কালার ইনসাইড

'আমি একজন ভুক্তভোগীর বাবা, গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি'


প্রকাশ: 28/09/2023


Thumbnail

অনেক দিন থেকেই বিনোদন জগৎ থেকে দূরে আছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী। বর্তমানে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসা ও পরিবার নিয়ে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বেশ সক্রিয়। মাঝে-মধ্যেই নানান বিষয় নিয়ে অভিনেতা তার ভেরিফাইড ফেসবুকে পোষ্ট করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় ওমর সানী আজ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে কয়েকটি ছবিসহ একটি লেখা পোষ্ট করেছেন যেখানে লেখা 'আমি একজন  ভুক্তভোগীর বাবা এবং আমার পরিবার। এই কাজটা আমার ছেলের সাথে করা হয়েছে'।

ওমর সানীর ফেসবুক  স্ট্যাটাসটি পাঠকদের সুবিধার জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- 

আমি একজন ভোক্ত ভোগির বাবা এবং আমার পরিবার। এই কাজটা আমার ছেলের সাথে করা হয়েছে। লিখেছেন আমার ছেলে ফারদিন।

গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আইন এর আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হোক। ৪০ - ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচার। Nishat Zia আপনারা হয়তো MTFE এমটিএফই এবং এরকম আরো অনেক অ্যাপস এর মাধ্যমে প্রতারণার কথা শুনেছেন। তবে আজকে কোন অ্যাপস নয় আজকে একজন ভন্ড প্রতারক এবং অর্থ পাচারকারীর বাস্তব ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। এবং তার জলযন্ত্র প্রমাণ আমি, আমার পরিবার, এবং আমার চেনা জানা কিছু মানুষ। নিশাত বিন জিয়া রুম্মান, এ ব্যক্তির সাথে আমার পরিচয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি দিক দিয়ে। সে নিজেই আমাকে দাওয়াত দিয়ে তার বিয়েতে আগমন জানায়। তারপর থেকেই চেনা জানা এবং বিভিন্ন সময় নিশাত নিজে নিজেই তার একটি আইটি ব্যবসার ব্যাপারে আমাকে এবং আমার কিছু বন্ধুদের বলতে থাকেন। পরিচয় হওয়ার চার মাস পর আমাকে এবং আমার কিছু চেনা পরিচিত মানুষদের সাথে তার একটু বন্ধুত্ব গভীর হওয়ার পরে তিনি আমাদের তার কোম্পানি STASIS GROUP এবং AMAZING FASHIONS LTD এর কথা বলে কিছু নগদ অর্থ ব্যবসায়িক পুজি হিসেবে নেওয়া শুরু করেন। যদিও পরে জানা যায় তার কোম্পানির নামে ব্যাংক একাউন্ট দূরের কথা কোন বৈধ ট্রেড লাইসেন্সই নেই।

যতদিন এই অর্থ সে ফেরত না দিতে পারেন ততদিনের জন্য তার আইটি SURVEY ব্যবসার উপর ১০% লোভ্যাংশ মূল মূল অর্থের সাথে ফেরত দিবেন বলে ওয়াদা বদ্ধ হন। যদিও আমার বেলায় লভ্যাংশ ১০% হলেও কিছু মানুষের জন্য সেই লভ্যাংশ ৩০% দিবেন এবং সেটাও প্রত্যেক মাসে দিবেন বলে এই বাকি মানুষদের সাথে ওয়াদাবদ্ধ হন। আমার টাকাটা একপ্রকার ব্যবসায়িক লোন ই বলতে পারেন।

আরো জানিয়ে রাখি তারা এইসব লেনদেন যেন বাংলাদেশ সরকারের চোখে না পড়ে তাই লেনদেন গুলো  বিটকয়েন অথবা ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে করে থাকতো তার প্রমাণ ছবি আকারে আমি দিয়েছি। আরো জানিয়ে রাখি বিটকয়েন অথবা ক্রিপ্ত কারেন্সির মাধ্যমে লেনদেন বাংলাদেশ প্রচলিত আইনে পুরোপুরি অবৈধ এবং একটি গুরুতর অপরাধ।

অর্থাৎ যার কাছে যা বলে টাকা নেয়া গিয়েছে তিনি সেভাবেই নগদ অর্থ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে নিয়েছেন। আমি ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক ইনভেস্টমেন্ট ধার  আকারে ২ কোটি ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি। 

এবং তার বিপরীতে তাকে আমি বলেছি যে আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার ইনভেসমেন্ট মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে। এবং সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে জানুয়ারি ২০২৩ সাল 2 কোটি 5 লক্ষ 70 হাজার টাকা বুঝে নেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই তার বিভিন্ন বাহানা শুরু। প্রথম মাসে আমি সহ সবাইকেই চুক্তি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলেও তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাহানা। আমি আপনাদেরকে আবারও বলে রাখি এটি একটি ব্যবসায়িক চুক্তি একজন ব্যবসায়ী আরেকজন ব্যবসায়ীর সাথে। অধিক অর্থ লাভ এর লোভে কোন এপ্স বা সফটওয়্যারে কোন টাকা দেওয়া হয়নি। আমি এবং তার পাশাপাশি আরও ভুক্তভোগী যারা আছেন সকলেই তাকে একজন সুনামধন্য ব্যবসায়ী ALM ZIAUL HAQUE সাহেবের ছেলে নতুন একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছে সেই সুবাদেই অর্থ ইনভেস্টমেন্ট করা। যখন এই ছেলে আমাকে এবং আর কাউকে টাকা দিতে ব্যর্থ হন তখন তার বাবার সাথে আমরা দেখা করলে তার বাবা জনাব এ এল এম জিয়াউল হক আমাদেরকে আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দিবেন তবে তারপর থেকে গোপন সূত্রে আমি জানতে পারি তারা সবাইকে একই কথা বলে কিছু সময় সবার থেকে আদায় করে নিচ্ছিলেন। আমার সাথে যখন তার বাবার শেষ দেখা হয়েছিল আমাকে বলেছিল তিনি পাঁচ দিনের জন্য সুইজারল্যান্ড যাচ্ছে তবে পাঁচ দিন পরে এসে আমাকে ফোন দিয়ে মিটিং করার কথা। সেই মিটিং আজ পর্যন্ত হলো না। হয়তো ভন্ড ছেলের ভন্ড বাবা এই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এল এম জিয়াউল হক তাদের কোম্পানি amazing fashions limited।

যাই হোক,বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার হকের টাকা চেতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। 

কিন্তু আমরা যখন আমাদের হকের টাকা তার কাছে চাচ্ছি তিনি তখন তার প্রতারণার পার্টনার তার ভাই সাহিল মুষ্টাভি এবং তার স্ত্রী আফ্রা বাসনিন (যিনি এই পুরো SCAM এর মধ্যে জড়িত) তারা তখন দুবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে অর্থ দুবাই পাচার করে ৩,০০,০০০ দেরহাম অর্থাৎ প্রায় এক কোটি টাকা এক সপ্তাহে ব্যবধানে খরচ করেন তারা দুইজন স্বামী স্ত্রী।

পরে আরো জানা যায় তিনি প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচার করে থাকে।

আপনারা এমটিএফই এর ব্যাপারে জানতে পেরেছেন কারণ এমটিএফই একটি অ্যাপস এবং এই অ্যাপসের মাধ্যমে মানুষের চেনা জানা অপরিচিত হাজার হাজার মানুষ বিনিয়োগ করেছে তবে আমি যে কথা বলছি এটি কোন অ্যাপস নয় এটি একজন প্রতারক তার বাবার কোম্পানি অ্যামেজিং ফ্যাশন লিমিটেডের সুনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় মানুষের থেকে ৩০ কোটি টাকা বা তার ঊর্ধ্বে আত্মসাৎ এবং বাংলাদেশের বাহিরে পাচার করেছেন। এবং যাদের থেকে টাকা নিয়েছেন সকলেই মোটামুটি স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। সকলেই এখন প্রত্যেক দিন তাদের অর্থ কিভাবে উদ্ধার করবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু এই ভন্ড প্রতারকের ভন্ডামি দেখে আমি বুঝে গিয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আমার কোন উপায় নেই। তাই আমি গত এক মাস আগে তার প্রদান কৃত সব চেকগুলো নিয়ে একটি লিগাল নোটিশ তার বরাবর প্রদান করি। লিগাল নোটিশ এ উল্লেখ করা আছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পুরোপুরি ফেরত না দিলে আমি চেকের উপরে NI ACT এর মামলা দিতে বাধ্য থাকিব। আপনারা হয়তো জানেন চেকের মামলা একটি সিভিল কেস কোন ক্রিমিনাল কেস নয়। আমি ঢাকা ডিবি অফিসে গত এক মাস আগে একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করি বরাবর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ডিবি।

আমার পাশাপাশি সকল ভুক্তভোগীদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। অনেকেই এখন মামলা করবে বলে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সকলেই চেকের মামলা করছে। তবে এটি একটি বিশাল প্রতারণা এবং আমাদের বাংলাদেশ আইনে অর্থ পাচার একটি গুরুতর দেশদ্রোহী অপরাধ। চেক দিয়েছে অর্থ আমাকে প্রদান করতে পারেনি তাই আমি চেকের মামলা দিচ্ছি, কিন্তু এত প্রতারণা অর্থপাচার এগুলোর জন্য কি কোন বিচার হবে না? অবশ্যই হবে। এত প্রতারণার পরেও গত এক মাস আগে জানতে পারলাম একজন তাকে নগদ ৭০ লক্ষ টাকা ইনভেস্টমেন্ট আকারে দিয়েছে। আমি এবং আমার সাথে যারা আছে তারা হয়তো আজকের এই পোস্ট করার পরে এবং বিভিন্ন লিগাল পদক্ষেপ নেওয়ার পরে তাদের অর্থ ফেরত পাবেন বা নাও পেতে পারেন। তবে নতুন করে এই প্রতারকের প্রতারণায় কেউ যেন না পড়ে সেই উদ্দেশ্যেই আজকে এত কিছু লেখা। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি তাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির অনেক বিদ্যমান ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেছি। এত বড় একটি প্রতারণা এবং অর্থ পাচারের এই কেসটি গণমাধ্যমে তুলে ধরলে আমার বিশ্বাস নিশাদ বিন জিয়া নামের এরকম আরো অনেক চোর এবং ভন্ড প্রতারকের থেকে মানুষ বাঁচতে পারবে। তার হুন্ডি ওলা অথবা তার অর্থ পাচার করার সাহায্যে মূল হোতা SAHIL MUSTAVI (দুবাই প্রবাসী তবে এখন বাংলাদেশে)

এবং প্রতারণা পরিচালনা করতেন নিশাত বিন জিয়া রুম্মান এবং তার স্ত্রী আফরা বাশনিন।

আজকে তার বাবা মা যদি তাকে সুশিক্ষায় বড় করতেন তাহলে হয়তো তাদের নিজেদেরই সন্তানের জন্য এই দিন দেখতে হতো না। আমি এতকিছু লিখছি কারণ আমি চাই শুধু চেকের মামলা নয় প্রতারণা এবং অর্থপাচারের মামলা এই বিষয়টি গণমাধ্যম দ্বারা সাধারণ মানুষ এবং বাংলাদেশ পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এ বিষয়টা যেন উঠে আসে। আপনারা কি চান এই ছেলেকে সময় দিতে যেন সে ৩০ না ৩০০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অর্থ পাচার করে?

এছাড়া এই অভিনেতা পোষ্টির কমেন্সসেকশনে লিখেছেন কাউকে উদ্দেশ্য করে আমার এই পোস্ট নয় সবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ভালোবাসা স্নেহ আছে, কারন আমরা সবাই একটা বাংলাদেশ।




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭