ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পরমাণু অস্ত্র নিয়ে বিশ্বকে সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব


প্রকাশ: 28/09/2023


Thumbnail

পরমাণু অস্ত্র বিশ্বকে সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনি গুতেরেস। তিনি মূলত বিশ্বকে একটি নতুন পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করা এবং বিশ্বজুড়ে ‘ধ্বংসের ছায়া ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভার শেষ দিনে তিনি বলেছেন, একটি উদ্বেগজনক নতুন অস্ত্রের প্রতিযোগিতা চলছে এবং কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বিশ্বের নতুন পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতাকে ‘পাগলামি হিসেবে বর্ণনা করে গুতেরেস বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের যেকোনো ব্যবহার তা যেকোনো সময়, স্থান বা  যেকোনো প্রসঙ্গে হোক না কেন, তা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং আমাদের অবশ্যই এ পথ পরিবর্তন করতে হবে।

বিশ্ব পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়ায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বিশ্বের দেশগুলোকে ‘বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রাগারের বৃদ্ধি এবং ক্রমাগত পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশের প্রতিযোগিতা এবং এগুলোর ব্যবহার বিশ্বব্যাপী জননিরাপত্তাকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নজিরবিহীন প্রতিযোগিতা চলছে। আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশের হুমকি মোকাবেলায় নিজের দৃঢ় সংকল্প দেখানোর জন্য মস্কো তার পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শনের কথা বিবেচনা করলে জাতিসংঘ মহাসচিবের পারমাণবিক সতর্কতা  কতটা গভীর তা সহজেই বোধগম্য হচ্ছে।

প্রকৃতপক্ষে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ব শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের মতো একটি পারমাণবিক যুদ্ধের দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হয়েছে।

এই বিষয়ে রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি এবং রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ন্যাটোকে হিটলারের মতো একটি ফ্যাসিবাদী ব্লক হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, রাশিয়া প্রয়োজনে ন্যাটাকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ন্যাটো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের ফলে মানবতার জন্য ১৯৪৫ সালের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতি হবে।

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার চুক্তি (এনপিটি) ১৯৭০ সাল থেকে কার্যকর হয়েছে এবং এদে বিশ্বের বিদ্যমান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলোর মধ্যে সর্বাধিক স্বাক্ষরকারী রয়েছে এবং ১৯১টিরও বেশি দেশ এতে যোগ দিয়েছে। এনপিটি চুক্তি বাস্তবায়নের পর থেকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং এই মারাত্মক অস্ত্র ধ্বংস করার প্রচেষ্টা জাতিসংঘের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। তবে এই চুক্তিটি উপেক্ষিত হয়েছে বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্রাগারের মালিকরা এই চুক্তি বারবার লঙ্ঘন করেছে।

প্রকৃতপক্ষে পৃথিবী ৭৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারমাণবিক যুদ্ধের মতো একটি ভয়াহব দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। প্রধান পারমাণবিক শক্তিগুলো এখনও তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণ করছে। যে পাঁচটি দেশ পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য, সেইসাথে গত কয়েক দশকে বিভিন্নভাবে পারমাণবিক রাষ্ট্রের ক্লাবে যোগদানকারী যে দেশগুলো গড়ে উঠছে তারা তাদের অস্ত্র এবং পারমাণবিক লঞ্চার সিস্টেম স্থাপন এবং এগুলোর আপডেট অব্যাহত রেখেছে।

এই বিষয়ে গুতেরেস পারমাণবিক শক্তি অর্জনকারী দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেছেন,  তারা তাদের অস্ত্রগুলোকে আরও দ্রুত, আরও নির্ভুল করে আধুনিকরণ করছে  এবং এগুলোকে সনাক্ত করা আরও কঠিন করে তুলেছে।

অন্যদিকে, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করতে এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের অগ্রগতি রোধ করার জন্য অতীতে যে কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল  আজ অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭