ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনা দেশে না থাকলেই আওয়ামী লীগ যেন অসহায়


প্রকাশ: 17/09/2023


Thumbnail

কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিশেষ করে জি-টুয়েন্টি  সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব কূটনৈতিক সাফল্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাকর্মীরা তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইসব ছবি পোস্ট করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন। বিরোধী দলকে টিকা-টিপ্পনী দিতেও কার্পণ্য করেননি। গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আবার চুপসে যাওয়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে গতকাল থেকে শুরু হওয়া বিএনপির রোডমার্চ এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতির কারণে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক এবং অসহায় বোধ ফুটে উঠেছে। 

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা স্বীকার করেছেন শেখ হাসিনাই তাদের সঞ্জীবনী, শেখ হাসিনাই তাদের চালিকাশক্তি। শেখ হাসিনা আছেন বলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আওয়ামী লীগ শক্তিশালী। আর এ কারণেই তার সামান্য অনুপস্থিতি, সংকটে তার না থাকাটা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিছুটা হলেও আতঙ্ক বোধ করেন, অস্বস্তি বোধ করেন। কোনো রাখ-ঢাক ছাড়াই আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, এতিম এতিম অবস্থা তৈরি হয় আমাদের মধ্যে। 

আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেছেন, আপনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে এর আগের অবস্থা চিন্তা করুন, আওয়ামী লীগ কি ছিল? শেখ হাসিনা বিহীন আওয়ামী লীগ যেন নাবিকবিহীন একটি নৌকা। যা এলোমেলো ভাবে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছে। তার গন্তব্য অচেনা। তবে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী এ রকম মতামতের সঙ্গে একমত নন। তারা বলছেন, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে গেছেন এবং এ রকম রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি গত কিছুদিন ধরেই যাচ্ছেন। গত ১৫ বছরে তিনি একাধিকবার গেছেন। কাজেই এটি নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। 

তবে আওয়ামী লীগের অন্য একজন নেতা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্রিকস সফর ছিল ৪ দিনের। আর দিল্লিতে জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ৩ দিন দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। এবার তিনি ১৭ দিন দেশে থাকবেন না। আর এমন একটি সময় প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকবেন না যখন বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেছে। তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিমায় একজন সদস্য সদস্য বলছেন, বিএনপির এরকম চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা, রোডমার্চ কিংবা ঘরে ফিরে না যাওয়ার ঘোষণা নতুন নয়। এর আগেও বিএনপির পক্ষ থেকে এই ধরনের একাধিকবার চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ফলাফল কি হয়েছিল জাতি জানে। এবারও বিএনপি তেমন কিছু করতে পারবে না। তবে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা মনে করেন, এবার শুধু বিএনপি না, বিএনপি একটি উপলক্ষ মাত্র। দেশি বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর এই সমস্ত ষড়যন্ত্র গুলো পল্লবিত হয় যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে অবস্থান করেন।
 
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, এটি হলো বাস্তবতা। আওয়ামী লীগের আর কোনো নেতা দায়িত্বশীল নন। আর কোনো নেতা দায় দায়িত্ব নেন না এবং কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া সবকিছুর জন্য তারা এখন শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করেন। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন শেখ হাসিনা ছাড়া অসহায় এবং অনেকটাই এতিম। আর এ কারণেই তার ১৫ দিনের অনুপস্থিতি এবং এই সময় বিএনপির আন্দোলন আওয়ামী লীগের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা হবে। তবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন, শেখ হাসিনা বিদেশে থাকলেও সার্বক্ষণিক ভাবে দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং বিরোধী আন্দোলন মোকাবিলার জন্য দলকে এবং নেতাদেরকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও দেবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭