ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারকে দুর্বল করাই ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রধান লক্ষ্য


প্রকাশ: 23/09/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২২ সেপ্টেম্বর যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে তার প্রধান লক্ষ্য হলো সরকারকে দুর্বল করে দেওয়া। সরকার যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশ পরামর্শ অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে সেটির জন্য চাপ প্রয়োগের এটি একটি কৌশল—এমনটি মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। লক্ষণীয় ব্যাপার যে, গত পনেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনা করছে। পনেরো বছরে আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করেছে। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সমর্থন সরকারের জন্য বড় একটি প্লাস পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর এটিকে টার্গেট করেই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হয়েছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞায় লক্ষণীয় ব্যাপার হলো যে, আওয়ামী লীগকে মিত্রহীন করার কৌশল নেওয়া হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও এবং সন্ত্রাস সহিংসতা মোকাবিলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা বড় দায়িত্ব হলো জনগণের যানমাল হেফাজত করা। এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় তাহলে জ্বালাও-পোড়াও এবং সহিংসতা বাড়তে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, কিছুদিন আগে বিএনপি ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে যে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল সেই অবস্থান কর্মসূচিতে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা না দিতো তাহলে পরে জনজীবন বিপর্যস্ত হতো। 

বিরোধী দলের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। তারা আগামী অক্টোবরের মধ্যে ঢাকাকে অবরুদ্ধ করতে চায়। ঢাকাকে অচল করে সরকারের পতন ঘটাতে চায়। প্রশ্ন উঠেছে বিরোধী দলের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই কি ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল? যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে—এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি ওসিরা পর্যন্ত ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন। এর ফলে এতে মাঠে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করতে না পারে সেই বার্তাটি দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বিরোধী দল তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ পাবে। অন্যদিকে প্রশাসন গত পনেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপির  প্রশ্ন তুলেছে। 

নির্বাচনে মাঠ প্রশাসন একটি বড় ভূমিকা পালন করে। কয়েকজন জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত উৎসাহী হয়ে আওয়ামী লীগকে আবার নির্বাচনে জয়ী করার কথা বলেছেন। এই সমস্ত অতি উৎসাহী প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ অবস্থান নেয় সেই জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, এই সমস্ত চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে আসলে বাংলাদেশের নির্বাচনকে বন্ধ করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর সে কারণেই এই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি আওয়ামী লীগকে একা করা যায় তাহলে পরে আগামী নির্বাচন বানচাল করা সহজ হবে। লক্ষণীয় ব্যাপার যে, ভিসা নীতিতে যে বিরোধী দলের কথা বলা হচ্ছে তারা সবাই জাতীয় পার্টির এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তাহলে এই ভিসা নীতি কি আসলে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য কিংবা আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার জন্য। আরও সহজ ভাবে বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী যেটা বিভিন্ন সময় বলেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় না আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক সেটা বাস্তবায়নের জন্যই কি এই ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭