ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে বাদ দিয়ে উৎসবমুখর নির্বাচনের রোড ম্যাপ চূড়ান্ত


প্রকাশ: 22/09/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে, সকল দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা সেগুলো এখন রাজনীতিতে প্রধান আলোচনার বিষয়। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকার আপাতত বিএনপিকে বাদ দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক উৎসবমুখর নির্বাচনের রোড ম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। এই রোড ম্যাপ অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই রোড ম্যাপের প্রধান লক্ষ্য হলো নির্বাচনে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এই জন্য আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আর এই রোড ম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ যে কৌশল গ্রহণ করেছে তা হলো-

১. সকল রাজনৈতিক দল স্ব স্ব অবস্থান থেকে অংশগ্রহণ করবে: এবারের নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ না করে তাহলে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তারা স্ব স্ব অবস্থান থেকে নির্বাচন করবে। এই নির্বাচন হবে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ। 

২. প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে: এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের ভূমিকা থাকবে নিরপেক্ষ এবং প্রশাসন যেন কোনোভাবেই নির্বাচনের ওপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ না করে সেটি নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এই নির্বাচনের ব্যাপারে যেন কোনো রকম অভিযোগ না ওঠে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। 

৩. ভালো প্রার্থী, উৎসবমুখর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ তার প্রাক নির্বাচনী জরিপ গুলোতে দেখেছে যে, যদি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভালো প্রার্থী, আলোচিত প্রার্থী এবং পরিছন্ন ইমেজের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে পারে তাহলে সেক্ষেত্রে ভোটাররা নির্বাচনমুখী হবে। তারা ভোট প্রদানে আগ্রহী হবেন। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এবার প্রার্থী বাছাই চমক থাকবে। এমন সব প্রার্থী দেওয়া হবে যাদেরকে মানুষ পছন্দ করে এবং যাদের কারণে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত হবে।

৪. বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা: যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে তাহলেই বিএনপি ফাঁদে পড়বে এমনটি মনে করছে আওয়ামী লীগ। কারণ সেক্ষেত্রে নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের ভিসা নীতির আওতায় আসা উচিত এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। ফলে যখনই বিএনপি নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিবে তখনই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করবে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন। এর ফলে এই নির্বাচন বর্জনের আন্দোলন খুব বেশি প্রশয় পাবে না। এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের কোন পরিস্থিতিও তৈরি হবে না বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

৫. আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা: সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের যে রোড ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে তাতে অন্যতম প্রধান ইস্যু হলো আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা। আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনই হবে আগামী নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে এই ক্ষেত্রে সরকার এবং আওয়ামী লীগ আশাবাদী। তারা মনে করছে, এধরনের নির্বাচনকে ভারত স্বীকৃতি দেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেকগুলো দেশ এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে। কারণ যদি ভোটার উপস্থিতি ৬০ শতাংশের বেশি বা ৬০ শতাংশের কাছাকাছিও থাকে তাহলে সেই নির্বাচনকে বৈধতা দিতে আপত্তি করার কোনো কারণ থাকবে না বলেই তারা মনে করছেন।

আর এরকম একটা পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে কোনো আপত্তি বা হতাশা প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে এটা মেনে নেবে। কারণ আন্তর্জাতিক ভাবে এটি স্বীকৃত যে, একটি দেশের নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি ভোট পড়ে তাহলে সেই নির্বাচনকে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করতে হবে। এরকম একটি রোড ম্যাপ অনুযায়ী বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চায় সরকার। কারণ বিএনপি নির্বাচনে এলেই নানামুখী সংকট তৈরি হতে পারে এবং এই সংকটগুলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এমনকি নির্বাচন বানচালও করে ফেলতে পারে এই সমস্ত পদক্ষেপ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭