ইনসাইড বাংলাদেশ

যেসব কারণে আপনিও পরতে পারেন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায়


প্রকাশ: 26/09/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২৪ মে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। সেই ভিসা নীতির আওতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্যায়ে কয়েকজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে তথ্যপাদ্য সংগ্রহ করেছে তা যাচাই বাছাই করেছে এবং তারপর তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। মূলত ৯ টি কারণে যেকোনো ব্যক্তি মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন বলে তথ্যানুসন্ধান করে পাওয়া গেছে। এই ৯ টি কারণের মধ্যে;

১. যদি কেউ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা দেয়: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে—এমন কোন বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান করলে তিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন। যেমন- বিএনপিকে ছাড়াই আমরা নির্বাচন করবো, বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে দেওয়া হবে না বা আগামী নির্বাচনকে প্রতিহত করা হবে, যেকোনো মূল্যে নির্বাচন করতে দেবো না—এই ধরনের বক্তব্য দিলে তাকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে।

২. মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দান: যদি কোনো বিরোধী মত বা যেকোনো মত প্রকাশের বিরোধিতা করে কেউ আক্রমনাত্মক বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয় যেমন- কাউকে ঢাকা থেকে বিতাড়িত করতে হবে বা ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না, হাত পা ভেঙে দেওয়া হবে, প্রতিহত করা হবে ইত্যাদি বক্তব্য যদি কেউ প্রদান করে তাহলে সেগুলো হবে উস্কানিমূলক বক্তব্য। যা মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাধা সৃষ্টি করে। তাহলে তা ভিসা নীতির আওতায় আসবে।

৩. রাজনৈতিক হয়রানি: যদি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনের কোন ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো রাজনৈতিক হয়রানি করে এবং স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি বাধা প্রদান করে তাহলে তিনিও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন। 

৪. মানবাধিকার লঙ্ঘন: গণতন্ত্রের সঙ্গে মানবাধিকারের সম্পর্কও ওতঃপ্রোত এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য মানবাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তাই কেউ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন করে বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে বা বিচার বহির্ভূত গ্রেপ্তার বা হয়রানি করে, গুম করে তাহলেও তিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন বলে জানা গেছে। 

৫. নির্বাচনকে প্রভাবিত করা: নির্বাচনে বিশেষ দল বা ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য যদি কেউ প্রভাব বিস্তার করে যেমন- প্রশাসনের দায়িত্বে থেকে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জেতাতে হবে বা কোনো থানার ওসি যদি বলেন যে, আগামী নির্বাচনে আবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিন—এ ধরনের বক্তব্য গুলো অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বাধা। আর এধরনের কর্মকান্ডে যদি কেউ অংশগ্রহণ করে তাহলে সেক্ষেত্রে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় তিনি আসবেন। 

৬. প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা বিচার বিভাগ বা অন্য কারো পক্ষপাত: যদি আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচনী আচরণবিধির বাইরে গিয়ে কোনো প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা অন্য কোনো ব্যক্তি যদি অতি উৎসাহী বক্তব্য রাখেন কোনো দল বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে যদি কথাবার্তা বলেন এবং তাতে যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষুন্ন হয় তাহলে তিনিও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন।

৭. বিরোধী দলকে সমান সুযোগ না দেওয়া: যদি নির্বাচন প্রচারণা বা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বিরোধী দলকে বাধা প্রদান করা হয়, তাকে যদি নির্বাচন পরিচালনার সুযোগ না দেওয়া হয় সেক্ষেত্রেও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন ওই সমস্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান নয়।

৮. নির্বাচনে পক্ষপাত এবং জয়ী হওয়ার জন্য যদি কেউ কটু কৌশলের পরিকল্পনা করেন বা কটু কৌশলে আশ্রয় নেন: নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য যদি কেউ পছন্দের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ দেন, পছন্দের প্রশাসন নিয়োগ দেন এবং বিভিন্ন রকম পন্থা অবলম্বন করেন তাহলে তিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন।

৯. যদি এমন কোনো কর্মকান্ড করেন যাতে তার নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়: নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই যদি এমন কোন ব্যক্তি এমন কোন কর্মকান্ড করেন যাতে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় যেমন- ভুয়া ভোটার তালিকা প্রদান, ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন বা বিরোধী পক্ষের প্রার্থীকে মামলা হয়রানি করা ইত্যাদি কর্মকান্ড করলে তিনিও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে।

মূলত এই ধরনের অভিযোগ গুলো যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় তাহলে সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই সমস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭