ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক জিয়া কি দেশে আসছে?


প্রকাশ: 22/09/2023


Thumbnail

গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি পোস্ট দিচ্ছে। ‘লিডার আসছে’—এই শিরোনামে পোস্ট বিএনপি এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে।

বিএনপির একাধিক নেতাকে এই পোস্টের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো তারা রহস্যময় উত্তর দিয়েছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলছেন, তারেক জিয়ার দেশে আসার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিকল্পনাটি বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছে বলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন। 

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। আজ সকালে তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে আবার সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার লিভারে পানি জমে ছিল, পানি বের করতে হয়েছে এবং তার হিমোগ্লোবিন ৮ এর নিচে। এরকম পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে চিকিৎসকরা বলছেন। যদিও গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। 

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে বা তার কোনো চূড়ান্ত পরিণতি ঘটলে বিএনপি এক তান্ডবের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই তাণ্ডবের মহাপরিকল্পনার একটি অংশ আছে তারেক জিয়ার বাংলাদেশে আসা এবং বর্তমান সরকার বিরোধী এক দফা আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া। তারেক জিয়া নিজেও এধরনের বার্তা বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে দিয়েছেন। 

মায়ের শেষ পরিণতি হলে বাংলাদেশে আসলে জনগনের মধ্যে একটা আবেগ কাজ করবে, সাধারণ মানুষ তার এই আসাটাকে ইতিবাচকভাবে নেবে—এমনটি মনে করছেন বিএনপির নেতারা। তাছাড়া এরকম ঘটনা ঘটলে তারেক জিয়া যদি দেশে আসে তাহলে বিমানবন্দরে তাকে আটক করাটাও কঠিন হতে পারে বলে বিএনপির নেতারা হিসেব কষে দেখছেন। এটি তার জন্য দেশে আসার সুবর্ণ সুযোগ বলে তারা মনে করছেন। 

উল্লেখ্য, একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলা সহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত তারেক জিয়া। একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক জিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এখন এই দণ্ডিত আসামী যদি দেশে আসেন তাহলে তাকে অবশ্যই আগে আত্মসমর্পণ করতে হবে, জেলে যেতে হবে। তারপর তার জামিনের জন্য তাকে আবেদন করতে হবে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু বিএনপির নেতারা এটি করতে চান না। তারা জানেন যে, যে মামলাগুলো হয়েছে এবং যে রায় দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে বাঁচার পথ নেই বললেই চলে। এরকম পরিস্থিতিতে একটা ঘটনা ঘটিয়ে তারেক জিয়াকে দেশে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সেরকম একটি বড় ঘটনা ঘটতে পারে খালেদা জিয়ার জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি। 

তবে বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, তারেক জিয়া এখন লন্ডনে যে বিলাসবহুল আরাম-আয়েশ জীবন যাপন করছেন সেখান থেকে তিনি কোনো অবস্থাতেই দেশে ফিরবেন না। তারেক জিয়া শুধু নিজেকেই ভালোবাসেন, তার মা বা দলের জন্য তার কোনো টান আদৌ আছে কিনা তা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই সন্দেহ রয়েছে। কারণ তা যদি থাকতো তাহলে মায়ের এই অবস্থায় তিনি না আসুন, তার স্ত্রী কিংবা তার কন্যাকে পাঠাতে পারতেন। কিন্তু বেগম জিয়ার এই দীর্ঘ পাঁচ বছরের কঠিন সময়ে তারেক জিয়া এবং তার স্ত্রী কন্যারা একবারও আসেননি। তাই এবারও তারেক জিয়া দেশে আসছে বলে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন ছড়ানো হচ্ছে তার স্রেফ একটা প্রতারণা বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন, তারা নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। আর এ কারণেই ‘লিডার আসছে’ বলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নতুন করে প্রতারণার ফাঁদ ফাদা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭