প্রকাশ: 13/09/2023
বাংলাদেশের
ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে
মূল্যবান ক্রিকেট রত্ন মানতে হবে
সাকিব আল হাসানকে। শুধু
দেশসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে নয়, অর্জনে দেশের
ইতিহাসে এখনো সেরা তিনি।
মাঠের ক্যারিশমা যা রেখে গেছেন
তাতেই অমরত্ব কেনা হয়ে গেছে।
তার খেলা তার মাঠের
পারফর্মেন্স নিয়ে কারো কোন
সন্দেহ নেই। তবে সাকিব
আল হাসান আর বিতর্ক যেন
একসুতোয় গাঁথা।
শ্রীলংকার বিপক্ষে
সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে রবিবার ঢাকায় ফিরেছেন সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর
রহিম। সাকিবের নাম শুনে অবাক হওয়ারই কথা। কারণ এই ম্যাচ শেষে দেশে ফেরার কথা ছিলো শুধুমাত্র
মুশফিকুর রহিমের। তবে তার সফরসঙ্গী হয়েছেন সাকিবও। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে
মুশফিক দেশে ফিরবেন সেটা আগেই জানা গিয়েছিলো। তবে সাকিবের কারণটা স্পষ্ট কারোই জানা
ছিল না। কিন্তু গতকাল একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় সাকিব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান। সে জন্য তিনি (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে গিয়েছিলেন
এবং সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মূলত এ কারণেই তার
দলকে শ্রীলংকায় ফেলে বাংলাদেশ সফর।
বর্তমানে চলছে
এশিয়া কাপ। ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখেছিল দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু এমন আকাশছোঁয়া
স্বপ্ন কতটা অবাস্তব মাঠে টাইগারদের পারফর্মেন্সই সেটা জানিয়ে দিয়েছে। ব্যাটিং বোলিং
ফিন্ডিং সব বিভাগেই কেমন যেন ছন্দহীন বাংলাদেশ। দলের যখন এমন অবস্থা তখন দলকে কলম্বোতে
রেখে নির্বাচনের জন্য দেন দরবার তদবির করতে সাকিবের ঢাকা ছুটে আসাটা কতটা যৌক্তিক?
কোন অধিনায়কের পক্ষে কিভাবে একটা স্বার্থপর ও দায়িত্বহীন হওয়া সম্ভব? বিসিবিও কিভাবে
তার এই ছুটির অনুমোদন দেয় সেই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত বিসিবির কাছেও নেই। বাংলাদেশ
দল এখন অনেক তরুণ খেলোয়াড়, তারাই বা দলনেতার এমন দায়িত্বহীনতা থেকে কি শিখছেন।
সাকিব নির্বাচন
করবেন নাকি ক্রিকেট খেলবেন এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু তার মনোযোগ যেকোন
একটিতেই স্থির করা উচিত। অনেকেই মনে করছেন এসবের কারণেই ক্রিকেটে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে
পারছেন না সাকিব। এশিয়া কাপেও তিনি ঠিক তার মত করে জ্বলে উঠতে পারেননি। এশিয়া কাপের
স্বপ্ন ইতোমধ্যে শেষ। সামনে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপ নিয়েও দেশের মানুষের
অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু দলের অধিনায়কের কর্মকান্ডে যে কেউ মনে করতেই পারে খেলায় কম
এবং খেলার বাইরের কাজ নিয়েই তার আগ্রহ বেশি।
সাকিব নির্বাচন
করতে চায় সেটি নিশ্চিত। তিনি আদোও প্রার্থীতা পাবেন কিনা সেটি নিয়ে অবশ্য সন্দেহ আছে।
যদি তিনি প্রার্থীতা পান তাহলে তিনি বিশ্বকাপে মনোযোগ দিবেন নাকি নির্বাচনে। আগমী ৫
অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ, যা চলবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। এবং জানুয়ারি
মাসের প্রথম সপ্তাহেই হতে যাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি যদি বিশ্বকাপে দলকে
নেতৃত্ব দেন তাহলে তিনি নির্বাচনে প্রচারণাসহ অন্যান্য কাজ করবেন কিভাবে, আর যদি তিনি
নির্বাচনেই নিজের মনোযোগ স্থির করেন তাহলে দলকে সময় দিবেন কিভাবে?
নিয়ম নীতির
তোয়াক্কা না করে স্রোতের বিপরীতে চলে অনেক সময় তিনি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে প্রশংসিত
হয়েছেন। কিন্তু তাই বলে তিনি কি সব নিয়ম নীতির উর্ধ্বে? কখনো কখনো বিসিবিও কঠোর হওয়ার
চেষ্টা করেছে তা সত্যি। দলে না রাখার হুমকি দিয়ে বেটিং সাইটের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
চুক্তি থেকে বের করে আনার সাফল্য যেমন আছে, তেমনি ছাড় দিয়ে নানা বিতর্কের ডালপালা মেলতে
দেওয়ার ব্যর্থতাও কম নেই তাদের। বাংলাদেশ দলে সাকিবে বিকল্প নেই সেটি যেমন সত্য তেমনি
দুষ্ট গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভালো সে কথাও সত্য। ক্রিকেট এ দেশের মানুষের আবেগের জায়গা
ভালোবাসার জায়গা। কোন ব্যক্তি কখনও দলের উর্ধ্বে হতে পারে না। দলের স্বার্থ সবার আগে।
সেখানে দলনেতার এমন দায়িত্বহীনতার কোন সুযোগ নেই। সাকিব দিনশেষে রাজনীতি নাকি ক্রিকেট
কোনটিকে প্রাধান্য দেবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭