ইনসাইড পলিটিক্স

ছোট ছোট দলগুলোকে নির্বাচনে আনার চেষ্টায় আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 08/10/2023


Thumbnail

আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ না করে তারপরও যেন নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় এবং উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেই জন্য মনোযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা ছোট ছোট বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এবং তারা যেন নির্বাচনে আসে তার পটভূমি তৈরি করছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন যে তারা এই কাজটি করছেন। তবে ওই সমস্ত নেতারা এটাও বলেছেন, যে সমস্ত সাক্ষাৎ গুলো হচ্ছে সেগুলো সবই সৌজন্য সাক্ষাৎ। তাদেরকে আমরা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে—এমন আশ্বাস দিচ্ছি এবং তারা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেই বার্তাটিও তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে। এটি কোনোভাবে প্রলোভন বা টোপ নয় বলেও আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন। 

জাতীয় পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেন আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেই চেষ্টা আওয়ামী লীগ এখন প্রকাশ্যে করছে। ইতিমধ্যে তৃণমূল বিএনপি আত্মপ্রকাশ করেছে। তৃণমূল বিএনপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং এ নিয়ে তারা প্রস্তুতিও শুরু করেছে। তৃণমূল বিএনপির পেছনে সরকারের সমর্থন এবং সহযোগিতা আছে বলে কেউ কেউ মনে করছে। 

শুধু তৃণমূল বিএনপি না, আরও কিছু ব্যক্তিদের নিয়ে বিক্ষুব্ধ বিএনপির বিভিন্ন অংশকে নিয়ে রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত করা হচ্ছে এবং তারাও আগামী নির্বাচনের অংশগ্রহণ করবে। এছাড়াও বিকল্প ধারা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো যেগুলো মহাজোটে আছে তাদের সাথেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা কথাবার্তা বলছেন এবং তারা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সে ব্যাপারে তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। 

সরাসরি সরকারের সঙ্গে নেই—এমন ধর্ম ভিত্তিক ইসলামী দলগুলোকেও নির্বাচনে আনার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো যেন আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিশেষ করে হেফাজতে ইসলাম, খেলাফতে আন্দোলন সহ অন্যান্য দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে চায় এবং এমন একটি নির্বাচন করতে চায় যেখানে ভোটার উপস্থিতি ৫০ শতাংশের বেশি হবে। সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে। আর এই কারণেই আওয়ামী লীগ যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে জোটবদ্ধ নির্বাচন না করে একক নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। জোটের শরিকদেরকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে নির্বাচন করতে হবে বলেও প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই ছোট দলগুলোর সারাদেশে অবস্থান যে তেমন সঙ্গত না এটা আওয়ামী লীগ জানে। এই জন্যই আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হলো বিএনপিতে যারা নির্বাচন করতে চান তাদেরকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা যেন তারা একটা প্ল্যাটফর্ম পায় যে প্ল্যাটফর্ম থেকে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। এই প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৃণমূল বিএনপিকে তৈরী করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও কিছু রাজনৈতিক দল এখন আস্তে আস্তে সরব হচ্ছে যারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিএনপি সহ ৩৪টি রাজনৈতিক দল বলছে যে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন, এই ৩৪ টি দলের মধ্যে অনেকগুলো দলের সঙ্গেই আওয়ামী লীগের নেতারা কথা বলেছেন এবং এরা প্রকাশ্যে যাই বলুক না কেন শেষ পর্যন্ত এরা নির্বাচনে যাবে। এদের মধ্যে এলডিডিপির কর্নেল অলি আহমেদ, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব অন্যতম বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তারা নির্বাচনে যাবে কি যাবে না সেটি নির্ভর করছে নির্বাচনের গতিবিধি কোন দিকে যায় এবং কতগুলো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তারা যদি দেখে যে নির্বাচনের একটা আমেজ তৈরি হয়েছে সেক্ষেত্রে তারা নির্বাচনে যাবে। অন্যদিকে যদি দেখে যে নির্বাচন বর্জনের পাল্লা ভারী সেক্ষেত্রে তারা নির্বাচনে যাবে না। আর এ কারণেই নির্বাচন তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনমুখী স্রোত গুলোকে এক বিন্দুতে মেলাতে চায় আওয়ামী লীগ। সেই লক্ষ্যেই এখন দলটি কাজ করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭