ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের পাঁচ আপদ


প্রকাশ: 21/09/2023


Thumbnail

আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন হবে কি হবে না- এ নিয়ে রাজনীতিতে চলছে অনিশ্চয়তা, টানাপোড়েন। এর মধ্যেও আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। যে কোনো মূল্যে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে নির্বাচন করতে চায় টানা পনেরো বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই যাত্রাপথে কিছু আপদ তৈরী হয়েছে। যাদের কারণে আওয়ামী লীগ তার লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের যাত্রাপথ দুর্গম হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

এই সমস্ত ব্যক্তিদের কারণে আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, দল লক্ষ্যচ্যুত হচ্ছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন সরকার সমালোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা দলের জন্য পাঁচটি আপদকে চিহ্নিত করেছেন। এই আপদগুলোর মধ্যে রয়েছে - 

১. অযোগ্য মন্ত্রী: আওয়ামী লীগের আট থেকে দশজন মন্ত্রী অযোগ্য এবং দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এই সমস্ত মন্ত্রীদের কারণে দেশে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, ব্যাংকগুলো খালি হয়েছে। পণ্যের বাজারে অস্থিরতা এবং সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়েছে, ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে কিছু কিছু দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্ত্রী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারণে। আর এই অযোগ্য মন্ত্রীরা আওয়ামী লীগের জন্য এখন সবচেয়ে বড় আপদে পরিণত হয়েছেন বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

২. হাইব্রিড এবং ভুঁইফোড় নেতাদের দাপট: আওয়ামী লীগে হঠাৎ বনে যাওয়া কিছু নেতা এখন আওয়ামী লীগের জন্য দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়েছেন। এই মুহূর্তে যেমন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও দেশে নেই। আর এসময় কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা পোড় খাওয়া, ত্যাগী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, তারা দিক নির্দেশনাহীন। বরং হাইব্রিড নেতারাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টেলিভিশন টকশোতে এবং বিভিন্ন দূতাবাসে কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এই সমস্ত হঠাৎ বনে যাওয়া নেতারা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় আপদের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন। 

৩. প্রশাসনে অতি উৎসাহ: প্রশাসনের অতি উৎসাহী নব্য আওয়ামী লীগাররাও আওয়ামী লীগের জন্য একটা আপদ হয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জেলা প্রশাসক এবং পুলিশের ওসিরা ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জেতানোর’ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আওয়ামী লীগের জন্য হিতে বিপরীত হয়েছে। শুধু মাঠ প্রশাসন নয়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তিরা এখন আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগে পরিণত হয়েছে। এরা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি শুধু নষ্ট করছেন না, বরং আওয়ামী লীগকে ঝুঁকিতে ফেলছেন বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

৪. তৃণমূলে অনুপ্রবেশকারী: তৃণমূলে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারীদের দাপট এখন বেড়েছে। তৃণমূলের এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা নির্বাচনের আগে নানা রকম মতলবি কর্মকান্ডে দলকে বিতর্কিত করছে। টেন্ডারবাদী, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে তারা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে, যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। 

৫. দলে এবং সরকারে ব্যবসায়ীদের দাপট: কিছু কিছু ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক বনে গেছেন। দলে এবং সরকারে তাঁরা প্রভাব বিস্তার করছেন, দাপট দেখাচ্ছেন। আর এই দাপটের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরা মনে করেন, পাঁচ আপদ থেকে আওয়ামী লীগকে মুক্তি পেতে হবে। তাহলেই আগামী নির্বাচনের যাত্রাপথ মসৃণ হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭