প্রকাশ: 18/09/2023
খুচরা বাজারে
ছয়টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দর কেউ মানছে না। বাজারে অভিযান চালানোর পরও
নতুন দর কার্যকর করানো যাচ্ছে না। একেক বাজারে বা একেক এলাকায় নানা দামে এসব পণ্য বিক্রি
হতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার
(১৪ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে
১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয়, যা কার্যকর হওয়ার কথা গতকাল থেকে। তবে এখনো নতুন দামের
তেল বাজারে আসেনি। অবশ্য ভোজ্যতেল বেশির ভাগ সময় নির্ধারিত দরে বিক্রি হয়। কিন্তু চিনিতে
দর মানা হয় না।
মৌসুমের শুরুতে
আলু প্রতি কেজি ১৫ টাকা এবং শেষ দিকে নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
এবার সেপ্টেম্বরেই আলুর কেজি ৫৫ টাকায় উঠে যায়। এমন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি
আলুর দাম ঠিক করে দেওয়া হয় ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে।
প্রতি কেজি
খোলা চিনির নির্ধারিত দর ১৩০ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে।
প্রতি হালি
ডিমের দর নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ টাকা, যা বাজারদরের চেয়ে সামান্য কম। সেই দরও কার্যকর
হয়নি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তালিকা বলছে, প্রতি হালি
ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা দরে।
দেশি পেঁয়াজের
দাম কিছুটা কমেছে। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা
কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা নির্ধারিত দরের চেয়ে ২১ থেকে ২৫ টাকা বেশি।
খুচরা ব্যাসায়ীদের
অসন্তোষ
ব্যবসায়ীদের
দাবি, সরকার অযাচিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছে। তাদের বেঁধে দেওয়া মূল্যে এই তিনটি
ভোগ্যপণ্য কেনাই যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনে কমে বিক্রি করা
সম্ভব নয়।
মোহাম্মদপুর
টাউন হল কাঁচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আনোয়ার মিয়া বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘আমাদের
তো কিছু করার নেই। আজ দাম কমার কথা। কিন্তু সকালে এ দামে তো পেঁয়াজ পাইনি। সরকার দাম
নির্ধারণ করে দিয়েছে কিন্তু বাস্তবে তো পাচ্ছি না। তাই যে দামে কিনছি, সেটা থেকে তো
লাভ করেই বিক্রি করতে হবে।’
নিলীমা এন্টারপ্রাইজের
কর্ণধার আরিফ হোসেন বলেন,’সরকার যেই দাম ঠিক করে দিয়েছে সেটা মোটেও খুচরা ব্যবসায়ীদের
কথা মাথায় রেখে করা হয় নাই। আমি চেষ্টা করছি ওই দামেইও বিক্রি করতে, কিন্তু এতে আমার
লস হচ্ছে।‘
কি বলছে তদারকি
সংস্থা?
সরকারের সংশ্লিষ্ট
তদারকি সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, নির্দেশনা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কার্যকর করা কঠিন।
কারণ, খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে নতুন দরের পণ্য পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। তাই তারা এখন
উৎপাদন ও মজুত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং এসব পর্যায়ে নির্ধারিত দাম কার্যকরের বিষয়ে
বেশি মনোযোগী। এসব স্তরে দাম স্বাভাবিক হলে খুচরায় নির্ধারিত দর কার্যকর হবে বলে মনে
করেন তারা।
শুধু ভোক্তা
অধিদপ্তরের একার পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় জানিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে
ভোক্তা অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাই বাজারে
তদারকি করবে। কিন্তু ভোক্তা অধিদপ্তর ছাড়া কেউই বাজারে নামেনি। এত অল্পসংখ্যক জনবল
দিয়ে সারাদেশে ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করা অনেক কঠিন। তার পরও চেষ্টা চলছে।
সারাদেশে অভিযান,
জরিমানা
ভোক্তা অধিদপ্তর
জানিয়েছে, পণ্য তিনটির নির্ধারিত দর কার্যকর করতে গতকাল সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করেছে
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ৪১টি টিম। তারা ৫৩টি বাজারে অভিযানের মাধ্যমে
৯০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মোট ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুর
শাহ আলী মার্কেট, মিরপুর-১, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী ও কুতুবখালী
বাজারে অভিযান চালিয়ে আটটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭