ইনসাইড বাংলাদেশ

সংবিধানের আওতায় নিরপেক্ষ সরকারের পথ খুঁজছে সুশীলরা


প্রকাশ: 11/10/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত রাজনীতিতে নানা টানাপোড়েন। বিএনপি বলছে যে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অসাংবিধানিক। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যা কিছু করার সংবিধানের মধ্যেই করতে হবে। বর্তমান সংসদের মেয়াদও শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে এমন গুঞ্জন আছে। এ অবস্থায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ বর্তমান সংবিধান কাঠামোর মধ্যে কিভাবে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা যায় তার পথ খুঁজছেন।

একাধিক বিএনপিপন্থী আইনজীবী এবং সুশীলরা এই নিয়ে কাজ করছেন। যদি ২০১১ এর আগের আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাবস্থায় নির্বাচন করতে হয় তাহলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু সরকার সংবিধান পরিবর্তন করবেন না কোনো অবস্থাতেই। এটা তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এরকম বাস্তবতায় সংবিধানের আওতায় কি নিরপেক্ষ সরকারের কোনো ব্যবস্থা করা যায়? এ নিয়ে কাজ করছেন সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক, বদিউল আলম মজুমদার সহ বেশ কয়েকজন এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন এবং তারা বেশ কিছু ফর্মুলাও আবিষ্কার করেছেন বলে জানা গেছে। এই সমস্ত ফর্মুলা নিয়ে কূটনৈতিক পাড়াতেও আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে সফরে এসে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দূরত্ব সম্পর্ক অনুধাবন করেছেন এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে করা যায় তার পথ সম্পর্কেও তথ্যানুসন্ধান করেছেন। আর এরকম বিবেচনায় সুশীল সমাজ মনে করে যে রাজনৈতিক দলগুলো যদি আলাপ-আলোচনা করে একটি সমঝোতায় আসে তাহলে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে একাধিক প্রস্তাবনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। তিন রকমের বিকল্প নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি রয়েছে-

প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে যাবেন। একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। যে মন্ত্রিসভার সদস্যরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন না। 

দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তবে তিনি কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন না। তিনি পদবিহীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রী একটি ১০ সদস্যের নিরপেক্ষ উপদেষ্টা মন্ডলী গঠন করবেন। এই নিরপেক্ষ উপদেষ্টা মন্ডলীরাই নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করবে এবং তারা যেভাবে পরামর্শ দিবে সেভাবে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। উপদেষ্টাদের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না।

তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তবে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালিত হবে। প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মিলে নির্বাচনকালীন সরকারের সমস্ত কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনা করবেন এবং তার জন্য একটি ১০ সদস্যের নিরপেক্ষ উপদেষ্টা মন্ডলী গঠন করা হবে। যারা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শ দেবেন এবং এই সময় তারাই সরকার পরিচালনা করবেন।

তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নিরপেক্ষ সরকারের কোনো বিধান যেহেতু সংবিধানে নেই অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেই একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। অর্থাৎ বিদায়ী সরকার-ই নির্বাচনকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিবে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের দায়িত্ব সীমিত হবে। আর তারা শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭