ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজনীতির বাইরে যে চাপগুলো বাড়ছে সরকারের


প্রকাশ: 17/09/2023


Thumbnail

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক চাপ তো সরকারের আছেই। বিএনপি এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। তার সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য কয়েকটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু এই রাজনৈতিক চাপ এখন পর্যন্ত সরকারকে কোণঠাসা করতে পারেনি। সরকার এই চাপে তেমন নতজানু নয় বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বরং রাজনীতির বাইরে অন্যান্য চাপগুলো নিয়েই সরকারের মধ্যে নানা রকম আলোচনা হচ্ছে এবং এই চাপগুলো কিভাবে মোকাবিলা করা যাবে নির্বাচনের আগে সেটি এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে। 

রাজনীতির বাইরে যে চাপগুলো সরকারের জন্য নির্বাচনের আগে বড় হয়ে উঠেছে তার মধ্যে রয়েছে; 

১. অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো না। ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এখন তা কমে এসে ২১.৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। নির্বাচনের আগে ঋণ পরিশোধ করতে হবে ১২ বিলিয়ন ডলার। যেভাবে ডলার খরচ হচ্ছে সেভাবে ডলার আসছে না। এটি সরকারের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। ব্যাংকগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। ঋণ খেলাপি বেড়ে গেছে। বিভিন্ন ব্যাংকে তারল্য সংকটের কথা আলোচিত হচ্ছে। অর্থনীতির এই বিবর্ণ চেহারা নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

২. দুই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি: সরকারের জন্য নির্বাচনের আগে সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি। ইতিমধ্যে ডিম, আলু সহ কয়েকটি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সেই নির্ধারিত মূল্যে কোনো পণ্যেই বিক্রি হচ্ছে না। পণ্যের বাজারে একটি সিন্ডিকেটের দাপট প্রবল হয়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরকম একটি বাস্তবতায় দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিকে সহনীয় মাত্রায় না নিয়ে আসতে পারলে সামনের দিন গুলোতে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
 
৩. মানবাধিকার ইস্যু: নির্বাচনের আগে মানবাধিকার ইস্যুটি সরকারের কাছে অত্যন্ত বড় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং আদিলুর রহমান খানের বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব বাংলাদেশের ব্যাপারে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ করছে। এর পাল্টা হিসেবে প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দূতাবাস গুলো অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। মানবাধিকার ইস্যু সরকারের জন্য নির্বাচনের আগে একটি বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

৪. সাইবার সিকিউরিটি আইন: সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার সিকিউরিটি আইন তৈরি করেছে। এই আইনটিও এখন বিভিন্ন মহলের কাছে সমালোচিত হচ্ছে। অনেকে বলছেন যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বরং দুটি আইন একই রকম। এরকম পরিস্থিতিতে এই আইন সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনের মাঠে ব্যবহৃত হতে পারে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন। 

৫. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন যে নির্বাচনের আগে  এবারের দুর্গাপুজোয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা হতে পারে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। আর এ কারণেই এটি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। 

এইসব চ্যালেঞ্জ গুলোকে সরকারের নির্বাচনের মোকাবিলা করতে হবে। এগুলো রাজনীতির সরাসরি বিষয় না হলেও রাজনীতিকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও অনেকে মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭