ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূল আতঙ্কে বিএনপির দুইশো নেতা নজরদারিতে


প্রকাশ: 20/09/2023


Thumbnail

তৃণমূল বিএনপির নতুন জাতীয় নির্বাহী কমিটি গতকাল ঘোষণা করা হয়েছে। শমসের মবিন চৌধুরীকে চেয়ারপারসন এবং তৈমুর আলম খন্দকারকে মহাসচিব করে আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটির মূল লক্ষ্য আগামী নির্বাচন এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিএনপির নেতারাও এই বক্তব্যকে অস্বীকার করছেন না। তারা মনে করছেন, এটি বিএনপিকে বিভক্ত করার সর্বশেষ চক্রান্ত। বিএনপিকে বাদ দিয়ে সরকার একটি নির্বাচন করতে চাইছে এবং সেই নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপিকে একটি বি টিম হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। 

তৃণমূল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, বিএনপির আরও বহু নেতা তাদের দলে যোগদান করবে। এই কারণেই তারা পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নির্বাহী কমিটি এখন পর্যন্ত ঘোষণা করেনি। তৃণমূল বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মধ্যে যারা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক, এলাকায় যাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং নির্বাচনের মাঠে যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে টার্গেট করা হয়েছে। সারাদেশে এরকম দুই শতাধিক বিএনপির নেতা তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের অপেক্ষায় রয়েছে এমন দাবি করা হচ্ছে তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। এই রকম একটি বাস্তবতায় বিএনপির নেতারা এখন নজরদারিতে রয়েছেন। যারা ‘মীরজাফর হতে পারেন’ এরকম নেতাদেরকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিএনপির অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং তারা ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। এই সমস্ত নেতাদেরকেই নজরদারিতে রাখা শুরু হয়েছে। 

ইতিমধ্যে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তার এলাকায় এরকম সম্ভাব্য মীরজাফরকে নজরদারিতে রাখার জন্য। তিনি কোথায় চাচ্ছেন, কার সাথে কথা বলছেন, কি করছেন ইত্যাদি খোঁজখবর নিয়মিত রাখার  জন্য এবং এ ব্যাপারে যেকোনো তথ্য কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য। তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, যারা এখন তৃণমূলের বিএনপিতে যাবেন তারা দল ছুট এবং উদ্বাস্তু হিসেবেই চিহ্নিত হবেন। তাদের রাজনীতিতে অস্তিত্ব থাকবে না বরং তারা বিশ্বাসঘাতক হিসেবেই রাজনীতিতে পরিচিতি পাবেন। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা প্রকাশ্যে যদিও বলছেন, তৃণমূল বিএনপি কোনোদিনই বিএনপির বিকল্প হতে পারে না বা এই ধরনের সংগঠনের ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো না। কিন্তু তারপরও বিএনপির একটি অংশের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। বিশেষ করে গত পনেরো বছরে যেটি হয়নি সেটি বিএনপিতে হতে পারে অর্থাৎ দল ভাঙতে পারে এমন শঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপির নেতারা প্রকাশ্যে তৃণমূল বিএনপিকে পাত্তা দিতে নারাজ। তারা বলছেন, তৃণমূল বিএনপি কোনদিনই বিএনপির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, আগামী নির্বাচন সরকার বিএনপিকে ছাড়া করতে চায়। আবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার একটি চাপ পশ্চিমা দেশগুলোর রয়েছে। আর এই কারণেই তৃণমূল বিএনপির নতুন ফ্যাক্টরি খোলা হয়েছে। যেখানে একান্ত অনুগত একটি বিরোধী দল বানানো হবে। যে সমস্ত লোকরা তৃণমূল বিএনপিতে এখন পর্যন্ত যোগ দিয়েছেন তারা সকলেই সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। 

শমসের মবিন চৌধুরীর সঙ্গে সরকারের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আগে থেকেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নির্বাচন করেছেন। যারা এরকম বিশ্বাসঘাতকতা করবেন তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন বলে বিএনপির নেতারা মনে করছেন। তবে প্রকাশ্যে বিএনবি যাই বলুক না কেন যে সমস্ত নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর ছিলেন তারা এখন ছাত্রদল, যুবদল, এবং স্বেচ্ছাসেবক দল পরিবেষ্টিত অবস্থায় থাকছেন। এমনকি তাদের বাড়ির সামনেও বিএনপির কর্মীদের পাহারা বসানো হয়েছে। বিএনপির মধ্যে তৃণমূল বিএনপির আতঙ্ক বেশ ভালো ভাবেই ছড়িয়ে পড়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭