ইনসাইড বাংলাদেশ

নতুন করে তালিকা তৈরি হচ্ছে ডিসি, এসপি এবং ওসিদের: বিতর্ক মুক্ত থাকতে চায় সরকার


প্রকাশ: 15/09/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসন নিয়ে কোন ধরনের বিতর্কে জড়াতে চায় না সরকার। আর এ কারণে যারাই বিতর্কিত হবে, দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে অতি উৎসাহী আচরণ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল জামালপুরের ডিসি মোহাম্মদ ইমরানকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনে ৬৪ টি জেলায় যারা ডিসির দায়িত্ব পালন করবে তাদের ঠিকুজি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এদের মধ্যে কে অতি উৎসাহী বা কেউ অতি আওয়ামী লীগার আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। শুধু ডিসি নয়, এসপিদের ব্যাপারেও খোঁজ খবর নেওয়ার কথাটি বলা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সব থানার ওসিদের অতীত বর্তমান যাচাই বাছাই করার জন্য। তাদের মধ্যে কেউ বিতর্কিত থাকলে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
 
সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কৌশল চূড়ান্ত করেছে। এই নির্বাচন নিয়ে সরকারের কৌশল হলো সরকার একটি দৃশ্যমান অবাধ-সুষ্ঠ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে, যে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করবে। কোন দল অংশগ্রহণ করলো না করলো সেটি সরকারের বিষয় নয়। আর এরকম একটি নির্বাচনের জন্য দরকার একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ নয় এবং মাঠ প্রশাসন সরকারের অনুগত। সরকার বেছে বেছে দলীয় অনুগত ব্যক্তিদেরকেই মাঠ প্রশাসনে নিয়োগ দান করছে। আর এই অভিযোগের কিছু সত্যতাও পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ উদাহরণ হলো জামালপুরের সদ্য প্রত্যাহারকৃত ডিসি। কিন্তু সরকার এই অভিযোগ গায়ে মাখতে চায় না। আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনোরকম বিতর্ক হোক এটি সরকারের নীতি নির্ধারকরা একদমই চাইছেন না। আর এই কারণেই নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্কে জড়াতে চায় না সরকার। বরং সরকার চায় প্রশাসন নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। 

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করে তাহলেই অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। এখানে অন্য কারো হস্তক্ষেপ বা প্রভাবের দরকার নেই। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে যে মন্ত্রীদের পিএসদের কিংবা আওয়ামী ঘরানার লোকদেরকে বেছে বেছে ডিসি এবং এসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকার মনে করছে যে শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে এই নির্বাচনকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখা হবে। এই নির্বাচনের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি গুলোকে খুঁজে খুঁজে দেখা হবে। আর এ কারণেই সরকার মাঠ প্রশাসনকে নিষ্কলঙ্ক করতে চায় নিষ্কলস রাখতে চায়।
 
ইতিমধ্যে যাদেরকে ডিসি এবং এসপি হিসেবে দেওয়া হয়েছে তাদের তালিকা নিয়ে সরকার আবার পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকে এই সমস্ত পদায়নকৃত কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নির্বাচনের এখনো কয়েক মাস বাকি আছে। এই সময়ের মধ্যে যদি দেখা যায় যে কেউ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত আছেন, কেউ আওয়ামী লীগের পক্ষে বা বিপক্ষে এলাকায় কাজ করছেন তাদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। তাদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসা হবে এবং বিতর্ক মুক্ত ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্যতম শর্ত হলো প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশকে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে অঙ্গীকার করা হয়েছে প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে। সেই অংশ হিসেবেই পুরো দেশে ডিসি, এসপিদের পুনর্বিন্যাস করার শুরু হয়েছে বলেও সরকারের একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭