ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নিয়ে ভারত কি হাল ছেড়ে দিল?


প্রকাশ: 28/09/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটা মতদ্বৈধতা ছিল। ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথাও বলেছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশ ইস্যুতে কথা বলেন। বাংলাদেশে যেন কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের উত্থান না ঘটে, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত না হয় এটি ছিল ভারতের প্রধান প্রত্যাশার বিষয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটা দূরত্ব এবং মতপার্থক্য লক্ষ্য করা গিয়েছিলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন বলতে সকল রাজনৈতিক দল অর্থাৎ প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকে বুঝাত। অন্যদিকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাখ্যায় ভারত মনে করে যে, নির্বাচনে যদি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার ভোটে অংশগ্রহণ করে সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু এই দুই দেশ বাংলাদেশ ইস্যুতে মতপার্থক্য ঘোঁচার আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসী ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করে। 

গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কয়েকদিনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিয়ে দেয় যে বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা আগের অবস্থানে আছে। এমন এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে যখন ভারত কানাডার সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে গেছে এবং এটি তাদের এক নম্বর বিষয় হয়েছে। কানাডায় একজন শিখ নেতার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে দুই দেশের উত্তেজনা এখন চরমে। এই অবস্থায় ভারত কতটা বাংলাদেশ ইস্যুতে মনোযোগ দিতে পারবে সেই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে আছে। তাছাড়া বিশ্বে কানাডা-ভারত বিরোধের ইস্যুটি নাড়া দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পক্ষেই অবস্থান গ্রহণ করেছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য অগ্রাধিকার হলো নিজের স্বাধীনতা এবং অস্তিত্ব রক্ষা। খালিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নামে যে অযৌক্তিক আন্দোলনকে কানাডা প্রশয় দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা এবং বিশ্বকে তাদের পক্ষে নেওয়াটাই এখন ভারতের প্রধান কূটনৈতিক কৌশল। সেখানে বাংলাদেশের বিষয়টা কতটুকু প্রাধান্য পাবে সেই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যে। তাছাড়া কেউ কেউ মনে করছেন, যেহেতু কৌশলগত কারণে কানাডার সঙ্গে এই দ্বৈরথ মার্কিন সহায়তা খুবই জরুরি ভারতের জন্য। সে কারণেই কি কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে হাল ছেড়ে দিলো ভারত? এমনটি প্রশ্নটি কোনো কোনো মহলে উঠেছে। কারণ ভারত সবসময় তার নিজের দেশের স্বার্থ দেখে। কূটনীতিতে তারা সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করে যেটি তার দেশের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই বিবেচনা থেকে এখন ভারত বিশ্ব কূটনীতিতে কৌশলগত কারণেই কি বাংলাদেশ ইস্যুটিকে এড়িয়ে যাচ্ছে নাকি ভারত মনে করছে যে, এখনো সময় আছে বাংলাদেশ ইস্যুতে পরেও নজর দেওয়া যাবে। 

তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ ভারতের কাছে কখনোই অগুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিক স্থিতিশীলতা এবং বর্তমান সরকার থাকার ফলে ভারত যে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে মুক্ত থাকছে এটা তাদের বিরাট প্রাপ্তি। কোনো অবস্থাতেই ভারত এই জায়গা থেকে সরে আসবে না বলেই মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭