ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হবে এই মাসে


প্রকাশ: 11/10/2023


Thumbnail

পাঁচ দিনের সফরে এসেছিলেন ঢাকায় মার্কিন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। তারা গত শনিবার ঢাকায় আসেন। কর্মব্যস্ত সময় কাটান। আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও। প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল ঢাকা সফরের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবেন। এই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিনিধিদের সমন্বয় এই প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশ সফর করেছিল।

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল। ওই পর্যবেক্ষক দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করছে যে, আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নাও হতে পারে। এই কারণেই বাজেট স্বল্পতার অজুহাতে তারা নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন মার্কিন পার্ক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তার ওপর নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই আগ্রহী। বিশেষ করে এক বছর আগে থেকে তারা এই নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে। এখন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে এই প্রাক পর্যবেক্ষক দলের প্রতিবেদনের পর বাংলাদেশের ব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে পরিস্থিতি এবং পর্যালোচনা করেছেন, সরেজমিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং অংশীদারের সাথে বৈঠক করেছেন তাতে কোনো সুখবর পাওয়া যায়নি। বরং প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের বিভক্তি এবং দূরত্ব আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করেছে। এই সংশয়ের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো শুধুমাত্র নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে থাকবে না। বরং বাংলাদেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় সেই জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলেই জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার পর যে প্রতিবেদন দেবেন তার ওপর একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আরও কিছু ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিছু স্যাংশন দিতে পারে বলেও কোন কোন মহল থেকে বলা হচ্ছে। এছাড়াও তারা সরকারকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আরেকবার আহ্বানও জানাতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চাওয়ার বিষয় হলো যে নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় রাজনৈতিক দলই যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি তাদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু সেরকম পরিস্থিতি পরিবেশ এখন পর্যন্ত নেই। অন্তত প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল এরকম একটি মনোভাব নিয়েই বাংলাদেশ ছাড়ছেন। আর তাই শেষ পর্যন্ত যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি করবে? এ বিষয়টিকে কি এড়িয়ে যাবে? উপেক্ষা করবে? নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরকম একটি নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য চাপ দেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আসলে কি হবে তা বোঝা যাবে চলতি মাসে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭