেই দলের কোন্দল এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মারপিট এবং প্রকাশ্য বিরোধের ঘটনা ঘটছে। এগুলো নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ইতিমধ্যে মনোনয়ন নিয়ে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। প্রতিটি আসনেই একাধিক ব্যক্তি মনোনয়নের জন্য বিভিন্ন নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা মনে করেন, সবার আগে আওয়ামী লীগের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল বন্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছেন, বিদেশী অতিথিদের বিদায় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন আওয়ামী লীগের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটমাট করার কাজে মনোযোগ দিবেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রায় আড়াইশো আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন, এরকম ব্যক্তিদেরকে ইতিমধ্যেই সবুজসংকেতও দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে সবুজসংকেত দেওয় হবে। 

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়র আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠকে নেতৃত্ব দিবেন এবং তার প্রধান লক্ষ্য হবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করতে পারলেই আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে সহজ জয় পাবে এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭