ইনসাইড থট

“আমাদের আদেশ মান, নইলে ক্ষমতা ছাড়” এই নাটকটি অনেক আগেই শুরু হয়েছে!


প্রকাশ: 24/09/2023


Thumbnail

পটভূমি

সিএনএন এর সাংবাদিক ট্যাপার, জন বোল্টনকে জিজ্ঞাসা করেছিল, "কোন দেশে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করার জন্য একজনকে কি মেধাবী হতে হবে না?" বোল্টন উত্তর দিয়েছিল: "আমি এমন একজন যে ভিন্ন দেশে, এখানে নয়, অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছি। তাই আমি বলতে পারি অভ্যুত্থান/শাসন ​​পরিবর্তনের জন্য অনেক পরিকল্পনা আর কাজ করতে হয়”।

সুতরাং এটি কেবল কথার কথা বা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, যাকে তারা পছন্দ করে না বা যারা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস করে, তার বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করে শাসন পরিবর্তন করার অভিজ্ঞতা আর ক্ষমতা তাদের রয়েছে। আসুন কিছু অতীত এবং সাম্প্রতিক শাসন পরিবর্তন এবং অভ্যুত্থান সম্পর্কে কথা বলি।

 

ইরান:

ক্ষমতায় বসার পর নির্বাচিত ইরানের প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেঘের প্রথম কাজগুলির মধ্যে একটি ছিল নিজস্ব গ্যাস এবং জ্বালানী থেকে উপকৃত হতে অ্যাংলো-ইরানীয় তেল কোম্পানিকে জাতীয়করণ করা (যা পরে BP হয়ে ওঠে)। এই কাজটি অবিলম্বে যুক্তরাজ্যের সাথে তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি সংকট তৈরি করে। MI6 এবং CIA একত্রে ১৯৫৩ সালে ইরানের পেট্রোলিয়াম সম্পদের পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নকে ইরানের তেলের প্রতিযোগিতা থেকে বিরত রাখতে ইরানের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার জন্য একটি সমন্বিত বিদ্রোহ এবং অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করে। কিছু ইরানী আলেম পশ্চিমা গুপ্তচর সংস্থাকে সহযোগিতা করেছিল কারণ তারা মোসাদ্দেগের ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল। ২০০০ সালে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ জেমস রাইজেন উইলবার অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী গোপন সিআইএ সংস্করণটি হাতে পান। তিনি এর বিষয়বস্তুগুলিকে সংক্ষিপ্ত করে প্রকাশ করেন যার মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল: “আগস্টের শুরুতে, সিআইএ তার চাপ বাড়ায়। মিথ্যা কমিউনিস্ট নেতার ভান করে সিআইএর ইরানি কর্মীরা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কমিউনিস্ট-বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলার জন্য মুসলিম নেতাদের এই বলে হুমকি দেয় "মোসাদেঘের বিরোধিতা করলে তাদের বর্বর শাস্তি দেওয়া হবে”। এছাড়া, গোপন ইতিহাস আরো বর্ননা করে - “কমিউনিস্ট বলে পরিচয় দিয়ে সিআইএর দেশী এজেন্টরা অন্তত একজন বিশিষ্ট মুসলিমের বাড়িতে বোমা ফোটায়। এই হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা তা বলা যায় না। সিআইএ বিভিন্ন ভাবে তার নেতিবাচক প্রচার প্রচারণা জোরদার করে। একজন শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের মালিককে প্রায় $৪৫,০০০ এর ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়া হয়, "এই বিশ্বাসে যে তার সংবাদপত্র জনমত এবং আন্দোলন তৈরি করতে সিআইএর মিথ্যা বর্ণনা প্রতিফলিত করে সংবাদ এবং নিবন্ধ প্রকাশ করবে।” মোসাদ্দেগকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাদের পুতুল শাহকে বসানো হয়।

 

মিশর:

ইউসি বার্কলে ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং প্রোগ্রাম দ্বারা প্রাপ্ত নথিগুলিতে দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে গণতন্ত্রকে উন্নীত করার একটি প্রোগ্রামে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট অর্থায়ন করে। ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালে একটি জনপ্রিয় অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারককে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এই প্রোগ্রামটি সক্রিয়ভাবে নির্বাচিত সরকার বিরধী কর্মী এবং রাজনীতিবিদদের সমর্থন করে মিশরে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কয়েক ডজন নথির পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে ওয়াশিংটন নিঃশব্দে মিশরের সিনিয়র বিরোধী ব্যক্তিদের অর্থায়ন করেছে যারা দেশটির বর্তমান ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুরসির পতনের আহ্বান জানিয়েছিল। বিরোধী কর্মসূচীর জন্য অর্থায়ন করা কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন একজন নির্বাসিত মিশরীয় পুলিশ কর্মকর্তা যিনি মুরসি সরকারকে সহিংসভাবে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছিল; ছিল একজন ইসলামবিরোধী রাজনীতিবিদ যিনি মসজিদ বন্ধ করার এবং প্রচারকদের জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন আর সেইসাথে ছিল বিরোধী রাজনীতিবিদদের একটি দল যারা মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য চাপ দিয়েছিল। তারপর দেশের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত দল আর নেতাকে, সামরিক বাহিনি ক্ষমতাচুত করে। গণতন্ত্রকে গলাটিপে মারা হয়।

 

ইউক্রেন:

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের উপদেষ্টা ল্যারি ডায়মন্ডের সফল প্রযোজনাগুলির মধ্যে একটি হল "আমি একজন ইউক্রেনীয়" ভিডিও যা ২০১৩-১৪ সঙ্কটের সময় ভাইরাল হয়েছিল। এটি তরুণ ইউক্রেনীয়দের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসার চেতনা দেয়। ইউএস ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (দুষ্টু লোকেরা এটিকে ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর রেজিম চেঞ্জ নামেও পরিচিত করে) দ্বারা অর্থায়নে একটি প্রযোজনা সংস্থা ভিডিও টি তৈরি করে।

ইউক্রেনে ফেব্রুয়ারী ২০১৪ সালের বিদ্রোহের মূল মার্কিন খেলোয়াড় ছিলেন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। ফাঁস হওয়া টেপগুলি দেখে এটা এখন স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এবং ইউক্রেনের অভ্যুত্থানকে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ হিসাবে চিত্রিত করার জন্য পশ্চিমা মিডিয়াগুলিকে কাজে লাগিয়েছে। তারপরের ঘটনা সবার জানা।


এখন বাংলাদেশে উদ্ঘাটিত ঘটনা, চলমান নাটকের প্রতিটি অধ্যায় সম্পর্কে কথা বলা যাক:

প্রথম অধ্যায়, একটি নতুন এজেন্ডা নিয়ে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে আসেন। আর তা হল বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু নির্বাচন অন্য কথায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার কথা বলে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে বাংলাদেশ চীনের ওপর নির্ভরশীল না হয় আর যাতে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করা। তদনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এবং প্রভাবের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে নুতন রাষ্ট্রদূত কূটনৈতিক নিয়ম আর শালীনতার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের ভাইসরয়ের মতো কাজ করতে শুরু করে।

পরবর্তীতে র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই র‌্যাব প্রতিষ্ঠানটি বিএনপি সরকার তৈরি করে এবং তখনকার র‌্যাডের একজন প্রধান, একটি প্রেস ব্রিফিংএ ক্রস ফায়ার এবং বিচারবিহীন হত্যাকে ন্যায়সঙ্গত বলে দাবী করেছিল। কিন্তু সেসময় আশ্চর্যজনকভাবে তার উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

এরপর আসে ভিসা প্রত্যাহারের নীতি। যুক্তরাষ্ট্র জানে বাংলাদেশের অনেক ধনী বিজনেস টাইকুন যারা রাজনৈতিক অর্থ যোগান দেয়, উচ্চপদস্থ সরকারী এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত বা চাকরিরত কর্মকর্তা, তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, বিচারক, আইনজীবীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা; বিদেশী অর্থায়নের উপর নির্ভরশীল দেশী ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলির বাংলাদেশের কর্মকর্তারা, সংবাদপত্র, টেলিভিশনের মালিক ও সম্পাদক; শাসক এবং বিরধী রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের যুক্তরাষ্ট্রে রিরাট অংকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আর সম্পত্তি আছে এবং তাদের পরিবার ও সন্তান-সন্ততি সেখানে বসবাস করে। এই গোষ্ঠীর প্রত্যেকের উপর ভিসা প্রত্যাখ্যান, নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউএস ব্যাঙ্কে জমা রাখা তাদের বিশাল ডলারের ক্ষতির ভীতী তৈরি করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত এই ক্ষুদ্র সুবিধাবাদী গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখে। আমাদের কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে এই গোষ্ঠীর কিছু লোকেরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অর্থ আর সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য যা করতে বলা হবে তাই করতে কোন দ্বিধা করবে না। তাদের অর্থ ও ক্ষমতার লোভে প্রভাবিত করা কোন কঠিন কাজ না।

গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার, দুর্নীতি দমনের একই নাটকের গান গাইতে একের পর এক উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর শুরু করে। এখন অক্টোবরে তাদের আরেকটি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তাদের গানের সাথে তাল মিলিয়ে একই গান গাইছে এবং ঘোষণা করেছে যে তারা কোনো নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। হঠাৎ তাদের বাংলাদেশের প্রতি এত বড় আগ্রহ কেন? তাদের কি অন্য আর কোন বৈশ্বিক নিরাপত্তা অগ্রাধিকারের চিন্তা নেই?

বাংলাদেশে যে খাদ্য উৎপাদন কম, তা নয়, তাহলে হঠাৎ করে কেন আমরা দেখতে পাই সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে!!? কারা এর পিছনে কাজ করছে? নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারনে সাধারন মানুষ বিশেষ করে শক্তিশালী মধ্যবিত্ত লোকেরা ক্ষুব্ধ হচ্ছে এবং সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলতে শুরু করেছে?

শুধু বাংলাদেশ নয়, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ও ইউরোপীয় মানুষকে মরিয়া করে তুলছে। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু ভালো প্রচলনের সংবাদপত্রের দিকে তাকান, দেখবেন প্রথম পৃষ্ঠায় দিনের পর দিন খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি, দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম, দুর্নীতি, মেগাপ্রজেক্টের ব্যর্থতা, চীনের কাছে বাংলাদেশ বিক্রি বা ভারতের নিপীড়ন সম্পর্কে কথা বলে দেশে সংশয়, উত্তেজনা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিদেশে এবং বাংলাদেশে বসবাসকারীরা গুজব ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে। আমি অবাক হব না যদি তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরশাসক, দুর্নীতিবাজ হিসাবে চিত্রিত করতে শুরু করে, যা ইতিমধ্যেই কিছু বিরধীদলের নেতা অহরহ বলা শুরু করেছে।

পশ্চিমা অর্থের ওপর নির্ভরশীল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছে। হঠাৎ করে ডঃ ইউনুস ও আদিলুর রহমানের ইস্যু এখন বড় খবর। বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা তাদের সম্পর্কে লিখছেন, প্রায় বাংলাদেশকে তাদের মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিচ্ছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ নিয়ে লিখছে, তাদের মুক্তি দাবি করছে। তথাকথিত কিছু বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরাও আওয়াজ তুলছেন। তারা পণ্যের উচ্চ মূল্য সম্পর্কে তাদের উদ্বেগের কথাও লিখছেন। এ যেন একই শুরে গাওয়া একই নাটকের গান।

জানলাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী এজেন্ট, বিচারক, আইনজীবী এবং রাজনৈতিক নেতাদের ভিসা প্রত্যাহারের নীতি/নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে। এর মানে তারা তাদের লিখিত নাটকের শেষ কয়েকটি পর্ব ইতিমধ্যে শুরু করেছে।

এখন বিএনপি ও জামায়াত তাদের পেশী শক্তি ঝাঁকাতে শুরু করেছে, ঢাকাকে রক্তাক্ত করার চেষ্টা করছে। বাস, সম্পত্তি এবং মানুষ পোড়ানো এবং সম্পত্তি ধ্বংসের পরিকল্পনা করছে। এটি সুষ্ঠু নির্বাচন, বাকস্বাধীনতা বা মানবাধিকার নয়, চূড়ান্ত লক্ষ্য তৃতীয় শক্তির ক্ষমতা দখলের জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। এই সব ধীরে ধীরে ঘটা কিন্তু প্রতিদিনই বৃদ্ধি হয়া সুপরিকল্পিত এবং সমন্বিত শাসন পরিবর্তনের প্রচেষ্টার একই নাটকের যদি অংশ না হয়, তাহলে আমার আর বলার কিছু নাই।

পত্রিকায় ছবি দেখে অবাক হলাম, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচন কমিশন পরিদর্শনের পর সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত যখন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন তখন আমাদের নির্বাচন কমিশনার, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পিছনে অসহায় ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। মনে হতে পারে ইসি যেন রাষ্ট্রদূতের অধীনে কাজ করেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই তার আত্মমর্যাদা কোথায় ছিল? ইসি তার অফিসে রাষ্ট্রদূতের সাথে আলোচনা করে যথেষ্ট সৌজন্য দেখিয়েছেন, তাহলে ইসির একসাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার কি দরকার ছিল? রাষ্ট্রদূত চলে যাওয়ার পর তিনি একাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে পারতেন। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না নির্বাচন কমিশনার সাংবিধানিকভাবে একজন স্বাধীন কর্মকর্তা। আ.লীগ নেতারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে গদ গদ হয়ে হাসিমুখে ফুল দিয়ে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পাঠান, তার বাসভবনে ভোরের, দিনের বা রাতের খাবারের জন্য ছুটে যান। বিরোধী দলের নেতারা রাষ্ট্রদূতদের ভগবান হিসেবে ভাবতে শুরু করেছেন, যেন জনগন নয় ক্ষমতাবান বিদেশারা তাদের ক্ষমতায় বসাবেন।

সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিআইএ-এর একজন আমেরিকান এজেন্টকে গ্রেফতার করেছিলেন কারণ সেই এজেন্ট তার এক উচ্চ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে চেয়েছিল। আমেরিকাকে গোপনে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে হয়েছিল। কিন্তু আমাদের সমস্যা হল আমাদের দেশে আগেও ছিল এবং এখনও কিছু মিরজাফর আছে। এমন কিছু মানুষ আছে যারা এখনও আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না এবং আমাদের অগ্রগতি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ক্ষুণ্ন করার জন্য যেকোনো কিছু করতে তারা প্রস্তুত। ক্ষমতা এবং অর্থের বিনিময়ে সহজেই কেনা যায় এমন অনেক লোক আমাদের মাঝে আছে। কিছু মানুষ আছে যারা চোখ থাকতেও অন্ধ এবং আমরা যে বিশাল অগ্রগতি করেছি তা তারা দেখতে পান না। তারা আমাদের জাতি এবং এর আত্মসংকল্পকে অবমূল্যায়ন করতে পেরে গর্বিত বোধ করে। তারা বিশ্বাস বা পছন্দ করে না মাথা উঁচু করে এবং পারস্পরিক সম্মান নিয়ে বাঁচতে। কিন্তু কখনোই আমাদের বাঙ্গালী সাধারণ মানুষের শক্তিকে অবমূল্যায়ন করবেন না। তারা কখনই পরাধীনতা মেনে নেবে না।

আমি মনে করি, বিদেশী এজেন্ট, স্বার্থান্বেষী, দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার ক্ষুধার্ত, স্বার্থপর ব্যক্তিদের দলগুলো নিখুঁত আর সুপরিকল্পিত নাটকের খেলা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। আমাদের একমাত্র ভরসা স্বাধীন মনের সাহসী প্রধানমন্ত্রী আর আমাদের নীরব কিন্তু শক্তিশালীর ৯০% জনসংখ্যা, যারা শান্তিতে, সমমর্যাদা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে সহ বাঁচতে চায়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭