ইনসাইড বাংলাদেশ

বিশ্ব প্রবীণ দিবস ও বাংলাদেশের বাস্তবতা


প্রকাশ: 01/10/2023


Thumbnail

বার্ধক্যের আঘাত সার্বজনীন। কারো যদি অকাল মৃত্যু না হয় তবে প্রত্যেককেই এ জীবনের স্বাদ গ্রহণ করতে হয়। বার্ধক্যের কষাঘাতে অনেককেই একাকিত্বের মতো কষ্টকর জীবন কাটাতে হয়। ভুগতে হয় অর্থকষ্টেও। এ ধারা অনেক দিন ধরেই চলছে। তবে সম্প্রতি বিষয়টি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।

জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব প্রবীণ দিবস আজ। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও রোববার (১ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে দিবসটি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় প্রবীণদের জন্যে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রজন্মের ভূমিকা।’ দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছর নানা আঙ্গিকে বিবিধ আলোচনা হলেও, প্রবীণদের জীবনামান উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে-বিদেশে সর্বত্র আজ বার্ধক্যে উপনীত মানুষ চরম অসহায়। মা-বাবা সন্তানকে মানুষ করেন, সঞ্চয় বিলিয়ে দেন। যাদের অল্পবিস্তর অর্থ আছে, তারা জীবনের শেষ পর্যায়ে বৃদ্ধাশ্রমে অতিবাহিত করেন। চোখে জল নিয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করেন। আর যারা সন্তানকে সবকিছু দিয়ে নিঃস্ব, তাদের স্থান হয় খোলা আকাশের নিচে।

প্রত্যেক বয়স্ক নাগরিকের মর্যাদাসহ বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে বাংলাদেশের আইন। এই অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু, প্রবীণরাই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন। প্রবীণরাই প্রস্তুত নন। যার ফলে জীবনের শেষ পর্যায় বৃদ্ধাশ্রমে অতিবাহিত করেন। চোখে জল নিয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠছে। সংশ্লিষ্টদের চেষ্টার কমতি নেই। অধিকাংশ বৃদ্ধাশ্রম সাধারণ মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় চলছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্ক নাগরিকরা কীভাবে বেঁচে আছেন, কেউ জানে না। আপনজনওরা খোঁজখবর নেয় না।

বিশ্বের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর চেতনাকে জাগ্রত করতে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রবীণ দিবস পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন পৃথক রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রবীণদের কল্যাণে উন্নত ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রবীণ নাগরিকরা যাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সব সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তিগত সাম্যতা অর্জন করতে পারেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি অত্যন্ত সংবেদন ও শ্রদ্ধাশীল। তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা সুরক্ষার জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, তাদের পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজকের প্রবীণ নাগরিকরাই স্বাধীনতা সংগ্রামে লাল-সবুজের পতাকা অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল। প্রবীণ নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে অসহায় প্রবীণদের জন্য সাংবিধানিক অঙ্গীকার তিনি সন্নিবেশিত করেন।

বৃদ্ধ অবস্থায় পিতা-মাতাকে সন্তানের কাছ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ২০১৩ সালে ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন’ প্রণয়ন করে সরকার। পিতা-মাতার ভরন-পোষণ না করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে।

 

 

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭