ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কি সরকারের আপস হয়ে গেল?


প্রকাশ: 04/10/2023


Thumbnail

গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একটি শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ফয়সালা হয়ে গেছে। তলে তলে আপস হয়ে গেছে। দিল্লি আছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আছে, আগামী নির্বাচন হবে। তার এই বক্তব্যের পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়ে যায়। রাজনৈতিক দলের অনেকেই তার বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য শুরু করে। কেউ কেউ বলছেন, ওবায়দুল কাদেরের এই ধরনের বক্তব্য বিব্রত কর। অনেকেই এর আগের বক্তব্যের সূত্র ধরে ওবায়দুল কাদের কেন এই ধরনের কথা বলছেন তা নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে ফিরে বিমানবন্দরে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, দুই সেলফিতেই ফয়সালা হয়ে গেছে। গতকালকের বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের একই রকম বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছেন। কিন্তু আজ সকালে ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য যে স্রেফ কথার কথা নয়, তার বক্তব্যের যে কিছু সারবর্ত রয়েছে সেটি স্পষ্ট হয়। 

আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে প্রথমবারের মতো স্বীকার করা হয় যে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এই সময় তিনি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ হয় তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি এবং বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব এবং ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত তারা জানেন যে, জ্যাক সুলিভান ক্ষমতাবান ব্যক্তি। শুধু জ্যাক সুলিভান ব্যক্তি হিসাবে নয় বরং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ এবং তিনি বহির্বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ভূমিকা এবং করণীয় নির্ধারণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন দেশের সাথে কি ধরনের সম্পর্কে জড়াবে সেই বিষয়টিও নির্ধারণ করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা। 

প্রশ্ন উঠেছে, ২৭ সেপ্টেম্বরের এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও সরকার বৈঠকটির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য রাখেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছোটখাটো বিষয় নিয়ে হইচই ফেলে দেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথার ফুলঝুটি ঘটান। এই ক্ষেত্রে আশ্চর্য নীরবতা অবলম্বন করা হয়েছিল। এমনকি ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতা হয়ে গেছে এ ধরনের বক্তব্য কেউ আমলে নেননি। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরপরই গতকাল হোয়াইট হাউসে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ বিষয়ে সমন্বয়কারী জন কিরবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের বৈঠকের কথাটি নিশ্চিত করেন। এর মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, ওবায়দুল কাদের সস্তা কথার কথা বলেননি। তার কাছে কিছু তথ্য আছে জন্যই এ ধরনের মন্তব্য তিনি করেছেন এবং এই বক্তব্যের পিছনে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত রয়েছে। হয়তো তিনি যেভাবে বলেছেন সে বলার ভঙ্গিমা সঠিক ছিল না কিংবা এই ধরনের কূটনৈতিক গোপনীয় বিষয়টি প্রকাশ্যে আনাটা তার সঠিক হয়েছে কিনা প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যপূর্ণ সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নিশ্চিত ভাবেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সেই আলোচনার প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব এবং ভূমিকা রাখবে বলে অনেকেই মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭