ইনসাইড বাংলাদেশ

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ: বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি?


প্রকাশ: 08/10/2023


Thumbnail

গত শনিবার থেকে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে রক্তক্ষয়ীর সংঘাত শুরু হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাঁজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলের মুহুর্মুহু রকেট হামলা চালানো হয়। নির্বিচারে পাল্টা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলও। এটি বড় যুদ্ধের একটি পূর্বাভাস বলে অনেকে মনে করছেন। ইতিমধ্যে ইসরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে এবং ফিলিস্তিনি এলাকায় তারা আক্রমণও শুরু করেছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের এই যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতে নাটকীয় মেরুকরণ করতে পারে। আর এই যুদ্ধের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি বাংলাদেশ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে চলে যেতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। এটি আগামী নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেরকম হস্তক্ষেপ এবং বাড়াবাড়ি তা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সব চেয়ে বড় আন্তর্জাতিক ইস্যু। তাই এই যুদ্ধ ইসরায়েলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব রাজনীতিতে নানা কৌশলের পরিবর্তন করতে পারে। ঘটতে পারে অনেক কিছুই। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই আধিপত্য অনেকটাই খর্ব হয়ে গেছে। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়ন, সৌদি আরবের সাথে ইরানের সম্পর্ক ইত্যাদি ঘটনাগুলি মধ্যপ্রাচ্যের দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এর মধ্যেই হামাসের আক্রমণ এক ধরনের নতুন মাথাব্যথা তৈরি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ব্যাপারে নতুন করে মনোযোগী হতে পারে। আর এই মনোযোগের ফলে বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে পারে। 

বাংলাদেশ এটি উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র। আর বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ইস্যুতে যে ধরনের চাপ দিচ্ছিল তাতে করে এদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতি একটি বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে অনেক দেশই শঙ্কা প্রকাশ করেছিল। বিশেষ করে জামায়াত এবং দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের সহানুভূতি এই উপমহাদেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন কথাও বলা হচ্ছিল। আর এই কারণেই ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। 

অনেকেই মনে করছেন যে এই যুদ্ধের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব কূটনীতিতে একাধিক পদক্ষেপ নিতে পারে। প্রথমত, ফিলিস্তিনকে বিশেষত হামাসকে শায়েস্তা করার জন্য দারপন্থী ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে।এরকম উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে বাংলাদেশের সঙ্গেও তার সম্পর্ক উন্নয়ন করার কথা। দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের  হামাসের আক্রমণ ঠেকানোর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন চাইতে পারে। 

ইতিমধ্যে মার্কিন গোষ্ঠী ভুক্ত দেশগুলো হামাসের আক্রমণের সমালোচনা করেছে এবং কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এই ঘটনার ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিঃসন্দেহে চাইবে যে মধ্য প্রাচ্য ইস্যুতে বাংলাদেশ  যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে থাকুক। এইরকম অনেকগুলো কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে কঠোর অবস্থানের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র নমনীয় অবস্থায় আসতে পারে। তবে দেখার বিষয় যে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের এই যুদ্ধ কতদূর পর্যন্ত গড়ায় এবং  এই যুদ্ধে বিশ্ব জনমত কার পক্ষে যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭