ইনসাইড বাংলাদেশ

বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা


প্রকাশ: 16/09/2023


Thumbnail

সেপ্টেম্বর মাস বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্ম মাস। এই সেপ্টেম্বর মাসেই দুনিয়ার নজরকাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্জনের উজ্জ্বল নেতৃত্বদানকারী বিশ্বনেতা রাষ্টনায়ক শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি জন্মগ্রহণ না করলে হয়তো বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি, আইনের শাসন এবং উন্নত বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের অবস্থান উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভবপর হতো না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম ‘বাংলাদেশের আলোর পথযাত্রা’। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মমাসে ‘শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-১’ থেকে পাঠকদের জন্য তাঁর একটি লেখা তুলে ধরা হলো।

 বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা  (পর্ব- ৫)

-শেখ হাসিনা 

জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা, যে অন্যায় অবিচার দেশে রয়েছে সে অন্যায় অবিচারের কথা বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের কথা, লাখ লাখ মা-বোন যারা লাঞ্ছিত তাদের কথা তুলে ধরা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আলবদর, রাজাকারদের অন্যায় অবিচার অত্যাচারের কাহিনী জাতির সামনে তুলে ধরা, প্রকৃত ইতিহাস মানুষের কাছে উপস্থাপন করা, এটি কী অন্যায়? এরা প্রাক্তন প্রভু। যাদেরকে যুদ্ধ করে বাংলার দামাল ছেলেরা পরাজিত করেছিল তাদের কথা বলা যাবে না কেন? পরাজিত প্রাক্তন প্রভুরা নাখোশ হন। প্রভুদের পালিত সারমেয়দল অত্যন্ত প্রভুভক্ত, যতই বুটের লাথি থাক, ঝাঁটা খাক গোলামির বন্ধন তাদের বড় মধুর লাগে। মুক্ত স্বাধীন স্বদেশ তাদের কাম্য নয়।

মেরেছ কলসির কানা

তাই বলে কি প্রেম দেব না?

ঠিক এমনি প্রেমে গদগদ প্রভুপ্রেমে যারা বিভোর তারা স্বদেশ বেচে দিতেও কুণ্ঠিত নয় ।

আওয়ামী লীগ আমলে তাই ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে কতবার তাদের প্রভুদের নাম টেলিভিশনে নেওয়া হয়েছে তা হিসাব কষে অঙ্কের ভাষায় খবর পৌঁছে দিতে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেনি।

কাতারে ডি-৮ সামিটে পাকিস্তানের চিফ এক্সিকিউটিভের সঙ্গে যখন সাক্ষাৎ হলো তখন একথা তিনি ও তার সঙ্গীরা উল্লেখ করতে ভুললেন না। তাদের আমি বললাম ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস তো মুছে ফেলা যাবে না। মুছে ফেলা যায় না। আমি বললাম আমরা ক্ষমা করতে পারি কিন্তু ঘটনা তো ভুলতে পারি না। "We can forgive but we can not forget." আর ইতিহাস থেকেই তো মানুষ শিক্ষা নেয়। তাই যদি না হতো তাহলে সিলেবাসে ইতিহাস থাকে কেন? বাংলাদেশের মানুষের সাথে যা ঘটেছে, তা কি প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারবে না।

 বাংলাদেশের মানুষ বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী হিসেবে বিজয়ের ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে না। গৌরবের এ ইতিহাস। থেকে বঞ্চিত করে তাদের বিকৃত ইতিহাস শেখাতে হবে জানাতে হবে? তাহলে তাদের চরিত্র সুদৃঢ় হবে কীভাবে? সত্যকে জানতে পারবে না? মিথ্যা, বিকৃত তথ্য জেনে নতুন প্রজন্ম কি নিজেদেরকে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে পারবে?

"সেই সত্য যা রচিবে তুমি—ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি রামের জনমস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো।

কবির ভাষায় অর্থাৎ যা ঘটে তা সত্য নয়, কবি যা রচনা করে তাই সত্য? অর্থাৎ ইতিহাস সত্যকে বাদ দিয়ে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে যা রচনা করা হবে তাই সত্য হয়ে যাবে আর যা সত্য তা কি হারিয়ে যাবে?

কিন্তু ইতিহাস বড় নির্মম, নিষ্ঠুর, একদিন না একদিন সত্য প্রকাশ পাবেই। আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস কত চাপা দেবে? অনেক সত্য বরং পাকিস্তানের অনেক রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক, সামরিক কর্মকর্তার কাছ থেকেই বেরিয়ে আসছে—কত দিন বন্ধ করে রাখতে পারবে?

কিন্তু এটি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ যে—আওয়ামী লীগ সত্যকে উদ্ঘাটন করেছে। আমাদের দেশের নতুন প্রজন্ম যেন হঠাৎ জেগে উঠেছে, সত্য জেনেছে, জানার আগ্রহ সৃষ্ট হয়েছে আর কি বন্ধ রাখতে পারবে? পারবে না।

কিন্তু এ সত্য প্রকাশের শাস্তি কি নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপি ব্যবস্থা করা?

 (সূত্র: শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-১।। পৃষ্টা: ২৮৫-২৮৫)



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭