প্রকাশ: 12/09/2023
জামাত সারা দেশে এক গোপন সার্কুলার দিয়েছে। এই সার্কুলারে জামাতের কর্মী এবং সাথীদের দশ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এই নির্বাচনের জন্য এখনই জনসংযোগ এবং জামাতের গৃহীত কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করতে হবে। কারও বসে থাকার সময় নেই।
এই নির্বাচনকে জীবন মরণের নির্বাচন
হিসেবে অভিহিত করে সার্কুলারে বলা
হয়েছে, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় জামাতের লক্ষ্য হলো দুটি: ১।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করা ২। জামাতের
প্রার্থীর পক্ষে জনমত সংগঠিত করা।
অর্থাৎ
নির্বাচনে জামাতের প্রধান লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগের
প্রার্থীকে যেন যেকোনো উপায়ে
পরাস্ত করা। আর জামাতের
নির্বাচনী কৌশলের রূপরেখা পাওয়া গেছে এই সার্কুলারে।
সার্কুলারে
যে দশটি দিক নির্দেশনা
দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:
১। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের
প্রার্থীর বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়ম তার ব্যর্থতা এবং
তার বিভিন্ন অপকর্মের কাহিনী সর্বাত্মকভাবে জনগণের কাছে প্রচার করতে
হবে।
২। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে। বিদ্রোহী
প্রার্থীদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা দিতে হবে এবং
তাদের পাশে থাকতে হবে।
তারা যেন নির্বাচনে কোনোভাবেই
প্রার্থী হিসেবে না দাঁড়াতে পারে।
৩। সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ইত্যাদির কথা জনগণের কাছে
পৌঁছে দিতে হবে এবং
বিভিন্ন রকম সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে যে সমস্ত প্রচারণাগুলো
আছে সেই প্রচারণাগুলোকে সর্বস্তরে
ছড়িয়ে দিতে হবে।
৪। সরকারের সমালোচনার জায়গাগুলোকে জনগণের কাছে তুলে ধরতে
হবে এবং এ নিয়ে
প্রচারণা বাড়াতে হবে।
৫। সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এবং বাংলাদেশ যে
ভারত নির্ভর একটি দেশ হয়ে
নিজেদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে
দিচ্ছে সেই বক্তব্য জনগণের
কাছে প্রচার করতে হবে।
৬। বর্তমান সরকারের গত পনেরো বছরের
জুলুম নির্যাতন জনগণের কাছে তুলে ধরতে
হবে। যেন জনগণ সত্য
এবং মিথ্যার পার্থক্য বুঝতে পারে।
৭। যেখানে জামাতের প্রার্থী রয়েছে, সেখানে জামাতের প্রার্থীকে সংগঠিত করতে হবে। তার
জন্য এখন থেকেই গোপনে
এবং প্রকাশ্যে প্রচারণা করতে হবে। আর
যেখানে প্রার্থী নেই, সেখানে জামাতের
মনোভাবাপন্ন এবং জামাতের আদর্শের
সঙ্গে সংহতিপূর্ণ প্রার্থীকে বাছাই করতে হবে এবং
তাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
৮। কোনো অবস্থাতেই বাম
ঘরনার বিশ্বাসী কোনো রাজনৈতিক দলের
সঙ্গে ঐক্য বা সমঝোতা
করা যাবে না।
৯। ভারতপন্থী বা ভারতের প্রতি
সহানুভূতিশীল এমন প্রার্থী তা
যে দলেরই হোক না কেন,
তাকে প্রতিহত করতে হবে।
১০।
নির্বাচনের নির্বাচনের আগে প্রকাশ্য জোট
না হলেও, গোপনে সহমর্মী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট করতে হবে।
এই দশ দফা গোপন
নির্দেশনার মাধ্যমে জামাত আসলে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী
প্রচারণায় নামলো বলেই জামাতের নেতারা
করছেন। এর আগে গত
তিন মাসে জামাত সারা
দেশে তিনশো আসনে মনোনয়ন প্রার্থীদের
কাছ থেকে মনোনয়নের অভিপ্রায়
আহ্বান করেছিল এবং এই অভিপ্রায়ে
সাড়া দিয়ে তিনশো আসন থেকেই জামাতের
বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্খার কথা জানিয়েছিলেন।
তবে জামাতের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তারা শেষ পর্যন্ত ১০০ থেকে ১২০টি আসনে প্রার্থী দেবে। বাকি আসনগুলোতে তাদের প্রধান লক্ষ্য হবে আওয়ামী লীগকে হারানো। জামাতের এই নির্দেশনা এবং বার্তা থেকে সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় যে আগামী নির্বাচনে জামাত অংশগ্রহণ করবে এবং নিশ্চয়ই বিএনপিও জামাতের মতো নির্বাচনে যাবে। জামাত আগে তাদের অবস্থান জানিয়েছে এবং বিএনপিও হয়তো খুব শীঘ্রই তাদের অবস্থান জানাবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭