প্রকাশ: 16/09/2023
নাম ওমর ফারুক, বয়স তার কেবল ১২ বছর। জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী, বেশিরভাগ মানুষই তাকে বামন হিসেবে চিনেন। তার বয়স বাড়লেও শরীরের গঠন বৃদ্ধি পায়না। দেখতে ৫/৬ বছরের শিশুদের মত। জন্ম নিয়েছে একটি দিন মজুর পরিবারে। বাবা সুজন হাওলাদার পেশায় একজন শ্রমিক। মাতা রহিমা বেগম পেশায় গৃহীনি। প্রতিবন্ধী ফারুকের দুই ভাই এক বোন। ফারুকই সংসারের বড় ছেলে। তার একমাত্র বাবার উপার্জনে টেনেটুনে কোনমতে সংসার চলে । ওমর ফারুকের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামে। ওমর ফারুক এবার ৭ নং উত্তর কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্র।
সে প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে পায়ে হেটে অনেক কষ্ট করে স্কুলে যায়।
আবার স্কুল ছুটি হলে পায়ে হেটেই বাড়ি যেতে হয় তার। অভাবের সংসার তাই গায়ে ভালো কোন
জামাও নেই। ভালো খাবারও জোটে না তার ভাগ্যে। আবার ফারুকের বাবা একদিন কাজ করতে না
পারলে তাদের অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাতে হয়। তবে ফারুকের স্বপ্ন সে লেখা
পড়া শেষে সরকারি চাকুরীজীবি হয়ে তার বাবা মাকে সুখে রাখবে। তার প্রবোল ইচ্ছে রয়েছে
পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু বাবা গরীব হওয়ায় মাঝে মধ্যে পড়ালেখার প্রতি মন
ভেঙ্গে যায় ফারুকের। তারপরও মনের জোরে সে লেখা পড়া করে বড় হওয়ায় আশায় সকল চেষ্টা
অব্যাহত রেখেছে।
জানাগেছে, শিশু ওমর ফারুক জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুটি
পা এবং দুটি হাত তার শরীরে ন্যায় অনেক ছোট। তার স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে নিদারুন
কষ্ট পোহাতে হয়। একজন স্বাভাবিক মানুষের ন্যায় তার পায়ে হেটে স্কুলে যেতে অনেক সময়
লেগে যায়। অনেক সময় পথে বসেই স্কুলে ক্লাশ শেষ হয়ে যায়। একারনে সে লেখাপড়ায় অনেক
পিছিয়ে পড়ছে। ফারুক যে প্রতিবন্ধী হিসেবে ভাতা পায় সে অর্থ দিয়ে কিছুই হয়ে না তার।
তার এখন লেখাপড়া চালানো ও খেয়ে পরে বেচে থাকা কষ্ট সাদ্য।
প্রতিবন্ধী শিশু ওমর ফারুক জানায়, আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে
চাই। আমি স্কুলে যাওয়ার পথে অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। তারপরও আমি লাজ
লজ্জা মাটি চাপা দিয়ে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে চাই। এক সময় সকল কষ্ট ঘুচে যাবে। কারন
লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে সকল হাসি ঠাট্টার জবাব দিতে চাই।ওমর ফারুকে মা রহিমা বেগম
জানান, আমার ছেলে তার নিজ ইচ্ছাই লেখাপড়া করতেছে। আমাদের স্বপ্ন যেন ফারুক পুরন
করতে পারে সেটাই আমার আশা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহআলম জানান, ফারুককে আমরা স্কুলে বসে বেশি বেশি সহযোগীতা করি। কারন আর ১০টা মানুষের মত ফারুক জীবন স্বাভাবিক নয়। আমরা যতটুকু পারি সহযোগীতা করছি। গায়ে তার স্কুল পোষাক ছিলনা আমরা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা মনে করি সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসলে ফারুকের জীবন পালটে যেতে পারে।৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিনা বখতিয়ার জানান, ফারুককে ভাতার কার্ড করে দেয়া হয়েছে দুই বছর আগে। দেখি তাকে আরো সহযোগীতা করা যায় কিনা।এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামাল জানান, ফারুকে সহযোগীতা করা হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭