ইনসাইড থট

১০ অক্টোবর: অন্ধকার যুগের দ্বিতীয় প্রত্যাবর্তন


প্রকাশ: 10/10/2023


Thumbnail

আমাদের বাঙ্গালীদের স্মরণ শক্তি খুবই কম। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্মরণ শক্তি যেন আরও কম। ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর দীর্ঘ সময় নয়। অথচ আজকে যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করা হয় এই দিনটি কোন তাৎপর্য আছে কিনা অথবা এই দিনটি কোন কিছু ঘটেছে কিনা যেটা মনে রাখার মতো তাহলে মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে অনেকেই সেটা বলতে পারবে না।

২০০১ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে অন্ধকার যুগের আবার দ্বিতীয় বার প্রত্যাবর্তন হয়। প্রথম অন্ধকার যুগের প্রত্যাবর্তন হয় সর্ব যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করে। তারপরে এই হত্যার পরে ২১ বছর পরে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম ও দর্শন ভিত্তিক রাজনীতি এবং এদেশে শিক্ষাভিত্তিক রাজনীতির গোড়া পত্তন করেন এই নেত্রী শেখ হাসিনা। তার ফলে তিনি ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগকে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আনেন এবং ক্ষমতায় আনার পরে তিনি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তিনি গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত করেন। 

শেখ হাসিনার দর্শন ভিত্তিক রাজনীতির কারণেই ২০০১ সালে তিনি খুব নির্ভেজাল অবস্থায় জনগণের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাইরের থেকে কি ষড়যন্ত্র সেটা না তার দলের ভিতরে অনেকেও তার পক্ষে কাজ করে নাই। যার ফলে ২০০১ সালে ১০ অক্টোবর বিএনপি ক্ষমতায় আসীন হয় এবং আসীন হয়েই তারা এদেশে কালো অধ্যায়ের সূচনা করে। 

সেদিন এদেশের জনগণ দেখেছে, কিভাবে এদেশের সংখ্যালঘুদের ওপরে নির্যাতন করা হয়েছে। অবশ্য সংখ্যালঘু বললে ভুল করা হবে। সংখ্যালঘু এবং যারাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী তাদেরকেও নির্যাতন করা হয়েছে। ঠিক ১৯৭১ ইয়াহিয়া বাহিনীর মতো তারা নির্যাতন এবং হত্যা কান্ড করেছে। এই যে হত্যার রাজনীতি, নারী নির্যাতন এটা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এদেশে প্রথম শুরু করে ইয়াহিয়া খান। তখন না হয় আমরা পরাধীন ছিলাম কিন্তু বাঙালিরা এইটা প্রচলন করে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। সেই সময় সেই অত্যাচারে কত লোক যে মারা গেছে তার কোন হিসাব নাই। কত লোক যে সারা জীবনের জন্যে পঙ্গু হয়ে গেছে তার কোন হিসাব নাই। এই কালো অধ্যায় যারা একবার সৃষ্টি করে তারা কিন্তু তাদের জীবদ্দশায় ওই কালো অধ্যায় থেকে আর বের হতে পারে না। সুতরাং আমাদের এই ১০ অক্টোবর ভালোভাবে মনে রাখতে হবে যে বিএনপি হচ্ছে এদেশে কালো অধ্যায়ের স্রষ্টা। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং নির্যাতন করাই তাদের একমাত্র দর্শন। আর তার বিপরীতে দার্শনিক শেখ হাসিনার দর্শন হচ্ছে দেশকে গড়ে তোলা, দেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নেওয়া এবং নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্যবিত্ত দেশে এবং পরিশেষে উন্নত দেশে পরিণত করা। 

শুধু ২০০১ সালেই নয়, ২০১৪ সালেও বিএনপি দেশকে আবার অন্ধকারে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করেছিল। ২০০১ সালের ঘটনাগুলো তারা আবার পুনরায় ঘটিয়েছে। ২০১৪ সালে তারা অনেক মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। বাসে মানুষ পুড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগে্র মধ্যে এখন আবার তারা তাদের দোসরদের ঢুকিয়ে দিয়েছে। কারণ তাদের মূল দর্শনই হলো অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নেয়া। সুতরাং আওয়ামী লীগকে এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলো খুব সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি এখন বলছে যে দেশ নাকি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে দেশ এখন কঠিন সময়ে পড়েছে। কিন্তু এই কঠিন সময়ে কঠিন নেতৃত্ব লাগে সেটি আছে। সেটা আছে দার্শনিক শেখ হাসিনার মধ্যে। সুতরাং এই কঠিন সময় চলে যাবে কোনো অসুবিধা হবে না। 

যারা অন্ধকারের যাত্রী, যারা অন্ধকারকেই বিশ্বাস করে, যারা বিশ্বাস করে যে অন্ধকার রাত্রি কখনো সকাল হবে, কখনো আলো ফুটবে না, এরাই হচ্ছে বিএনপি এবং তার সহযোগীরা। কিন্তু এদেশের সাধারণ অধিকাংশ জনগণ বিশ্বাস করে যে রাত্রি এতো বড় হতে পারে না যে রাত্রি নাকি সকাল হবে না। আমরা অবশ্যই নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোর পথে থাকবে এবং আমরা সামনের পথে এগিয়ে যাব। আর এজন্য এই ১০ অক্টোবরে আমাদেরকে আবার নতুন করে, নতুন ভাবে শপথ নিতে হবে যে, আমরা দেশকে অন্ধকার যুগে আর যেতে দেবে না। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে দার্শনিক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার, জনগণকে আমাদের সজাগ রাখতে হবে এবং দেশকে রক্ষা করতে হবে সেই ষড়যন্ত্রের হাত থেকে যারা দেশকে পিছিয়ে নিতে চায়, যারা আবার সেই অন্ধকার যুগের প্রত্যাবর্তন করতে চান।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭