এডিটর’স মাইন্ড

রাজনীতির জন্য ভয়ঙ্কর ১৭ দিন


প্রকাশ: 17/09/2023


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আজ সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি নিউইয়র্কে গেছেন। আগামী ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এই ১৭ দিন প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকবেন না। আর এই ১৭ দিনই রোডমার্চসহ রাজপথে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারকে অচল করে দিতে চায় বিএনপি। গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই রোডমার্চ তখনই শেষ হবে যখন সরকারের পতন হবে।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আজ থেকে টানা ১৫ দিনের কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। এই ১৫ দিনের কর্মসূচি হবে বিভিন্ন এলাকায় রোডমার্চ এবং পর্যায়ক্রমে এই রোডমার্চ গুলো ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করবে বলেও বিএনপি নেতারা বলছেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশে নেই এই সুযোগটাই বিএনপি নিতে চাইছে।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, শেখ হাসিনা দেশে না থাকলেই আওয়ামী লীগ দুর্বল থাকে, সরকার দুর্বল থাকে। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আর এই সময় আন্দোলনের একটা গতি আনতে চায় বিএনপি। 

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী ১৫ দিন বিএনপি রাজনীতিতে চমক দেখাবে। এই সময় জামায়াতও বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। জামায়াত বিএনপির স্ট্রাইকিং ফোর্স এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অর্থাৎ একদিকে বিএনপি রোডমার্চের কর্মসূচি পালন করবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত রাখবে। অন্যদিকে জামায়াত বিভিন্ন স্থানে নাশকতা করবে। এরকম একটি কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে দেশে একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও বলছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকলে তারা চিন্তাহীন থাকেন, ভার মুক্ত থাকেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী দ্রুত এবং তাৎক্ষণিক সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীকে পাওয়া যায় এবং তিনি এই ধরনের কঠিন এবং জটিল সিদ্ধান্ত সহজেই দিতে পারেন। 

একজন সরকারি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাও বলেছেন, দীর্ঘদিনের রাজনীতির অভিজ্ঞতা এবং দেশ পরিচালনায় দূরদর্শিতার কারণে যেকোনো সংকটে প্রধানমন্ত্রী বিচলিত হন না। বরং ঠান্ডা মাথায় সংকট সমাধানের চেষ্টা করেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকবেন না এবং সময়ের একটা বড় পার্থক্য রয়েছে। এ কারণেই এই সুযোগটি বিএনপি নিতে চাইছে।

বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি তারা একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে সেটি হবে তাদের আন্দোলনের সফলতা। আর এই কারণেই বিএনপি হিসেবে-নিকেশ করে প্রধানমন্ত্রী যখন দেশে নেই তখনই কর্মসূচি দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এখন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা এই মুহূর্তে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আর এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও এটি ডিজিটাল যুগ, সার্বক্ষণিকভাবে তিনি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, নেতাকর্মীদের ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং যেকোনো অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন।
 
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার গণভবনে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও তিনি বিরোধী দলের আন্দোলন ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করার জন্য জনপ্রতিনিধিকে আহ্বান জানিয়েছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশে না থাকলেও সার্বক্ষণিকভাবে তিনি যোগাযোগের মধ্যে থাকবেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতির এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে। আগামী দুই সপ্তাহ অর্থাৎ আগামী ১৫ দিন বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ভয়ঙ্কর সময় হিসেবে সামনে আসতে পারে বলে মনে করছেন কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭