ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্বাচন দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ ভারতের


প্রকাশ: 18/09/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানামুখী তৎপরতা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগেই নানা রকম সতর্কবার্তা দিয়েছে। নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে চাইছে। অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি ভিন্ন অবস্থান জানিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশকে বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে এবং নির্বাচনের আগেই কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থান জানানো হয়েছে। এই অবস্থানের পাঁচটি দিক রয়েছে বলে জানা গেছে। 

১. সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন: প্রথমত ভারত মনে করে যে একটি দেশের নির্বাচন, সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সংবিধানে যেভাবে আছে, সেভাবেই নির্বাচন হওয়া উচিত। কাজেই কোনো দেশের নির্বাচনকে সংবিধানের বাইরে নিয়ে যাওয়া বা বাধাগ্রস্ত করাটা কারো ঠিক হবে না।  

২. নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ: নির্বাচনকে দেখতে হবে সেটি সুষ্ঠ, অবাধ এবং নিরপেক্ষ হচ্ছে কিনা। নির্বাচন হওয়ার আগেই নির্বাচন নিয়ে এই ধরনের সন্দেহ কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ ভোট ছাড়া বোঝার উপায় নেই যে নির্বাচন কতটুকু নিরপেক্ষ হয়েছে, জনগণ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে কিনা এবং এই ধরনের নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন কতটা ঘটেছে। অর্থাৎ নির্বাচনের আগে একটি নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বা অংশগ্রহণমূলক হবে না- এমন অনুমিত ধারণা কখনোই বস্তুনিষ্ট হতে পারে না বলে ভারত মনে করে। আর এই বার্তাটিও তারা দিয়েছে। 

৩. নির্বাচনের পর আলোচনা এবং সমঝোতার পথ: ভারত মনে করে, নির্বাচন তার সাংবিধানিক নিয়মে হয়ে যাওয়া উচিত এবং এই নির্বাচনে যে সমস্ত দল ইচ্ছা, তারা অংশগ্রহণ করবে; যে সমস্ত দল ইচ্ছা নেই, তারা অংশগ্রহণ করবে না। কারণ একটি গণতান্ত্রিক দেশে একটি দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা- তার গণতান্ত্রিক অধিকার। ইচ্ছে করলে একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, ইচ্ছা না করলে ওই রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাও করতে পারে।

 ৪. নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন: একটি নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে কিনা- তা দেখতে হবে। দেখতে হবে, ওই নির্বাচনে কত শতাংশ ভোটার ভোট দিলো। যদি দেখা যায় যে পঞ্চাশ শতাংশের কাছাকাছি বা তার বেশি ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে, তাহলে ধরে নিতে হবে এই নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু যদি তার কম হয়, তাহলে মনে করতে হবে এই নির্বাচনটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি।

৫. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নিরপেক্ষতা: নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নিরপেক্ষ অবস্থান ইত্যাদি বোঝা যাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। নির্বাচনের তফসিলের পর রাজনৈতিক দলগুলো যখন প্রচারণায় নামবে, তখনই দেখা যাবে নির্বাচন কমিশন কতটুকু নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বা অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন কিনা। সেটির আগে আগাম বলা উপায় নেই যে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আর সকল দলকে নির্বাচনে আসতেই হবে- এরকম কোনো শর্ত একটি ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক দল বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। কারণ নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব পালন করে না। বরং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার দায়িত্ব পালন করে।

এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রস্তাবনাগুলো ভারত ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে দিয়েছে এবং এই নীতিমালার ভিত্তিতেই বাংলাদেশের নির্বাচনকে দেখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচন আগে দেখুন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন- এই বার্তাটি ভারত পৌঁছে দিচ্ছে সকল কূটনৈতিকের কাছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭