প্রকাশ: 14/09/2023
কক্সবাজারের সাগর দ্বীপ কুতুবদিয়া দ্বীপের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠেছে সম্ভবনাময় আরেকদ্বীপ স্থানীয়রা যার নাম দিয়েছে ‘মায়াদ্বীপ’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ববিদ ড, আবদুল হক জানিয়েছেন নতুন
এ দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপের চাইতে অনেক বড়। তবে এ দ্বীপে ম্যানগ্রুপ ফরেষ্ট সৃজন
করে যথাযত পরিচর্যা করা হলে ৫/৬ বছরের মধ্যে এ দ্বীপ ব্যবহার উপযোগী করা যাবে।আর
যদি সাগর থেকে মাটি উত্তোলন করে দ্বীপটি ভরাট করা হয়, মানুষ প্রাণ প্রকৃতি ও
জীববৈচিত্র্য সমাহার ঘটতে সময় লাগবে দুই থেকে তিন বছর।ফলে এ দ্বীপ কক্সবাজারের
আরেকটি পর্যটন স্পট হিসাবে নয়া দিগন্তের সূচনা করবে।
অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ
কুতুবদিয়া। এ দ্বীপের অদূরে এই মায়াদ্বীপ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অনন্য
আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে চিহ্নিত হবে, সেদিন খুব বেশী দূরে নয়। অপার সম্ভাবনার
হাতছানি দিচ্ছে এই মায়াদ্বীপ। সেন্টমার্টিন, মাতারবাড়ি ধলঘাটা, সোনাদিয়া, ডিজিটাল
আইল্যান্ড মহেশখালী ও কুতুবদিয়া হলো সাগরবেষ্টিত দ্বীপ। কুতুবদিয়ার পশ্চিম
বঙ্গোপসাগরের আরও একটি দ্বীপ জেগে উঠেছে। এ যেন প্রকৃতির অনন্য অবদান।কারণ
সাগর বা নদী একদিকে গড়ে অন্যদিকে ভাঙে এইতো প্রকৃতির খেলা। কুতুবদিয়ার
পশ্চিম প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের বুকে দ্বীপটির অবস্থান। এর নাম স্থানীয়রা
দিয়েছেন ‘মায়াদ্বীপ’।
কুতুবদিয়া থেকে পশ্চিমে এ দ্বীপের দূরত্ব প্রায় আড়াই থেকে মাত্র
তিন কিলোমিটার। এটি জোয়ারের সময় অর্ধেক ডুবে, ভাটার সময় পুরোটাই জেগে উঠে। এ
দ্বীপের বৈশিষ্ট হচ্ছে সূর্যদোয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়।পড়ন্ত বিকেল থেকে সূর্যাস্ত
পর্যন্ত এ সময়টাতে এর সৌন্দর্য অপরূপ। শেষ বিকেলে সূর্যের আলো বুকে নিয়ে দ্বীপটি
যখন জেগে ওঠে তখন স্বর্গীয় এক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে দ্বীপজুড়ে।
স্থানীয়দের মতে, এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও ২০১৮ সালে তৎকালীন
নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান ফেনী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুজন চৌধুরীর
নেতৃত্বে কুতুবদিয়া কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দুলাল কান্তি বড়ুয়ার আয়োজনে উপজেলার
বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা এ দ্বীপটি পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা মৎস্য
অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ এ চরের নাম জন আকাঙ্খানুযায়ী এ দ্বীপকে
‘মায়াদ্বীপ’ হিসাবে প্রস্তাব করেন। তবে আরও কিছু নাম প্রস্তাবে আসলেও বৈঠক শেষে
সবার মতামতের ভিত্তিতে এ চরের নামকরণ করা হয় মায়াদ্বীপ। সেই থেকে এ নামটি পরিচিতি
পায়। বড়ঘোপ সমুদ্র সৈকত হতে নৌকায় পড়ন্ত বিকেলে স্থানীয় যুবকরা ফুটবল খেলতে যায়
সেখানে।
কুতুবদিয়া খেলোয়াড় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রশিদ বাদশা বলেন, শীত
মৌসুমে বিকেলের দিকে তারা দল বেঁধে নৌকায় চড়ে মায়া দ্বীপে ফুটবল খেলতে যায়।
উপযুক্ত মাঠ ও পরিবেশের কারণে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য আরেকটি নতুন উপহার এই
মায়াদ্বীপ।
জেলে ফরিদ আলম, গিয়াস উদ্দিন, মানিকসহ অনেকেই বলেন, সাগরে মাছ ধরতে
যাওয়া আসার পথে নৌকাটি দক্ষিণ পাশ দিয়ে চালাতে হয়। তাদের একটু কষ্ট হলেও এ দ্বীপটি
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কুতুবদিয়াকে রক্ষা করে।
সাবেক ইউএনও সুজন চৌধুরীর সফরসঙ্গী কক্সবাজার জেলা আঞ্চলিক পল্লী
সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা সুপানন্দ বড়ূয়া বলেছেন, মায়াদ্বীপের কারণে কুতুবদিয়া
দ্বীপটি সাগরের ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে। মায়াদ্বীপকে নিয়ে সরকারিভাবে
উন্নয়নের পরিকল্পনা করলে বড় ধরনের সুফল পাবে বলে মনে করেন তিনি। দেশী-বিদেশী
পর্যটকদের ঢলও নামবে সেখানে। শুধু তাই নয় কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি ও চেম্বার অফ
কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, আমরা যদি বিমান বন্দরের রানওয়ের
জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করতে পারি,মাতারবাড়িতে কোহেলিয়া নদী ভরাট করে সড়ক নির্মাণ
করতে পারি,ও ধলঘাটাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করে ভূমি
উদ্ধার করতে পারি। তাহলে প্রায় ৬০/৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জেগে উঠাচরকে কাজে লাগাতে
পারবোনা কেন। কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট
ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নতুন এ দ্বীপ কুতুবদিয়ার রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ
করছে।প্রাকৃতিক নিয়মে এ দ্বীপ জেগে উঠেছে। এটি কুতুবদিয়া মানুষের জন্য
অমূল্য সম্পদ। তবে কৃত্রিম ভাবে এ দ্বীপ জাগিয়ে তুলতে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও
রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭