প্রকাশ: 28/09/2023
২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে গোপালগঞ্জের
টুঙ্গীপাড়ায় শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছার জেষ্ঠ্য সন্তান। দেশ বিভাগের মাত্র কিছুদিন পর শেখ হাসিনা
যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্যস্ত ‘স্বাধীনতা
পরবর্তী’ সাংগঠনিক তৎপরতায়। এসময় শেখ মুজিব ঢাকায় আসেন এবং যুব কর্মীদের সংগঠিত
করার উদ্যোগ নেন। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার গণতান্ত্রিক যুব কর্মীদের এক সম্মেলন
হয়। এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তসাদ্দুক আহমেদ। সম্মেলনে জনাব শামসুল হক (পরবর্তী
কালে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সম্মেলনে
বিশেষ ভূমিকা রাখেন। শেখ হাসিনার জন্মের দশদিন পর তিনি টুঙ্গীপাড়ায় তার প্রিয় কন্যার
সান্নিধ্যে এসে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন। শেখ হাসিনার জন্মের পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান কলকাতার পাঠ চুকিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি
হন। ভর্তি হয়েই বঙ্গবন্ধু জড়িয়ে পরেন গণতান্ত্রিক যুবলীগের প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়ার
সংগে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে ১১ মার্চ সাধারন
ধর্মঘট আহবান করা হয়। এই ধর্মঘট শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি
গ্রেপ্তার হন। শেখ হাসিনার বয়স ৬ মাসেরও কম তখন তার পিতা 'তথাকথিত' স্বাধীন দেশে রাজনেতিক
কারণে কারাবরন করেন। গ্রেপ্তারের ৫দিন পর বঙ্গবন্ধু ছাড়া পান। কিন্তু ঐ বছরই ১১ সেপ্টেম্বর
ফরিদপুরে কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য শেখ মুজিব আবার গ্রেপ্তার হন। তার
প্রিয় কন্যার প্রথম জন্মবার্ষিকী তিনি কারাগারেই উদযাপন করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রভাষা
আন্দোলন এবং আওয়ামী মুসলিম লীগ সংগঠনে ব্যস্ত হয়ে পরেন। শেখ হাসিনার শিশুকাল কাটে
টুঙ্গীপাড়ার অকৃত্রিম পরিবেশে। মা আর দাদা দাদীর স্নেহে। ১৯৪৯ সালের ৩ মার্চ থেকে
শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলন। নিম্ন কর্মচারীদের
ধর্মঘটের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজও এগিয়ে আসেন। তারাও ৩ মার্চ ক্লাস
বর্জন করেন। পূর্ব পাকিস্থান মুসলিম ছাত্রলীগের আহবানে এবং উদ্যোগে ৫ মার্চ পূর্ণ ছাত্র
ধর্মঘটের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বেলা ১২-৩০ মিনিটে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে
ছাত্ররা স্থির করেন যে কর্মচারীদের দাবি দাওয়া কর্তৃপক্ষ যতোদিন স্বীকার না করেন,
ততদিন পর্যন্ত তারা সহানুভূতি সূচক ধর্মঘট অব্যাহত রাখবেন। প্রাদেশিক সরকারের নির্দেশনা
অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেন চিরা চারিত নেতিবাচক
পন্থায়। বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ এবং শেখ মুজিবুর রহমান সহ ২৭ জন
ছাত্রকে দণ্ড প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মুচলেকা দিয়ে শাস্তি থেকে রেহাই
পাওয়ার জন্য, শিক্ষার্থীদের আহবান জানান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুচলেকা
দিয়ে রেহাই পেতে অস্বীকৃতি জানান। তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ মুজিবুর রহমানকে
গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু
আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাননি। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন 'পূর্ব পাকিস্থান আওয়ামী মুসলিমলীগ‘
গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। এখানেই তার
জাতীয় রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ ঘটে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭