ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি: বাইরে উত্তাপ ভেতরে সমঝোতার চেষ্টা


প্রকাশ: 29/09/2023


Thumbnail

বিএনপি এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। এক দফা দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। কদিন আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টায় খালেদা জিয়ার মুক্তি হয়নি। বিএনপি আল্টিমেটামের পর কি করবে? সেই ধরনের কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারেনি। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়া এখন কার্যকর হবার পথে। বিভিন্ন সূত্রগুলো জানাচ্ছে, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি মানবিক এবং সহানুভূতিশীল আচরণ করতে পারে। আর এ লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের আইনগত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে ঘোষণা আসবে বলে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছেন। আর এরকম একটি বাস্তবতায় অনেকেই মনে করছে বিএনপি বাইরে যতই উত্তাপ দেখাক ভেতরে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে। এই সমঝোতা কি? এবং কিভাবে হবে তা এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

অনেকেই মনে করছেন, নির্বাচনে যাওয়া, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং আরও কিছু বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির গোপনে দরকষাকষি চলছে। বাইরে যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে এক দফা আন্দোলন এবং অক্টোবরের মধ্যে কিছু একটা ঘটবে এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, এই সরকারের সাথে আর কোন রকম সমঝোতা নয়। এই সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না ইত্যাদি। কিন্তু পদ্মার অন্তরালে চলছে অন্যরকম প্রয়াস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশের চিকিৎসার জন্য নতুন করে আবেদন এই সমঝোতারই ফসল। বিএনপির একাধিক নেতা এই সমঝোতা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপির মধ্য থেকে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুটিকে একটি মানবিক ইস্যু হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতারা। এই জন্য যেকোনো প্রকারে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোটা তারা নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে মনে করছেন। এ নিয়ে সরকারের সাথে দেন দরবার, কথা বলা দোষের কিছু নয়। তবে তা কোনভাবেই বিএনপির এক দফা আন্দোলন বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সম্পূরক নয়। অন্যদিকে বিএনপির আরেকটি অংশ বলছেন, সবকিছুই একটি প্যাকেজ। বেগম খালেদা জিয়াকে যদি শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা যদি প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে বিএনপি সরকারের সঙ্গে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ফর্মুলা বের করার জন্য আলোচনায় বসতে পারে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন কারণে বিএনপি এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছে যে, নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ হয় সেটি তারা নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে বিএনপির নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এক দফা আন্দোলনের আর গুরুত্ব থাকবে না। এই কারণেই অক্টোবরের মধ্যে যদি আন্দোলনে জয়ী হওয়া না যায় তাহলে বিএনপির সর্বনাশ ঘটবে। তার চেয়ে সরকারের সাথে কিছু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে একটি সমঝোতা করাই ভালো। এতে বিএনপির লাভ হবে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত যদি শতকরা ৫০ ভাগও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে তাদের জয় অবশ্যম্ভাবী। কারণ এবারের নির্বাচন ২০১৪ বা ২০১৮ এর মতো হবে না। এরকম বাস্তবতায় বিএনপি শেষ পর্যন্ত কি করবে সেটাই দেখার বিষয়। তারা কি সমঝোতার পথে যাবে নাকি এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত দাবি আদায় করতে পারবে।
 
বিভিন্ন সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বিএনপির আন্দোলনে যে গতিহীনতা তার একটি প্রধান কারণ হলো এখনো তারা গোপনে সমঝোতার  চেষ্টা করছে। প্রকাশ্যে হুমকি আর ভেতরে সমঝোতার চেষ্টা এই প্রক্রিয়ায় বিএনপি এখন এগোচ্ছে। দেখা যাক, কোন পথে বিএনপি  শেষ পর্যন্ত যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭