ইনসাইড পলিটিক্স

অলআউট অ্যাকশনে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 03/10/2023


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার যেমন বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগ ঠিক তেমনি ড. ইউনূসের ব্যাপারেও কোন ছাড় দিচ্ছে না। নির্বাচনের আগে কাউকেই কোন ছাড় নয়—এরকম একটি অবস্থানে গেছে টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা দলটি। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের পথে যারা বাধা দেবে তাদের ব্যাপারেও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের আগে কোন রকম ছাড় নয়—এই নীতিতে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এই এই অলআউট অ্যাকশনটিকে একটি রাজনৈতিক কৌশল মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ দেখাতে চায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বা অন্য কোন কিছুতে দুর্বল হয়নি। বরং এই অলআউট অ্যাকশনের মধ্যে দিয়ে জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ সুস্পষ্ট একটা বার্তা দিতে চায় যে, সরকার এখনও যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী। 

বিভিন্ন বিষয়ে আওয়ামী লীগকে এখন অনমনীয় অবস্থানে দেখা যাচ্ছে। যে সমস্ত বিষয়ে আওয়ামী লীগ অনমনীয় অবস্থানে রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-

১. বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা: বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে সরকার তার অবস্থান সাফ জানিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকায় শতরূপা বড়ুয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যখন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে আইনগত অবস্থান তুলে ধরছিলেন সেই সময় সরকারের মধ্যে এক ধরনের দোদুল্যমানতা ছিল। সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং নেতা মনে করছিলেন যে বয়সের বিবেচনা করে এবং বেগম জিয়ার যে অসুখ বিসুখ সেই বাস্তবতার নিরিখে তাকে বিদেশ যাওয়া অনুমতি দেওয়াটা শ্রেয়। কিন্তু সে রকম প্রস্তাবে সাড়া দেননি প্রধানমন্ত্রী। বরং তিনি কঠোর অবস্থান রেখেছেন। এটি সরকারের একটি কৌশল। কারণ এর মাধ্যমে যে বার্তাটি দেওয়া হলো তা হলো যে, সরকার দুর্বল হয়ে পড়েনি বা বিরোধী দলের আন্দোলনে সরকার ভীত নয়।

২. ড. ইউনূস ইস্যু: অনেকেই মনে করেছিলেন যে, অব্যাহত মার্কিন চাপের প্রেক্ষিতে ড. ইউনূসের ব্যাপারে হয়তো সরকার  কিছুটা হলেও নমনীয় হবে। কিন্তু ইউনূসকে এখন দুর্নীতি দমন কমিশন তলব করেছে। তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতের মামলাও চলমান রয়েছে। এই দুটি মামলাতেই ড. ইউনূসের পরিণতি কি হবে তা বোঝা যাবে নির্বাচনের আগে। নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অনেক চাপ দেবে এমন আলাপ আলোচনা যখন চলছিল সেই মুহূর্তে সরকারের এই অবস্থান সুস্পষ্ট একটি বার্তা দিল। সরকার বুঝিয়ে দিল যে ড. ইউনূস ইস্যুতে সরকার অনমনীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে সরকার এখন পর্যন্ত নোটিশ নতি স্বীকার করছে না।

৩. বিরোধী দলকে ছাড় দেওয়া হবে না: এর মধ্যেই ঢাকার নতুন পুলিশ কমিশনার দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরেই তিনি বলে দিয়েছেন যে অনুমতি ছাড়া ঢাকায় কাউকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। এর ফলে রাজপথ দখলের যে পরিকল্পনা বিএনপি করেছিল সেটাও হুমকির মুখে পড়ল। ধারণা করা হচ্ছে যে, সামনের দিনগুলোতে বিএনপি যদি রাজপথে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের চেষ্টা করে তবে আইনগতভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে। এই অবস্থান সরকারের কঠোরতারই একটি বার্তা। এ ব্যাপারেও সরকার কোনো ছাড় দেবে না। 

মূলত সরকার চাইছে যে, শক্তিশালী একটি অবস্থানে থেকে সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে নেওয়া। নির্বাচনের পরে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে বলেই সরকারের নীতিনির্ধারকদের ধারণা। এমনকি অর্থনৈতিক সংকট সহ অন্যান্য বিষয়গুলোতেও এখন সরকার গুরুত্ব দিতে চাচ্ছে না। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান সম্মত সময় করে ফেলা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭