ইনসাইড বাংলাদেশ

কি হবে ড. ইউনূসের?


প্রকাশ: 03/10/2023


Thumbnail

ড. ইউনূসের কি হবে এটি এখন রাজনীতির অঙ্গনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ড. ইউনূস কি সরকারকে চাপে ফেলতে পারলেন নাকি সরকারকে চাপে ফেলতে যেয়ে নিজেই চাপের মধ্যে পড়লেন? এই প্রশ্নগুলো আজ রাজনীতি অঙ্গনে ব্যাপক ভাবে আলাপ আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অর্থপাচারের একটি মামলার তদন্তের জন্য ড. ইউনূস সহ ১৩ জনকে দুদক কার্যালয়ে তলব করেছে। ড. ইউনূসের আইনজীবী বলেছেন, আগামী ৫ অক্টোবর ড. ইউনূস দুর্নীতি দমন কমিশনে যাবেন। গ্রামীণ টেলিকমের নামে ৫ হাজার কোটি টাকা অর্থপাচারের একটি বিষয় তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই তদন্তে যদি প্রাথমিকভাবে ড. ইউনূস দোষী প্রমাণিত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে এবং চার্জশিটও দাখিল করা হবে। এই মামলা এবং চার্জশিট হলে ড. ইউনূসকে দুর্নীতি দমন আইনে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। আবার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে একটি মামলাও এখন বিচারাধীন রয়েছে, সাক্ষী পর্ব রয়েছে। এই মামলার শুনানিতেও যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন তাহলেও তাকে জেলে যেতে হবে। 

অনেকেই মনে করেছিলেন যে গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কয়েকজনের বিরুদ্ধে যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এর প্রেক্ষিতে হয়তো সরকার নমনীয় হবেন। এমনকি নির্বাচনের আগে হয়তো ড. ইউনূসকে খাটানো হবে না। কিন্তু সরকার ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। সরকার মনে করছে যে, যদি ড. ইউনূসের বিষয়টি এখন থামানো হয় তাহলে অনেকেই মনে করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাই সরকার বোধহয় ভয় পেয়েছে, সরকার বোধহয় দুর্বল হয়ে পড়েছে। যেমনটি বলার চেষ্টা করছে বিরোধী দলগুলো। সরকার যে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে মোটেও ভিতু না এবং এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হিসাবে মনে করছে তা প্রমাণ করার জন্যই ড. ইউনূস ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। 

অবশ্য কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে তার একটি বড় কারণ হলো ড. মুহম্মদ ইউনূস। ড. মুহম্মদ ইউনূস গত কয়েক বছর ধরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক রকম কুৎসা রটনা করছেন এবং এই সমস্ত কুৎসা রটানোর জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছে। অনেকেই মনে করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থানে গেছে তার একটি বড় কারণ হলো ড. ইউনূসের ভূমিকা। আর এই কারণে ইউনূসকে যদি ছাড় দেওয়া হয় তাহলে সে আরও ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। 

আওয়ামী লীগের একজন নেতার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সাপের লেজে কখনো পারা দিতে হয় না। তাহলে সাপ ছোবল মারে। ড. ইউনূসের ব্যাপারটা হয়েছে তাই। কোনো অবস্থাতেই সরকার এখন থেকে সরে আসতে পারে না। কারণ সরকার যদি শেষ পর্যন্ত ইউনূসের ইস্যুতে নমনীয় হয় তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো সরকারকে আরও চেপে ধরবে। আর অন্যদিকে সরকার যদি এখন ইউনূসের বিষয়টিকে আমলে না নিয়ে আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দেয় সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে সরকারের সাথে সমঝোতা এবং এক ধরনের আপোষ রফা করার জন্য। এরকম নানা রকম হিসেবে নিকাশ এখন রাজনীতির টেবিলে আলোচিত হচ্ছে। তবে কোন বিবেচনা থেকে ড. ইউনূসের ব্যাপারে সরকার কঠোর হয়েছে সেটি যেমন অনিশ্চিত তেমনি ড. ইউনূস এখন কি করবেন সেটি নিয়েও নানা রকম জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। তবে ড. ইউনূসের আইনজীবী বলেছেন, ৫ অক্টোবর তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে যাবেন এবং তার বিরুদ্ধে যা কিছু অভিযোগ তা আইনগতভাবে তিনি মোকাবিলা করবেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭